Dengue Symptoms: একদিকে দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তারমধ্যে চোখ রাঙ্গাচ্ছে ডেঙ্গুও। ভারতে ডেঙ্গুর ঘটনা গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর দ্রুত বাড়ছে। ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বর ছড়ায়। বৃদ্ধ থেকে শুরু করে শিশুরাও সহজেই ডেঙ্গু জ্বরের কবলে পড়ে। এর লক্ষণগুলি মৃদু থেকে গুরুতর যা কখনও কখনও মারাত্মক হয়ে ওঠে। আসুন জেনে নিই ডেঙ্গু জ্বর কখন মারাত্মক আকার ধারণ করে।
মারাত্মক ডেঙ্গু (Severe dengue)- ডেঙ্গু সংক্রমণ চারটি ভিন্ন ভিন্ন ভাইরাস দ্বারা ছড়ায় যা সেরোটাইপস নামে পরিচিত। এই চারটিই বিভিন্ন উপায়ে অ্যান্টিবডিকে প্রভাবিত করে। স্ট্রেনের উপর নির্ভর করে, ডেঙ্গু মারাত্মক রূপ নিতে পারে যেমন ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার (DHF) এবং ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম (DSS)। এগুলোকে মারাত্মক ডেঙ্গুও বলা হয়। তবে ডেঙ্গুর এই রূপ খুব কম মানুষের মধ্যেই দেখা যায়। যে কেউ মারাত্মক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারে, তবে শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। WHO মতে, প্রাথমিক লক্ষণগুলি সনাক্ত করা এবং সঠিকভাবে চিকিৎ করা মৃত্যুর হার এক শতাংশেরও নীচে নামিয়ে দেয়।
মারাত্মক ডেঙ্গুর লক্ষণ (Symptoms of severe dengue)- ডেঙ্গুর শুরু হয় প্রচণ্ড জ্বর, মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, জয়েন্ট ও পেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা, ক্লান্তি, বমি বমি ভাব, বমি, ত্বকে ফুসকুড়ি এবং খিদে কমে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দিয়ে। বেশ কিছু দিন পর, সাধারণত ৩-৭ দিন পরে, রোগীর ডেঙ্গুর গুরুতর লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যেমন প্রচণ্ড পেটে ব্যথা, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, ক্রমাগত বমি, বমিতে রক্ত, প্রস্রাবে রক্ত, শরীরে তরল পদার্থ জমে যাওয়া, মাড়ি ও নাক দিয়ে রক্ত পড়া, লিভারের সমস্যা, প্লেটলেট সংখ্যা দ্রুত কমে যাওয়া এবং অলসতা, অস্থির বোধ করা। এমন পরিস্থিতিতে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা দরকার।
মারাত্মক ডেঙ্গু হলে যা হয়- রোগীর মারাত্মক ডেঙ্গু হলে তার ত্বকে এবং শরীরের অন্যান্য অংশে রক্তক্ষরণের দাগ দেখা দিতে শুরু করে এবং রক্তের প্লাজমা বের হতে থাকে। মারাত্মক ডেঙ্গু জ্বর ফুসফুস, লিভার ও হার্টের ক্ষতি করে। রোগী অজ্ঞান হয়ে যায়। কখনও কখনও রক্তচাপ হঠাৎ করে বিপজ্জনক মাত্রায় নেমে যায়, যা রোগীর জন্য শক সৃষ্টি করে এবং কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। যাদের ইতিমধ্যে একটি রোগ আছে তাদের মারাত্মক ডেঙ্গু হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
মারাত্মক ডেঙ্গুর চিকিৎসা (Treatment for severe dengue) - গুরুতর ডেঙ্গুর কোনো সঠিক চিকিৎসা নেই। এই ধরনের ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির আইসিইউতে চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। এখানে উপসর্গের উপর নির্ভর করে রোগীকে রক্ত বা প্লেটলেট ট্রান্সফিউশন, ইন্ট্রাভেনাস ফ্লুইড এবং অক্সিজেন থেরাপি দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে। চিকিৎসায় বিলম্ব হলে রোগীর অনেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই ডেঙ্গুর যে কোনো উপসর্গকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
মৃদু উপসর্গ সহ ডেঙ্গুর চিকিৎসা (Dengue treatment)- ডেঙ্গু গুরুতর না হলেও কিছু বিষয়ের যত্ন নেওয়া জরুরি। অনেক বিশ্রাম নিতে হবে। নিয়মিত রক্তে প্লেটলেট পরীক্ষা করুন। শরীরে জলের ঘাটতি যেন না হয় এবং প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার গ্রহণ করুন। এ সময় নারকেলেরজল পান করা ভালো। এটি প্লেটলেট বাড়াতেও কাজ করে। এছাড়াও খাদ্যতালিকায় পেঁপে, কিউই, ডালিম, বিটরুট এবং সবুজ শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করুন। ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ রাখুন এবং তাকে আপনার প্লেটলেট সম্পর্কে জানান। আপনার কোনো ধরনের সমস্যা বা প্লেটলেট কমে গেলে চিকিৎসক আপনাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শও দিতে পারেন।