গত ২ বছরে ডায়াবেটিসের রোগীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে করোনার কারণে দক্ষিণ ভারতের তেলেঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের ডায়াবেটিসের মামলা দ্রুততার সঙ্গে বেড়েছে। বয়স্ক লোকেরা শুধু নয় শিশু এবং কিশোরদের মধ্যে ডায়াবেটিসের আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়তে দেখা গিয়েছে।
ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়ার কারণে রোগীদের বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। ডায়াবেটিস রোগীদের খাওয়া-দাওয়ার উপর অনেক বেশি মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজন তৈরি হয়েছে।
মহারাষ্ট্রের, অন্ধ্রপ্রদেশের ডাক্তাররা একটি বিশেষ ফলকে ব্লাড সুগার কম করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করেছেন। ডাক্তারি রিপোর্ট অনুযায়ী ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কাঁঠাল অত্যন্ত কার্যকর বলে দাবি করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক পত্রিকা নেচারে বলা হয়েছে, কাঁঠাল, ডায়াবেটিসকে কন্ট্রোল করে। পুনের চেলারাম ডায়াবেটিস ইনস্টিটিউটের উন্নিকৃষ্ণন এবং শ্রীকাকুলাম সরকারি মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা সহায়ক ডাক্তার গোপাল রাও। তিনিও এই বিষয়টি গবেষণা করেছেন। এই ডাক্তারদের বক্তব্য অনুসারে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কাঁঠাল অত্যন্ত ভালো ফল নিয়ে আসে।
স্টাডিতে পাওয়া গিয়েছে যে, কাঁঠালের আটা বা পাউডার, ৭ দিনে ব্লাড গ্লুকোজ কমিয়ে দিতে পারে। চিকিৎসকরা টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন আমেরিকান ডায়াবেটিক এসোসিয়েশন দ্বারা করা ওই স্টাডির ফলাফল ডায়াবেটিস কন্ট্রোল করতে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষ করে ভারতের যেখানে খাওয়া-দাওয়ার বহু বিকল্প মজুত রয়েছে সেখানে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে তারা টাইপ টু ডায়াবেটিসের জন্য ৪০ জন রোগীর উপরে ডায়েটে ভাত এবং গমের জায়গায় কাঁঠালের আটা দিয়েছেন।
ডাক্তাররা জানিয়েছেন যে আমরা তিন মাসে ৩০ গ্রাম কাঁঠালের পাউডার রোগীদের খাইয়েছি। তিন মাসের পরে তাদের ফাস্টিং ব্লাড সুগার পোস্ট প্রণ্ডিয়াল ব্লাড গ্লুকোজ এবং এইচবিএওয়ানসি স্তরে ঘাটতি নজরে এসেছে। এছাড়া এ সমস্ত রোগীদের ওজনও কমেছে বলে দেখা দিয়েছে।
যদিও পশ্চিমী দেশগুলির তুলনায় ভারতীয়দের ডায়াবেটিসের একটা আলাদা প্যাটার্ন দেখা গিয়েছে। এখানে ডায়াবেটিসের ৩০ শতাংশের বেশি রোগীরা স্থূলত্বের সমস্য়ায় ভোগেন না। শারীরিক গঠন অনুযায়ী কাঁঠালের আটা বা পাউডার ব্লাড সুগার কম করার সঙ্গে সঙ্গে গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণেও উন্নতি করে।
কীভাবে তৈরি করবেন কাঁঠালের আটা?
কাঁঠালের আটা তৈরি করতে গেলে সবচেয়ে আগে, কাঁঠালের বীজ ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে। তার ওপরের খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে এরপরে কাঁঠালের বীজ কেটে নিতে হবে। এরপর এটাকে পিষে পাউডার বা আটায় পরিণত করতে হবে। প্রত্যেকদিন ৩০ গ্রাম কাঁঠালের আটা সাধারণ আটার সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।