বর্ষার দিনে রাস্তায় বের হলে বৃষ্টিতে টুকটাক ভিজে যাওয়াটা খুবই সাধারণ ব্যাপার। অনেকেই ভাবেন, ভিজে বাড়ি ফিরে মাথা মুছে নিলেই যথেষ্ট। কিন্তু চিকিৎসক এবং আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি ফিরেই স্নান করা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত জরুরি।
বৃষ্টির জল বিপজ্জনক?
আধুনিক বিজ্ঞান বলছে, শহরের বাতাসে ভেসে থাকা ধুলো, ধোঁয়া, রাসায়নিক বর্জ্য বৃষ্টির জলের সঙ্গে মিশে গিয়ে এক ধরনের অ্যাসিডিক রাসায়নে পরিণত হয়। এই অ্যাসিড রেন বা অম্লবৃষ্টি আমাদের ত্বক ও চুলের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়াও, বৃষ্টির জল অনেক সময় ড্রেন বা খোলা নালা থেকে এসে রাস্তায় জমে থাকে। সেই জল সংস্পর্শে এলে ত্বকে চুলকানি, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, এমনকি ভাইরাল জ্বরও হতে পারে।
বাড়ি ফিরেই স্নান করার উপকারিতা
বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি ফিরে গরম জলে স্নান করলে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক হয়। এতে ঠান্ডা লাগা, কাশি, জ্বরের আশঙ্কা অনেকটাই কমে। গরম জলে সামান্য লবণ মিশিয়ে স্নান করলে সংক্রমণের আশঙ্কাও কমে যায়। যারা হাঁটু বা গাঁটে ব্যথায় ভোগেন, তাঁদের জন্যও গরম জলে স্নান অত্যন্ত উপকারী।
আয়ুর্বেদ কী বলছে?
আয়ুর্বেদ মতে, বর্ষাকালে শরীরের 'ভাতা দোষ' বা বায়ু প্রকৃতি বেশি সক্রিয় থাকে। বৃষ্টির জল এই দোষ আরও বাড়িয়ে তোলে। ফলে হজমশক্তি দুর্বল হয়, ঠান্ডা-কাশির প্রবণতা বেড়ে যায়। তাই আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি ফিরে উষ্ণ জলে স্নান করা উচিত। এতে শরীরের দোষ ভারসাম্য বজায় থাকে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
স্নানের সময় মনে রাখুন
অবশ্যই গরম জলে স্নান করুন। খুব গরম না, সহনীয় গরম জল ব্যবহার করুন।
নুন বা অ্যান্টিসেপটিক মেশানো জল ত্বকের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সাহায্য করে।
স্নানের পর ভালোভাবে গা মুছে নিন এবং শুকনো জামাকাপড় পরুন।
চুল ভাল করে ধুয়ে নিন, যাতে কোনও দূষিত পদার্থ না থাকে।
স্নানের পর গরম কিছু খান, যেমন আদা চা, স্যুপ বা গরম জল।
অমিতাভ-মৌসুমিকে 'রিমঝিম গিরে শাওয়ান' গানে দেখে রোমান্টিক মনে হতেই পারে। ঠিক সেভাবেই মনের মানুষের সঙ্গে ভিজতেই পারেন। তবে, বাড়ি ফিরে অবিলম্বে স্নান করতে ভুলবেন না যেন! নয় তো দু'জনেরই জ্বর আসতে বাধ্য।