আমরা সবাই চাই যে আমাদের জীবন সুস্থ এবং লম্বা হোক। বিজ্ঞানীরা এর উপরের গবেষণা করে চলেছেন। যে কীভাবে জীবন-যাপন করলে বা কী খেলে আমরা দীর্ঘ জীবন লাভ করতে পারব? বিজ্ঞানীদের বক্তব্য যে লম্বা সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকার রহস্য। আমাদের সামাজিক সম্পর্ক, ঘুমের অভ্যাস খুশি থাকার স্তর পরিবেশ এবং উদ্দেশ্য-ভাবনার উপরে নির্ভর করে। কিন্তু লম্বা সময় পর্যন্ত জীবিত থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটা উঠে এসেছে তা হল খাদ্যাভ্যাস।
আমেরিকার ন্যাশনাল জিওগ্রাফি ফেলো পুরস্কার বিজেতা সাংবাদিক এবং ডকুমেন্টারি মেকার দেন বিউটনার খাবার এবং লম্বা আয়ু নিয়ে গবেষণা করেছেন। বিউটনার সবার আগে পৃথিবীতে ব্লু চিহ্নিত জোনকে গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করেছেন। ব্লু জোন পৃথিবীর ওই পাঁচটি জায়গা, যেখানে লোকেরা লম্বা সময় পর্যন্ত সুস্থ জীবন যাপন করেন। এখানে লোকেরা ১০০ বছরের বেশি গড়ে বেঁচে থাকেন এবং খুব একটা রোগে ও আক্রান্ত হন না।
তিনি দশটি এবং খাবারের নাম বলেছেন যেগুলি ব্লু জনের লোকেরা নিয়মিত খাওয়া দাওয়া করেন। এই ফুড খুব একটা কঠিন বা দুর্লভ নয়। এগুলি আমরা খুব সহজেই নিজেদের খাবারে সামিল করতে পারি এবং মজার ব্যাপার হলো প্রায় সমস্ত লোকেরাই নিজেদের খাওয়া দাওয়ায় চা কফি এবং ওয়াইন শামিল করেন।
গোটা শস্য খান
আমাদের পূর্বপুরুষরা গোটা সবজি খুব বেশি খেতেন। যেগুলি প্রচেষ্ট থাকত না এ কারণে একাধিক রোগ জীবাণু দূরে থাকতো ব্লু জনের জন্য এমন ভোজন প্রয়োজন। আপনার কাঁচা, হালকা বা পাকা বা পিষে এই খাবার খেতে পারেন। ব্লু জনের লোকেরা নিজেদের খাওয়া দাওয়ার জন্য আধ ডজন এর বেশি জিনিস সামিল করেন। তারা চাল বা গমের খাবার কম খান।
ব্রাউন ব্রেড
আমরা যে ব্রেড খাই তার বেশিরভাগ সুগার থাকে। তাই আমাদের ক্যালোরি বিহীন ব্রেড খাওয়া উচিত। ব্লু জোনের লোকেরা ব্রাউন ব্রেড এবং তাজা শাকসবজি দিয়ে তৈরি স্যান্ডউইচ বা ওই জাতীয় খাবার খান। সমস্ত এলাকায় টক ব্রেড পাওয়া যায়।
নাটস
একদিনে দু-মুঠো নাট খান। ব্লু জোনের লোকেরা রোজ প্রায় দু মুঠো বিভিন্ন প্রজাতির বাদাম খান। আখরোট, পেস্তা, কাজু, মেওয়া রোজ খেতে হবে। একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে যে আখরোট যারা খান, যারা আখরোট খান না তাদের তুলনায় মৃত্যুর হার ২০ শতাংশ কম হয়।
খাবারের চিনির মাত্রা কম করুন
ব্লু জোনের লোকেরা কোন সেলিব্রেশানের সময় মিষ্টি খান। আপনি যদি লম্বা জীবন চান তাহলে চিনির মাত্রা কমিয়ে দিন। চায়ে, রান্নায় বিভিন্ন রকম মিষ্টান্ন রোজ খাওয়া বন্ধ করুন। সপ্তাহে ৭০০ থেকে ৮০০ ক্যালোরি চিনি খেতে পারেন। দিনে ১০০ ক্যালরির বেশি নয়। একেবারে না খেতে পারলে আরও ভাল। ১০০ ক্যালরি অর্থাৎ একদিনের সাত চামচ চিনি আপনার জন্য সর্বাধিক।
ডিম সপ্তাহে মাত্র তিনটে
ব্লু জোনের বাসিন্দারা সাধারণভাবে এক সপ্তাহে তিনটের ডিমের বেশি খান না। এখানে লোকেরা মাংসের সঙ্গে ডিমকে সাইডিংরূপে খান যখন মাংস খান। তখন তারা ডিম সঙ্গে রাখেন। বরং তারা কাঁচা শাক-সবজিতে বেশি মনোযোগ দেন। কিছু লোক নিজেদের সুপে ডিম সেদ্ধ করে খান। কিছু লোক বিনসের সঙ্গে ব্রেকফাস্টে খান।
গরুর দুধের থেকে তৈরি খাবার জরুরি নয়
আমরা প্রায়ই বলি যে, স্বাস্থ্য ভাল থাকলে ক্যালসিয়াম খাবারে রাখা দরকার। কিন্তু দু'জনের মানুষদের আহারে দুধ কতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তারা কিছু পরিমাণের ছাগলের দুধ থেকে তৈরি দই বা পনির বানান এবং তা খান তবে রোজ নয়। গবেষণাতে জানা গিয়েছে যে, আমাদের পাচনতন্ত্র গরুর দুধ হজম করার জন্য অনুকূল নয়। গরুর দুধের বদলে আমরা টোফু খেতে পারি। এতে এক কাপ দুধের মত ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।
রোজ খেতে পারেন মাছ
সাধারণভাবে প্রত্যেক ব্লু জোনওয়ালা মানুষ প্রতিদিন সামান্য মাত্রায় মাঝখান নিজেদের লম্বা জীবন-যাপনের জন্য রোজ মাছ খাওয়া অত্যন্ত ভাল।
মাংস সপ্তাহে দু'বার এর বেশি নয়
পাঁচটির মধ্যে চারটি ব্লুজোনের লোকেরা মাংস খান। কিন্তু ব্লু জোনের মাংস খাওয়ার পরিমাণ অনেক কম। তারা কোনও উৎসব বা কোনও বিশেষ অকেশানেই মাংস খান। যদি আপনি মাংস খেতে ভালোবাসেন তাহলে সপ্তাহে সর্বাধিক দুদিন এটি খেতে পারেন। টিনজাত মাংস নয়, তাজা মাংস নিয়ে এসেই খাওয়ার চেষ্টা করুন