ইদানিং মানুষ ছোটখাটো অসুখের জন্য সরাসরি ডাক্তারের কাছে না গিয়ে, AI টুল যেমন ChatGPT-এর কাছে বুদ্ধি নিচ্ছে। অনেকে নিজের লক্ষণ AI-কে জানিয়ে ওষুধ বা চিকিৎসার উপায় জানতে চাইছেন। এবং সেটাই অন্ধভাবে অনুসরণ করছেন। এর ফলে একাধিক ক্ষেত্রে বড় ক্ষতির নজিরও সামনে এসেছে। কাজেই, বিশ্বজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে, স্বাস্থ্য পরিষেবায় AI কতটা নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য?
AI ব্যবহারের সুবিধা
অস্ট্রেলিয়ায় ২০২৪ সালের এক সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রায় ৯.৯% মানুষ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য ChatGPT থেকে সংগ্রহ করেছেন। এদের বড় অংশই স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কম জ্ঞানসম্পন্ন বা যাদের মাতৃভাষা ইংরেজি নয়। অনেকে AI থেকে সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা পেয়ে মানসিক তৃপ্তি পেয়েছেন।
২০২৩ সালের গবেষণায়ও দেখা গেছে, AI জটিল চিকিৎসা তথ্যকে সাধারণ মানুষের জন্য সহজভাবে উপস্থাপন করতে পারে। এতে ডাক্তারদের উপর চাপ কমে এবং সাধারণ মানুষ দ্রুত প্রাথমিক তথ্য পেতে সক্ষম হন।
চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকি
তবে চিকিৎসা ক্ষেত্রে AI-এর বড় সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। PLOS ONE জার্নালে প্রকাশিত ২০২৪ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ChatGPT-৩.৫ মাত্র ৪৯% ক্ষেত্রে সঠিক রোগ নির্ণয় করতে সক্ষম হয়েছে। যদিও সাধারণ তথ্যের ক্ষেত্রে এর সঠিকের হার ছিল প্রায় ৭৪%। তবে ল্যাব রিপোর্ট, এক্স-রে বা স্ক্যান বোঝার ক্ষেত্রে এটি দুর্বল প্রমাণিত হয়েছে।
দিল্লির চিকিৎসক ডাঃ গীতা প্রকাশ মনে করেন, AI রোগীর আগের ইতিহাস বা ব্যথার তীব্রতা বোঝে না। ফলে ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্যের কারণে এটি ভ্রান্ত ফলাফল দিতে পারে। ডাক্তারের তত্ত্বাবধান ছাড়া AI-এর উপর নির্ভর করা বিপজ্জনক হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মত
বিশেষজ্ঞরা একমত যে, চিকিৎসা ক্ষেত্রে AI একটি সহায়ক হাতিয়ার হতে পারে। তবে এটি শুধুমাত্র ডাক্তারদের তত্ত্বাবধানে ব্যবহার করা উচিত। ২০২৩ সালের ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন (NCBI)-এর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যসেবায় AI ব্যবহারের আগে স্পষ্ট নীতি, স্বচ্ছতা এবং ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।