গত বছরের শীতের মরশুমের কথা। আচমকা চিনে একের পর এক শিশু এক 'রহস্যময়' নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে। হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় বহু শিশুকে। এ দেশেও এই 'রহস্যময়' নিউমোনিয়া থাবা বসিয়েছিল। খোদ কলকাতাতেও কয়েক জন শিশু আক্রান্ত হয়েছিল বলে খবর ছড়িয়েছিল। পরে ওই নিউমোনিয়াই কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। যা 'চাইনিজ নিউমোনিয়া' নামেই লোকমুখে পরিচিতি পায়।
চাইনিজ নিউমোনিয়া কী? আদৌ কি এই ধরনের কোনও নিউমোনিয়ার অস্তিত্ব রয়েছে? রহস্যভেদ করতে এই প্রসঙ্গে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলল bangla.aajtak.in।
চাইনিজ নিউমোনিয়া আদতে কী?
এই প্রসঙ্গে bangla.aajtak.in-কে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ খেয়া ঘোষ উত্তম বলেন, 'চাইনিজ নিউমোনিয়া বলে কিছু নেই। এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। চিনে হয়েছিল বলে সবাই চাইনিজ নিউমোনিয়া বলছেন। পরে বোঝাই গিয়েছিল এটা একটা ভাইরাস। প্রথমে বোঝা যাচ্ছিল না। পরে জানা যায়, এটা ভাইরাল নিউমোনিয়া। নতুন কোনও জীবাণু পাওয়া গিয়েছে, এরকম না। '
এই নিউমোনিয়ার চরিত্র কেমন?
এই প্রসঙ্গে চিকিৎসক ঘোষ উত্তম বলেন, 'এটা একধরনের ভাইরাল নিউমোনিয়া।
অ্যাডিনো ইনফ্লুয়েঞ্জা আরএসভি এগুলো ব্যাকটেরিয়ার মতো হয়। খুব মারাত্মক হতে পারে।'
কী কী উপসর্গ?
চিকিৎসক ঘোষ উত্তম জানিয়েছেন, যদি কফ, খুব জ্বর, শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকে এবং রোগী যদি জোরে জোরে শ্বাস নেয়, তা হলে বুঝতে হবে ভাইরাল নিউমোনিয়া হয়েছে। তাঁর মতে, কিছু ক্ষেত্রে এই নিউমোনিয়ার প্রভাবে শারীরিক অবস্থা মারাত্মক হতে পারে। রোগীদের ভেন্টিলেটর, অক্সিজেনের প্রয়োজন হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাচ্চারাই আক্রান্ত হয়।
এই প্রসঙ্গে আরও এক চিকিৎসক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাস bangla.aajtak.in-কে বলেন, '
যদি দেখা যায় স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন, তা হলে বুঝতে হবে, নতুন কিছু এসেছে। চাইনিজ নিউমোনিয়া কী, এখনও পর্যন্ত কোনও পরিষ্কার নয়। কেউ বলছেন কোভিডের একটা রকম, কেউ বলছেন, একধরনের ব্যাকটেরিয়া। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাচ্চারাই আ্রক্রান্ত হয়েছে। তবে নিউমোনিয়া শুধুমাত্র বাচ্চাদের ক্ষেত্রে হয় না, বড়রাও আক্রান্ত হন।' চিকিৎসক বিশ্বাসের মতে, এই নিউমোনিয়ার লক্ষণ হল, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো সর্দি-কাশি-জ্বর-গলাব্যথা। গলার মধ্যে লালচে ভাব হতে পারে।
কীভাবে রেহাই মিলবে এই নিউমোনিয়ার হাত থেকে?
চিকিৎসকদের মতে, শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। বেশি করে জল খাওয়াতে হবে। উপসর্গ দেখা দিলে বাচ্চাকে আলাদা রাখতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বাচ্চার হাত ভাল করে বার বার ধোয়াতে হবে। তবেই এই নিউমোনিয়া রোখা সম্ভব।