পাঁঠা-খাসির দামের চেয়েও কম দামে উটপাখি খাওয়ানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু কেন ? এক পাখিতে প্রায় ১৫০-২০০ কেজি মাংস পাওয়া যাবে। তবে সে সুযোগ নেওয়া হবে না কেন ? প্রশ্ন সে দেশের সংশ্লিষ্ট দফতরের।
দেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হাঁস, মুরগি, কোয়েল, কবুতরসহ বহু পাখি প্রতিপালন হচ্ছে। কিন্তু উটপাখিও যে এভাবে পালন করা যেতে পারে, সে বিষয়টি একটু দেরিতে বিচার-বিবেচনায় আনা হয়ছে।
অথচ পৃথিবীর বহু দেশে উটপাখির খামার রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে উটপাখির মাংস, চামড়া ও পালকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
জনগণের আমিষের চাহিদা পূরণ করার জন্য পালন করা হবে উটপাখি।
বাংলাদেশে আফ্রিকা থেকে আনা ৭ টি উটপাখি নিয়ে গিয়ে তাদের উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানো হচ্ছে। এখন বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের খামারে তাদের নিয়ে খেলা চলছে।
এর মধ্যে দুটি পুরুষ এবং পাঁচটি স্ত্রী। মূলত বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষের জন্য এ গবেষণাধর্মী প্রকল্পটি শুরু হয়েছে। সম্প্রতি সেখানে আরও ১৫টি উটপাখির বাচ্চা আনা হয়েছে। মূলত কীভাবে পালন করলে সর্বাধিক বড় এবং মাংস বেশি পাওয়া যাবে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পাখির মধ্যে উটপাখি আকারে বৃহত্তম এবং এদের ডিমও সবচেয়ে বড় হয়ে থাকে। এর ডিমেও অমলেট খাওয়া যায়। তবে জল মিশিয়ে খেতে অমলেট বানাতে হয়, এত ঘন।
পালন করতে শুরু করলে সাধারণত ৪ বছর বয়স হলে পাখিগুলি মাংস কাটার উপযোগী হয়ে যায়। আগে আফ্রিকা ও এশিয়াতে উটপাখি পাওয়া যেত বলে জানা গিয়েছে, তবে এখন আর পাওয়া যায় না।
এরা আফ্রিকার উন্মুক্ত অঞ্চলের তৃণভূমিতে এবং দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকার মরুভূমি এলাকায় বিচরণ শুরু করে। তবে যেহেতু একসময় এশিয়ায় পাওয়া যেত, সেই ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে এখানে কৃত্রিম প্রজনন ঘটিয়ে চাষের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।
উটপাখির মাংস মুরগির মাংসের মতো খেতে। তবে মুরগির পিছনে প্রচুর খাবার দিয়ে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। কিন্তু উটপাখির খাবারের ৬০ শতাংশই ঘাসজাতীয় লতাপাতা। ফলে খরচ কম।
উটপাখির ওজন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ কেজি পর্যন্ত হয়। ফলে একটা উটপাখি দেড়শো মুরগির সমান, মাঝারি সাইজের তিনটি দেশি গরুর সমান কিংবা ১০-১৫ টা পাঠা কিংবা খাসির সমান মাংস দিতে পারে।
একটা পূর্ণবয়স্ক উটপাখি থেকে ২০-২৫টি বাচ্চা পাওয়া যেতে পারে। ফলে চার বছরের সময়ে যদি ধৈর্য ধরে ব্যবসা করা যায়, তাহলে প্রচুর লাভ। প্রতি কেজি মাংসের দামও প্রায় ৩০০ টাকা।