ইউরিক অ্যাসিড হল একটি প্রাকৃতিক বর্জ্য পণ্য যা, শরীর থেকে পিউরিনে সমৃদ্ধ খাবার হজমের পর নিঃসৃত হয়। পিউরিন হল রাসায়নিক যৌগ যা কার্বন এবং নাইট্রোজেন পরমাণু দ্বারা গঠিত এবং শরীরে ভেঙে যায়। যখন আমরা পিউরিন-সমৃদ্ধ খাবারের অতিরিক্ত গ্রহণে নিযুক্ত হই, তখন শরীর এটি হজম করতে ব্যর্থ হয়। যার ফলে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
বর্তমান সময়ে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা খুবই সাধারণ হয়ে উঠেছে। শরীরের রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে গাঁটের সমস্যা, কিডনি রোগ, হার্ট অ্যাটাকের মতো বিপজ্জনক রোগ হতে পারে। ইউরিক অ্যাসিড হল শরীরের একধরনের পিউরিন, যা প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। তবে কখনও কখনও কিডনি, শরীর থেকে ইউরিক অ্যাসিড বের করতে পারে না। বা কখনও শরীরে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড জমে।
রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে, তা ফিল্টার করা সহজ নয়। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। একজন সুস্থ ব্যক্তির রক্তের প্রতি ডেসিলিটারে ৩.৫ থেকে ৭.২ মিলিগ্রাম ইউরিক অ্যাসিড থাকা উচিত।
শরীরে ইউরিক অ্যাসিড জমা হওয়াকে খুবই বিপজ্জনক মনে করা হয়। অনেক সময় ইউরিক অ্যাসিড শরীরে ক্রিস্টালের রূপ নেয় এবং ধীরে ধীরে জয়েন্টের চারপাশে জমা হতে থাকে। যার কারণে জয়েন্টে ব্যথার সমস্যায় পড়তে হয়। যদি আপনার শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি থাকে, তাহলে খাবারের বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি। ইউরিক অ্যাসিড রোগীরা প্রতিদিন খালি পেটে একটি জিনিস পান করলে, প্রস্রাবের মাধ্যমে সমস্ত ময়লা বেরিয়ে যাবে।
শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে লাউ খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। প্রতিদিন করলার রস খেলে এই সমস্যা দ্রুত কমে যায়। ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের জন্য লাউ খুবই উপকারী একটি সবজি। ভিটামিন এবং খনিজ যেমন- ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, আয়রন, ফোলেট, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায় লাউতে। এই সবজিতে রয়েছে ভাল পরিমাণে ফাইবার এবং জল, যা শরীরে জমে থাকা ময়লা দূর করতে সাহায্য করে। লাউ শরীরকে ডিটক্সিফাই করে এবং পিউরিনকে ক্রিস্টাল তৈরি হতে বাধা দেয়।
লাউয়ের জ্যুস কীভাবে বানাবেন?
ইউরিক অ্যাসিড রোগীরাও লাউয়ের জ্যুস পান করতে পারেন। লাউয়ের জ্যুস তৈরি করতে, খোসা ছাড়িয়ে কেটে মিক্সারে পিষে নিন। এবার ছেঁকে নিয়ে, এক চিমটি নুন যোগ করুন এবং সকালে খালি পেটে এই রস পান করুন।
তবে আপনার যদি কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা বা কোনও ধরনের অ্যালার্জি থাকে, তাহলে এটি আগেই খাওয়ার পরিবর্তন একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।