আপনি কি কখনও অনুভব করেছেন যে আপনি শারীরিকভাবে কোথাও উপস্থিত আছেন, কিন্তু মানসিকভাবে আপনি অন্য কোথাও আছেন? আসলে এটি একটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তির মন থাকে না এবং সে পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি একাগ্রতার অভাব, অনুপ্রেরণার অভাব এবং জীবনের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুতি হয়। একজন ব্যক্তির এই মানসিক অবস্থা তার কাজ করার ক্ষমতা, ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং কর্মজীবনকেও প্রভাবিত করে। পরবর্তীতে এ ধরনের ব্যক্তি উদ্বেগ ও বিষন্নতার শিকার হন।
জেনে নিন এর লক্ষণ ১. অনেকে তাদের কর্মক্ষেত্রে এই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হয়। এমতাবস্থায় তার মন কাজে পুরোপুরি থাকে না এবং সে একঘেয়ে বোধ করতে থাকে। ২. এই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা সম্পর্ককেও প্রভাবিত করে। যদি আপনার কাছের কেউ আপনার সঙ্গে কথা বলে এবং তার দিকে মনোযোগ না দিয়ে আপনি অন্য কোনো চিন্তায় হারিয়ে যান, তাহলে এটি অন্য ব্যক্তিকে অনুভব করে যে সে যা বলছে তাতে আপনি আগ্রহী নন। এ কারণে সম্পর্কের মধ্যে ফাটল শুরু হয়। 3. এই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা একজন ব্যক্তির দৈনন্দিন কাজকর্মকেও প্রভাবিত করে। উদাহরণস্বরূপ, ধরুন আপনি রান্না করছেন বা পরিষ্কার করছেন এবং আপনার মন অন্য কোথাও, তাহলে আপনি সেই কাজটি সঠিকভাবে করতে পারবেন না।
প্রতিরোধ পদ্ধতি ১. এই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এড়াতে মননশীলতা কার্যক্রম খুবই সহায়ক। যেমন শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম এবং ধ্যান। এতে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় এবং মন অস্থির হয় না। ২. আপনি যদি আপনার লক্ষ্য স্থির করেন তবে আপনার একটি পরিষ্কার দৃষ্টি থাকবে, যার কারণে আপনার মন এখানে-ওখানে ঘুরবে না। ৩. যখন কেউ আপনার সঙ্গে কথা বলে, মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং আপনার আগ্রহ দেখান। এটি দিয়ে আপনি আপনার মনকে বিচরণ করা থেকে বিরত রাখতে পারেন। ৪. এই মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত রোগ এড়াতে, নিজের যত্ন নিন। যেমন ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাওয়া এবং আপনার শখের জন্য সময় বের করা। ৫. নতুন কিছু শেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন, কারণ এতে করে মানুষের মন এদিক-সেদিক ঘোরাফেরা করে না এবং সে মানসিকভাবেও সুস্থ থাকে। ৬. আপনার জীবনে যা কিছু আছে তার জন্য কৃতজ্ঞ হোন, কারণ অনেক সময় একজন ব্যক্তি তার জীবনের ত্রুটি-বিচ্যুতির দিকে মনোনিবেশ করার কারণে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার শিকার হন। ৭. আপনার ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনের মধ্যে একটি সীমানা নির্ধারণ করুন। এ ছাড়া যে কাজগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেসব কাজে মনোযোগ দিন। ৮. আপনার মনকে বিভ্রান্ত হওয়া থেকে দূরে রাখতে, আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার সীমিত করুন এবং আপনি যখন বাড়িতে আসবেন তখন আপনার ফোনে বিজ্ঞপ্তি বন্ধ করুন, যাতে আপনি আপনার পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন।