দীর্ঘায়ুর চাবিকাঠি কি দই? শুনে অবাক লাগছে? সম্প্রতি এক আমেরিকান-স্প্যানিশ মহিলা মারিয়া ব্রানেস মোরেরার ডায়েট দেখে সেই প্রশ্নই করছেন অনেকে। মারিয়া 117 বছর 168 দিন বেঁচেছিলেন। 2024 সালের অগাস্টে তাঁর মৃত্যু হয়। তারপর থেকেই গবেষকরা খুঁজছেন তাঁর এতদিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকার রহস্যটা ঠিক কী। সম্প্রতি Cell Reports Medicine জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মারিয়ার দীর্ঘ জীবনের অন্যতম সঙ্গী ছিল দই। রোজ দিনে তিনবার দই খাওয়ার অভ্যাস ছিল তাঁর। হয়তো তাঁর সুস্থ ও দীর্ঘ জীবনের পিছনে এটাই ছিল কারণ।
দই কীভাবে শরীরকে সুস্থ রাখে?
গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ডঃ জোসেফ সালহাব জানান, দই এমন একটি খাবার যা অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে বাড়াতে সাহায্য করে। এর ফলে হজম ক্ষমতা উন্নত হয়, ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয় এবং দীর্ঘ মেয়াদে রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে। নিয়মিত দই খেলে কোলন ক্যানসার ও কোলন পলিপসের সম্ভাবনাও কমে যায় বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
দইয়ের আরও অনেক বেনেফিট আছে। এটি, হাড় ও দাঁতের জন্য উপকারী: দইয়ে থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করে হাড় ও দাঁতকে শক্তিশালী রাখে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: দইয়ের উচ্চ প্রোটিন কনটেন্ট দীর্ঘক্ষণ পেট ভর্তি রাখে। ফলে ক্ষুধা কম লাগে এবং ক্যালোরি গ্রহণও কম হয়।
হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করে: দইয়ে থাকা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, মারিয়া মোরেরার নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খেতেন। অনেক বেশি বয়স পর্যন্তও রোজ হালকা শরীরচর্চা করতেন। ধূমপান ও মদ্যপান থেকে দশ হাত দূরে থেকেছেন আজীবন। তবে বিজ্ঞানীদের মতে, প্রতিদিন তিনবারের দই খাওয়ার মতো অভ্যাসও তাঁর হজমশক্তি ভাল রাখার কারণ হতে পারে। ফলে দীর্ঘদিন পেট ভাল রাখতে চাইলে অবশ্যই দই খান। তবে যে কোনও দই নয়। বাড়িতে পাতা টক দই খান।