যারা দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে থেকে বিরক্ত হচ্ছেন তারা অক্টোবর মাসে কোথাও বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করতে পারেন। অক্টোবর মাস ছুটিতে পূর্ণ। ১৪ অক্টোবর রাম নবমী এবং ১৫ তারিখে দশেরা। ১৬ অক্টোবর শনিবার এবং ১৭ রবিবার। এ ছাড়া ১৯ অক্টোবর ঈদ -ই-মিলাদের ছুটি থাকবে। এদিকে, যদি আপনি ১৬ এবং ১৮ অক্টোবর অফিস থেকে ছুটি নিতে পারেন, তাহলে ৬ দিনের ভ্রমণের পরিকল্পনা করা যেতে পারে। এই অক্টোবরের ছুটিতে কোন জায়গায় আপনি যেতে পারেন তার একটা প্ল্যান দেওয়া থাকল।
কলকাতা - যদি আপনি দেশের অন্য কোনও প্রান্তে থাকেন তাহলে পরিবার বা বন্ধুদের সাথে কলকাতা আসতে পারেন। অক্টোবর মাসে এখানে দুর্গাপূজা আড়ম্বরপূর্ণভাবে পালিত হয়। এখানে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে দুর্গাপূজার উৎসব পালিত হয়। এর বাইরে, আপনি নিক্কো পার্ক, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, কালীঘাটের কালী মন্দির এবং বেলুড় মঠের মতো জায়গাও দেখতে পারেন।
হাম্পি - কর্ণাটকের হাম্পি শহরের নামও ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটে লিপিবদ্ধ আছে। এই শহর তার প্রাচীন মন্দির, স্মৃতিস্তম্ভ এবং ঐতিহাসিক সব কাঠামোর জন্য সারা বিশ্বে বিখ্যাত। হাম্পি ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য আদর্শ জায়গা। এখানে আপনি বিরুপাক্ষ মন্দির, বিজয় বিটতলা মন্দির, হনুমান মন্দির, নদীর ধারের ধ্বংসাবশেষ,কিংস বাথ এবং লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দিরের মতো স্থান পরিদর্শন করতে পারেন।
আগ্রা - তাজমহল, যা বিশ্বের সাতটি বিস্ময়ের মধ্যে গণ্য, এই শহরে অবস্থিত। যমুনা নদীর তীরে নির্মিত তাজমহলের নাম পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি মানুষের ভ্রমণ তালিকায় রয়েছে। আগ্রা ভ্রমণের সেরা সময় অক্টোবর। এখানে তাজমহল ছাড়াও আপনি আগ্রা ফোর্ট, জামা মসজিদ, মেহতাব বাগ, আকবরের সমাধি (সিকান্দারা), ফতেহপুর সিক্রি দেখতে পারেন।
হৃষিকেশ - প্রাকৃতিক দৃশ্য হোক বা অ্যাডভেঞ্চার হোক, হৃষিকেশ বরাবরই ভ্রমণ পিপাসুদের প্রিয় গন্তব্য। এখানে আপনি রাফটিং, ক্যাম্পিং, বাঞ্জি জাম্পিং, জিপ লাইনিং এবং ট্রেকিং উপভোগ করতে পারেন। নীলকন্ঠ মহাদেব মন্দির, রাম ঝুলা, লক্ষ্মণ ঝুলা, জানকী পুল, নীরগড় জলপ্রপাত, হৃষিকুন্ড, স্বর্গ আশ্রম, বিটলস আশ্রম এবং ত্রিবেণী ঘাট এখানকার প্রধান আকর্ষণের কেন্দ্র।
পঞ্চমারী - মধ্যপ্রদেশের পঞ্চমারী দেশের অন্যতম সুন্দর হিল স্টেশন। একে সাতপুরার রানীও বলা হয়। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, পাণ্ডবরা বনবাসের সময় পঞ্চমারীতে অবস্থান করেছিলেন। এটি ১৮৫৭ সালে ব্রিটিশ অফিসার জেমস ফরসাইথ আবিষ্কার করেছিলেন। সেই থেকে পঞ্চমারী একটি বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়। এখানে আপনি পাণ্ডব গুহা, জটা শঙ্কর গুহা, রজত পর্বতের জলপ্রপাত, ধুপগড় এবং ছোট মহাদেও পাহাড় দেখতে যেতে পারেন।
দার্জিলিং - দার্জিলিং সারা বছর পর্যটকদের দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে। পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত এই স্থানটিকে ভারতের সর্বোচ্চ হিল স্টেশন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অক্টোবর মাসে ভ্রমণের আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা আপনাকে এখান থেকে ফিরতে দেবে না। এখানে এসে আপনি পদ্মজা নাইডু পার্ক, জুলজিক্যাল পার্ক, রক গার্ডেন, পিস প্যাগোডা, টাইগার হিল, ঝুম মঠ, সেন্ট অ্যান্ড্রু চার্চ এবং সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যান দেখতে পাবেন।
পুরী - ওড়িশার পুরীতে অবস্থিত জগন্নাথ মন্দির হিন্দুধর্মের অনুসারীদের অন্যতম পবিত্র ধর্মীয় স্থান। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে আসেন। অক্টোবর মাসে এখানকার আবহাওয়া খুবই মনোরম। জগন্নাথ মন্দির ছাড়াও, আপনি গুন্ডিচা মন্দির, লোকনাথ মন্দির, মার্কণ্ডেশ্বর মন্দির এবং নরেন্দ্র ট্যাঙ্কের মতো জায়গাও দেখতে পারেন।
মহীশূর - মহীশূর দক্ষিণ ভারতের অন্যতম বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র। যদিও এখানে অনেক দর্শনীয় স্থান আছে, কিন্তু মহীশূর প্রাসাদ তাদের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয়। মহীশূরে আসা প্রতিটি পর্যটক অবশ্যই একবার এই স্থানটি পরিদর্শন করেন। অক্টোবর মাসে শহরটি জীবন্ত হয়ে ওঠে দশেরা উৎসবের সঙ্গে। এখানে বেড়ানোর জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গা হল চামরাজেন্দ্র জুলজিক্যাল গার্ডেন, চামুন্ডি পাহাড়, করঞ্জি লেক, স্ট্রী চামুন্ডেশ্বর মন্দির, ললিতা মহল এবং জগমোহনত প্রাসাদ।
আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ - ভ্রমণপ্রিয় মানুষের পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে আন্দামানের নাম। এর পরিষ্কার বালিতে ডাকা সৈকত, অ্যাড্রেনালিন পাম্পিং ওয়াটার স্পোর্টস এবং সমুদ্রের প্রাণীদের মাঝে স্কুবা ডাইভিংয়ের আনন্দ সারা জীবন মনে রাখার মত। এখানে নীল দ্বীপ, রাধানগর বিচ, হ্যাভলক দ্বীপ, রস দ্বীপ, লক্ষ্মণপুর সৈকত, সেলুলার জেল, পোর্ট ব্লেয়ার, চিদিয়া তপু এবং বারাটাং দ্বীপ পর্যটকদের সবচেয়ে প্রিয় স্থান।
লাহুল -স্পিতি - এই স্থানটি হিমাচল প্রদেশের হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত। যারা ট্রেকিং করতে পছন্দ করেন তাদের জন্য এটি অন্যতম সেরা জায়গা। অ্যাডভেঞ্চারের পাশাপাশি যারা বৌদ্ধ বিহার ঘুরে দেখেন তাদের জন্য এই জায়গাটি স্বর্গ থেকে কম নয়। আপনি এখানে যেতে পারেন টাবো মঠ, স্পিতি নদী, চন্দ্রতল লেক, রোহতাং পাস এবং কুঞ্জুম পাসের মতো জায়গাগুলি দেখতে।