Pelvic Problem Alert: হঠাৎ বারবার প্রস্রাবের চাপ তৈরি হচ্ছে? সামান্য কাশি বা হাঁচিতেই মূত্র ছেড়ে দিচ্ছেন? মূত্রত্যাগের সময় জ্বালা বা যন্ত্রণা অনুভব করছেন? এমন কোনও উপসর্গ দেখা দিলেই তা অবহেলা করা উচিত নয়। কারণ এর পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে পেলভিক অর্গান প্রোলাপস নামের এক জটিল স্বাস্থ্য সমস্যা। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলা হয় পেলভিক অর্গান প্রোলাপস, যা মূলত গর্ভাশয় বা অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অঙ্গ নিচে নেমে যাওয়ার প্রবণতা।
মহিলাদের শরীরে ইউটেরাস, ব্লাডার এবং রেকটামের মতো যে সব অঙ্গ থাকে, সেগুলিকে সঠিক জায়গায় ধরে রাখে পেলভিক ফ্লোর নামক পেশীগুচ্ছ। এই পেশীগুলিই যখন দুর্বল হয়ে পড়ে, তখনই শুরু হয় এই সমস্যা। ষাটোর্ধ্ব মহিলাদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা গেলেও, আজকাল অনেক কমবয়সী নারীর মধ্যেও এটি ধরা পড়ছে। সাধারণত বারবার সন্তান জন্ম দেওয়ার ফলে, ভ্যাকুয়াম বা ফরসেপ দিয়ে সন্তান প্রসব, দীর্ঘদিন ধরে কায়িক পরিশ্রম, বারবার কোষ্ঠকাঠিন্য বা কাশি, এমনকি কিছু জেনেটিক টিস্যু সমস্যার কারণেও পেলভিক ফ্লোর দুর্বল হয়ে পড়ে।
এই রোগের লক্ষণগুলি খুবই স্পষ্ট। প্রস্রাব করার পরও মনে হয় পুরোটা বেরোয়নি, পেটে বা পিঠে ব্যথা হয়, হাঁচি-কাশির সময় মূত্র বেরিয়ে যায়, কখনও যৌনাঙ্গ থেকে ঝুলে পড়া অংশ দেখা যায়। অনেক সময় অস্বাভাবিক রক্তপাত বা জলীয় পদার্থও নির্গত হতে পারে। হাঁটাচলার সময়ও অস্বস্তি হতে পারে।
এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিলেই অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। আলট্রাসোনোগ্রাফি বা এমআরআই-এর মাধ্যমে অঙ্গগুলির অবস্থা দেখা হয়। সঙ্গে রক্ত ও মূত্র পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া হয় রোগের প্রকৃতি নিয়ে।
গাইনি সার্জেন ডা. অরুণা তাঁতিয়া জানাচ্ছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে এই রোগ কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়ামের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তবে দেরিতে ধরা পড়লে সার্জারির প্রয়োজন হয়। অনেক সময় জরায়ু কেটে ফেলার মতো সিদ্ধান্তও নিতে হয়। এছাড়াও ব্লাডার বা রেকটামের অবস্থান ঠিক করার জন্যও অস্ত্রোপচারের দরকার হতে পারে। রোগ ও অস্ত্রোপচারের জটিলতা অনুযায়ী রোগীকে এক থেকে সাত দিন পর্যন্ত হাসপাতালে থাকতে হতে পারে।
সতর্কতা এবং সচেতনতা থাকলে এই রোগের প্রাথমিক ধাপেই সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। তাই শরীরের সিগন্যালগুলো অবহেলা না করে সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।