মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বর্তমান সময়ে অনেক সচেতনতা বেড়েছে মানুষের মনে। বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যার মধ্যে একটি খুব সাধারণ সমস্যা দেখা যায়, তা হল ওসিডি। না জেনে চলতি ভাষায় তাদের শুচিবাই বলে আখ্যা দেন অনেকে। কেউ বারবার হাতই ধুতে থাকেন, তো কেউ আবার পরিচ্ছন্ন জায়গা, বাসন বার বার পরিষ্কার করতে থাকেন। আবার অনেকে গোছানো ঘর বা জিনিস বার বার গোছাতে থাকেন।
সারাক্ষণ মন অস্থির থাকে, একই কাজ বার বার করে যায় তারা। এগুলি কেবল বাতিকেই সীমাবদ্ধ থাকে না, এর থেকেও চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায় অনেকের ক্ষেত্রে। মনের সেই অবস্থাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় ওসিডি বা অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার।
কীভাবে বুঝবেন ওসিডি-র সমস্যা রয়েছে?
কিছু মানুষের ওসিডির সমস্যা রয়েছে। এটি একটি মানসিক ব্যাধি। যখন একজন ব্যক্তি নিয়ন্ত্রণে থাকে না এবং তিনি না চাইলেও বারবার একই কাজ করতে থাকেন। ওসিডিতে শুধু এক ধরনের চিন্তা মাথায় ঘুরতে থাকে। এর সবচেয়ে বড় সমস্যা হল সেই ব্যক্তি জানে না তার মনে আসা চিন্তাগুলো সঠিক কি না।
অনেক ধরনের ওসিডি আছে যেমন বারবার জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখা, ধর্মীয় কাজ করা, যে কোনও শারীরিক কাজ করা, জামাকাপড়ের বোতাম বারবার দেখা, ঘরের দরজা, গ্যাস এবং লাইট চেক করা ইত্যাদি। এর মধ্যে একটি হল অতিরিক্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওসিডি। এই ওসিডিতে, সেই ব্যক্তি সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা ভাবতে থাকে এবং এই নিয়েই ব্যস্ত থাকে। অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তিটির বারবার স্নান করা, হাত ধোয়া এবং দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস থাকে।
ওসিডিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা তাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি খুব সংবেদনশীল এবং তাদের মাথায় চলে যে, কোনও কিছু স্পর্শ করা মানেই তাদের হাত নোংরা হয়েছে। সেজন্য এই মানুষগুলো বারবার হাত ধুতে থাকে। কিছু লোক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি এতটাই আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে যে তারা টাকা- পয়সাও চিন্তা না করেই ধুয়ে ফেলে।
অতিরিক্ত পরিচ্ছন্নতার এই ওসিডি বারবার হাত ধোয়ার মাধ্যমে শুরু হয়। ধীরে ধীরে, একজন ব্যক্তি নিজেকে অতিরিক্ত পরিচ্ছন্ন রাখার প্রতি আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে এবং তারপরে দিনে একাধিকবার স্নান করা শুরু করে। শুরুতে মানুষ একে পরিচ্ছন্নতার শখ ভেবে উপেক্ষা করলেও ধীরে ধীরে রোগে পরিণত হয়।
ওসিডি প্রতিরোধের উপায়
* আপনি বা আপনার আশেপাশের কেউ ওসিডিতে আক্রান্ত হলে, তা শনাক্ত করুন।
* ভয় নিয়ন্ত্রণ করতে যোগব্যায়াম এবং ধ্যান করুন। এটি মনকে শান্ত করবে এবং ওসিডি বাড়তে দেবে না।
* ওসিডির মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা কমাতে চাইলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞর সঙ্গে যোগাযোগ করুন। একজন ভাল মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। কারণ এর চিকিৎসা না হলে ভবিষ্যতে এটি আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।