Ulcer: গ্যাসট্রিক আলসার এড়াতে কত ঘণ্টা পরপর খাওয়া উচিত? প্রত্যেকের যা জানা প্রয়োজন

গ্যাসট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসারের সমস্যা সত্যিই গুরুতর। আলসারের ফলে পাকস্থলীর অভ্যন্তরীণ স্তরে ক্ষত তৈরি হয়। খুবই যন্ত্রণাদায়ক। অবহেলা করলে গুরুতর সমস্যাও হতে পারে। তবে এর কারণগুলি জানা থাকলে এবং লাইফস্টাইলে কিছু পরিবর্তন আনলেই এটি রোধ করা সম্ভব।

Advertisement
গ্যাসট্রিক আলসার এড়াতে কত ঘণ্টা পরপর খাওয়া উচিত? প্রত্যেকের যা জানা প্রয়োজনgastric ulcer causes: গ্যাসট্রিক আলসারের কারণ ও প্রতিকার জানুন।
হাইলাইটস
  • আলসারের ফলে পাকস্থলীর অভ্যন্তরীণ স্তরে ক্ষত তৈরি হয়।
  • অবহেলা করলে গুরুতর সমস্যাও হতে পারে।
  • লাইফস্টাইলে কিছু পরিবর্তন আনলেই এটি রোধ করা সম্ভব।

How to Prevent Ulcer: গ্যাসট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসারের সমস্যা সত্যিই গুরুতর। আলসারের ফলে পাকস্থলীর অভ্যন্তরীণ স্তরে ক্ষত তৈরি হয়। খুবই যন্ত্রণাদায়ক। অবহেলা করলে গুরুতর সমস্যাও হতে পারে। তবে এর কারণগুলি জানা থাকলে এবং লাইফস্টাইলে কিছু পরিবর্তন আনলেই এটি রোধ করা সম্ভব।

গ্যাসট্রিক আলসার কেন হয়?

গ্যাসট্রিক আলসারের পিছনে প্রধানত কয়েকটি কারণ কাজ করে:

  1. হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি (Helicobacter pylori) ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ: এই ব্যাকটেরিয়াটি পাকস্থলীর মিউকাস স্তর নষ্ট করে দেয়, যার ফলে অ্যাসিড পাকস্থলীর দেয়ালে ক্ষত সৃষ্টি করে।

  2. প্রশমক বা ব্যথানাশক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার: নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রাগস (NSAIDs) যেমন অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন ইত্যাদির দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার পাকস্থলীর সুরক্ষা স্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

  3. অতিরিক্ত অম্লতা বা অ্যাসিড উৎপাদন: অতিরিক্ত মশলাদার খাবার, চা-কফি, বা অ্যালকোহলের অতিরিক্ত সেবন পাকস্থলীতে অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।

  4. ধূমপান ও মদ্যপান: ধূমপান হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি ব্যাকটেরিয়ার কার্যক্ষমতা বাড়ায়, আর অ্যালকোহল পাকস্থলীর প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল করে।

  5. মানসিক চাপ: দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ সরাসরি আলসারের কারণ না হলেও এটি পাকস্থলীতে অ্যাসিড উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে, যা আলসারের ঝুঁকি বাড়ায়।

  6. খাদ্যাভ্যাস ও অনিয়ম: দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকা বা একেবারে ভারী খাবার খাওয়ার অভ্যাস পাকস্থলীর অম্লতা বাড়ায়।

গ্যাসট্রিক আলসারের লক্ষণ

গ্যাসট্রিক আলসার হলে কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখা যায়:

  • পেটের মাঝখানে জ্বালাপোড়া বা ব্যথা।

  • খালি পেটে ব্যথা বেড়ে যাওয়া।

  • অম্বল, বুক জ্বালাপোড়া।

  • বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

  • ক্ষুধামান্দ্য বা খাবারের প্রতি অনীহা।

  • কালচে মল ত্যাগ।

কীভাবে গ্যাসট্রিক আলসার এড়াবেন?

গ্যাসট্রিক আলসার প্রতিরোধে কিছু কার্যকর উপায় অনুসরণ করা যেতে পারে:

  1. সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন:

    • বেশি মশলাদার, তেলেভাজা খাবার এবং অ্যাসিডিক পানীয় এড়িয়ে চলুন।

    • খাবারে ফাইবার যুক্ত উপাদান, যেমন শাকসবজি, ফলমূল ও গোটা শস্য অন্তর্ভুক্ত করুন।

  2. নিয়মিত সময়ে খাবার খান:

    • দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকবেন না।

    • এক-একবারে অল্প খান। কিন্তু সারাদিনে প্রতি খাওয়ার মাঝে ৪-৫ ঘণ্টার বেশি গ্যাপ দেবেন না। যেমন ধরুন দুপুর ২টোয় লাঞ্চ করলেন। এরপর বিকেল ৪টেয় একটি ফল খান। আবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় একটু মুড়ি বা অঙ্কুরিত ছোলা খেলেন। এভাবে সারাদিন অল্প অল্প করে বার-বার খেতে থাকুন।

  3. ধূমপান ও মদ্যপান বন্ধ করুন:

    • এগুলি আলসারের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

  4. প্রশমক ওষুধ সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করুন:

    • ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করবেন না।

  5. স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট করুন:

    • যোগব্যায়াম, মেডিটেশন বা নিয়মিত হাঁটার মাধ্যমে মানসিক চাপ কমান।

  6. পর্যাপ্ত জল পান করুন:

    • শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে দিনে ৮-১০ গ্লাস জল পান করুন।

  7. চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:

    • হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি সংক্রমণের ক্ষেত্রে সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স প্রয়োজন।

চিকিৎসা না করালে কী সমস্যা হতে পারে?

গ্যাসট্রিক আলসার অবহেলা করলে জটিল সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে, যেমন:

  • পাকস্থলীর রক্তপাত।

  • পাকস্থলীর দেয়ালে ছিদ্র (Perforation)।

  • পাকস্থলীর ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি।

গ্যাসট্রিক আলসার একটি গুরুতর সমস্যা হলেও এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। শরীরে কোনও অস্বস্তি বা লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। স্বাস্থ্যকর অভ্যাসই আপনাকে দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।

POST A COMMENT
Advertisement