কম মাল থেকে বেশি মুনাফা অর্জনের জন্য অনেক দোকানদারই বিভিন্ন ধরনের জিনিস মশলায় মিশিয়ে দেন। মশলাগুলিতে পাওয়া রাসায়নিক এবং ক্ষতিকারক পদার্থগুলি কেবল খাবারের স্বাদই নষ্ট করে না, আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও খুব ক্ষতিকারক। হলুদ থেকে শুরু করে, লঙ্কা গুঁড়ো এবং কালো মরিচে পর্যন্ত ভেজাল থাকে বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রেই।
আপনি কি জানেন আপনার রান্নাঘরে উপস্থিত হলুদ, লঙ্কা গুঁড়ো নির্ভেজাল ত নয়। পরিমাণ বাড়াতে এবং গুণমান নষ্ট করতে বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করা হচ্ছে। ভেজাল এড়াতে ক্রেতাদেরও সতর্ক হতে হবে।
আপনি যদি বাজার থেকে মশলা কেনেন, তাহলে অবশ্যই সেগুলি ব্যবহারের আগে দেখে নিন। মশলা পরীক্ষা করার অনেক উপায় আছে। লঙ্কা গুঁড়োর সঙ্গে বহু দোকানদার ইটের গুঁড়ো, আর হলুদের সঙ্গে হলুদ রং মেশায়। যে মশলা কিনছেন, তা আসল না নকল সনাক্ত করতে পারেন কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে।
লঙ্কা গুঁড়োর সঙ্গে ইটের গুঁড়া, ট্যাল্ক পাউডার, সাবান বা বালি যোগ করলে এর পরিমাণ বাড়লেও গুণমান কমে যায়। আপনার রান্নাঘরে রাখা লঙ্কা গুঁড়ো আসল না নকল তা পরীক্ষা করতে প্রথমে আধ গ্লাস জল নিন। এতে এক চা চামচ লঙ্কা গুঁড়ো দিন। চামচ দিয়ে নাড়াচাড়া না করে, লঙ্কা গুঁড়ো গ্লাসের নীচে থিতিয়ে পড়তে দিন। এরপর ভেজানো লঙ্কা গুঁড়ো হাতের তালুতে হালকাভাবে ঘষে নিন। এভাবেই আপনি বুঝতে পারবেন এটা ভেজাল না খাঁটি।
লঙ্কা গুঁড়োর মধ্যেও স্টার্চের পরিমাণ পাওয়া যায়। আপনার লঙ্কা গুঁড়ো ভেজাল কিনা তা পরীক্ষা করতে ১ কাপ জলে সামান্য লঙ্কা গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। এরপর হাতে রেখে চেষ্টা করুন। চিটচিট করলে বুঝবেন এতে সাবানের গুঁড়ো মেশানো রয়েছে। অনেক সময় ইট গুঁড়ো মেশানো হয় লঙ্কা গুঁড়োর সঙ্গে। একটি পাত্রে জল নিয়ে সামান্য লাল লঙ্কা গুঁড়ো মেশান তাতে, ইট মিশে গেলে পাত্রে ঢালা জলের নীচে বসবে।
আপনি যেমন লঙ্কা গুঁড়ো ভেজাল না খাঁটি পরীক্ষা করতে পারেন, সেরকম হলুদের ক্ষেত্রেও পরীক্ষা করা যায়। এজন্যে কাচের গ্লাসে অর্ধেক জল দিয়ে ভরে নিন। এরপর এতে এক চামচ হলুদ মেশান। হলুদ যদি পুরোপুরি পাদদেশে স্থির হয়ে যায় এবং জলের রঙ ফ্যাকাশে হলুদ হয়ে যায় তবে এতি নির্ভেজাল।
এক গ্লাস জলে হলুদ দেওয়ার পর যদি হলুদ পুরোপুরি না জমে এবং জলের রং খুব বেশি হলুদ হয়ে যায়, তবে বুঝবেন এটিতে কোনও রং বা রাসায়নিক মেশানো আছে এবং এটি ভেজাল।
আপনার তালুতে এক চিমটি হলুদ গুঁড়ো রাখুন এবং আপনার বুড়ো আঙুল দিয়ে ঘষুন। আপনাকে ১০ থেকে ২০ সেকেন্ডের জন্য এটি করতে হবে। যদি হলুদ খাঁটি হয়, তবে এটি আপনার হাতে হলুদ দাগ রয়ে যাবে। এটি ভেজাল হলে, হলুদ রং খুব হালকা বা অস্তিত্বহীন হতে পারে। হলুদের বিশুদ্ধতা পরীক্ষা করার জন্য এটি জল দিয়েও পরীক্ষা করা যেতে পারে।