করোনা মহামারীর শুরুর দিকে বিশেষজ্ঞদের ধারণা ছিল কোভিডের ফলে সাধারণ মানুষের রোম্যান্টিক জীবনেও কুপ্রভাব ফেলবে। কিন্তু একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষা অন্য চিত্রই তুলে ধরছে। সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, মহামারীর ফলে ঘরবন্দি মানুষ একে অপরের কাছে এসেছেন। তাঁদের মানসিরক দূরত্ব কমেছে।
আমেরিকার Monmouth University গত ফেব্রুয়ারি মাসে এই সমীক্ষা করে। যাতে প্রায় ৭০ শতাংশ কাপল স্বীকার করেছেন তাঁরা সম্পর্কে থেকে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট। গত বছরের সমীক্ষার তুলনায় সংখ্যাটি ১১ শতাংশ বেশি।
সমীক্ষা নিয়ে পার্টনারশিপ সাইকোলজিস্ট ডা. গ্যারি লেবানডক্তি বলেন, 'আমরা সম্পর্ক নিয়ে কঠিন দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করি, যাতে রিলেশনশিপে সম্ভাব্য সমস্যা বুঝতে সুবিধা হয়।'
নিউ জার্সির ২৫ বছরের যুবক ড্যানিয়েল কলিন্স জানাচ্ছেন, প্রায় এক বছর তিনি গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে কোয়ারেন্টাইনে থেকেছেন। পরে গার্লফ্রেন্ড পরিবারের কাছে চলে যান। ড্যানিয়েল জানান, এই এক বছরে তাঁরা ভীষণ কাছাকাছি চলে এসেছেন।
তিনি বলেন, কোয়ারেন্টাইনে এক সঙ্গে থাকা ছাড়া দ্বিতীয় বিকল্প থাকে না। এতে আপনার মনে কোনও বাজে চিন্তা আসে না। যেমন, আপনার সঙ্গী আপনাকে পছন্দ করেন কিনা, বা আপনার সঙ্গে থাকতে চান কিনা। কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালীন অনুভব করেছি, একে অপরের সঙ্গে কথা বলে সত্যিই খুশি হওয়া যায়।
ত্রিননিদাদের ২৭ বছরের লতিফা বলেন, গত ৭ বছর ধরে বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে থাকছি। করোনার আগে ট্রাভেলিং এবং পার্টি নিয়ে আমরা দুজনেই ব্যস্ত থাকতাম। কিন্তু করোনা আমাদের এক সঙ্গে বসে ফেভারিট টিভি শো দেখার সুযোগ করে দিয়েছে।
লতিফা আরও জানান, এক সঙ্গে সব সময় থাকার ফলে অনেক বেশি কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন। এক অপরকে বোঝার জন্য যা খুব বেশি জরুরি ছিল। একই সঙ্গে তাঁদের রোম্যান্টিক লাইফ এবং সেক্স লাইফ আগের চেয়ে অনেক বেশি এক্সাইটেড হয়ে গিয়েছে।
মিনেসোটা-র ৪৫ বছরের গ্লেন ফ্লোরেস বলেন, আমি স্ত্রীর সঙ্গে প্রতি দিন হাঁটতে যেতাম। শারীরিক কসরতের সঙ্গে কথাও হত খুব। জীবনের অনেক কঠিন বিষয়ে সহজে কথা বলার অবকাশ দিয়েছে মহামারীর অবসর।
গ্লেন বলেন, 'আমি মদ্যপান ছেড়ে দিয়েছি। স্ত্রীকে এখন অনেক বেশি সময় দিতে পারি। সব চেয়ে বড় কথা ওর কথাও শুনতে আগ্রহী হয়ে উঠেছি। বিয়ের পর সময়ের অভাবে আমাদের সম্পর্ক খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। ম্যারেজ কাউন্সিলরের কাছেও যেতে হয়েছিল। তবে এখন সম্পর্ক অনেক ভালো জায়গায় রয়েছে।'