২০২০ সালে মদ্যপানের জন্য ক্যানসারের প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ নতুন ঘটনা সামনে এসেছে। মেডিক্যাল জার্নাল দ্য ল্যানসেট অনকোলজি (The Lancet Oncology) জার্নালে নতুন রিসার্চে এই তথ্য উঠে এসেছে।
এই সংখ্যা মোট ক্যানসার আক্রান্তের ৪.১ শতাংশ। বিশ্বে ফের একবার মদ-কে ক্যানসারের কারণ হিসাবে সচেতনতা বাড়ানোর নতুন প্রচেষ্টা শুরু করার কথা হচ্ছে।
জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা বলছে, যাঁরা নিয়মিত রোজ মদ্যপান করেন, তাঁদের লিভার, চেস্ট, কোলন এবং মুখগহ্বরের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এটা আগেই প্রমাণিত যে, এই সব জায়গায় ক্যানসারের সঙ্গে মধ্যপানের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এর কারণ ক্রমাগত মধ্যপানে শরীরে অ্যাসিটাইলডিহাইডের মাত্রা বাড়তে থাকে। এই কার্সিনোজেনিক মেটাবোলাইট শরীরের কোষ এবং ডি এন এ ধ্বংস করতে থাকে।
নিয়মিত মদ্যপান করার ফলে এস্ট্রোজেন এবং এন্ড্রোজেনের মতো হরমোনের স্তরে তারতম্য ঘটে। গবেষণা আরও বলছে, মদ্যপান এবং ধূমপানের মিলিত প্রভাব আরও মারাত্মক আকার নেয়। ফলে যাঁরা মধ্যপানের সঙ্গে সঙ্গে ধূমপানও করেন তাঁদের ক্যানসারের সম্ভাবনা কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
গত ১০ বছর ধরে এটা নিয়ে গবেষণা চলছে মদ্যপানের সঙ্গে ক্যানসারের সম্পর্ক কতটা। তার জন্য ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সমস্ত ডেটা সংগ্রহ করা হয়েছে।
মদ্যপান, তার সেবন এবং ক্যানসার রোগীর সংখ্যার বিশ্লেষণ করছিলেন বৈজ্ঞানিকরা। তার ফলেই এটা জানা সম্ভব হয়েছে গত বছর মধ্যপানের ফলে ক্যানসারের ঘটনায় ৪ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি হয়েছে।
গবেষণা করে দেখা গিয়েছে, যাঁরা মধ্যপানের ফলে ক্যানসার আক্রান্ত হয়েছে তাঁদের মধ্যে ৪৭ শতাংশের বেশি মানুষ দিনে ৬ পেগ বা তার বেশি পরিমাণ মদ্যপান করেছেন।
সেখানে ২ থেকে ৬ পেগের মধ্যে যাঁরা মদ্যপান করেছেন তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৩৯ শতাংশ। তবে ২ পেগ বা তার চেয়ে কম পরিমাণ মদ্যপান করার ফলে ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ শতাংশের আশপাশে।
গবেষণারত একজন বৈজ্ঞানিক হ্যারিয়েট রমগে এ প্রসঙ্গে এটি বয়ানও জারি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, অবিলম্বে সারা বিশ্বের সমস্ত দেশে মদ্যপানের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।
তিনি আরও জানান, মানুষকে এটা জানানো ভীষণ প্রয়োজনীয় যে ক্যানসারের সঙ্গে মদ্যপানের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এর উৎপাদন, বিক্রি এবং সেবনের বিরুদ্ধে কড়া আইন চান তাঁরা।