পুজোয় ঘুরবেন আর বিরিয়ানি খাবেন না তা কি হয়! অনেকেরই পুজোর সময় উত্তরবঙ্গে ভ্রমণের পরিকল্পনা রয়েছে। আর উত্তরবঙ্গে আসতে হলে শিলিগুড়ি ছুঁয়ে যেতেই হবে। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের অনেকেই পুজোর সময় শিলিগুড়িতে ঘুরতে আসবেন। সেই সময় কে না জানে, কোনও হোটেল-রেস্তোরাঁয় জায়গা পাওয়া মুশকিল। তাই বিকল্প জানা না থাকলে বিপদে পড়তে হতে পারে। তাই পুজোর সময় যাঁরা শিলিগুড়িতে ঘুরবেন, তাঁদের জন্য জানিয়ে দিই শিলিগুড়ির বাছাই করা দশটি বিরিয়ানির ঠিকানা। যদিও এই কাজ খুব কঠিন। কারণ শিলিগুড়িতে অন্তত ৩০০ হোটেল রেস্তোরাঁয় বিরিয়ানি বানানো হয় এবং প্রত্যেকটিই অত্যন্ত সুস্বাদু। বিভিন্ন ধরনের বিরিয়ানি মেলে এই সমস্ত রেস্তোরাঁগুলিতে। তবু চাহিদা এবং জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে কয়েকটি বিরিয়ানি রেস্তোরাঁর খোঁজ আপনাদের জানিয়ে রাখি।
আমিনিয়া
শিলিগুড়ির পানিট্যাঙ্কি মোড়ের কাছে কলকাতার বিখ্যাত বিরিয়ানি রেস্তোরাঁ আমিনিয়ার শাখা খুলেছে অল্প কিছুদিন হল। তাতেই তাঁরা জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। যদিও তাঁদের আলাদা করে পরিচিতি অর্জন করতে হয়নি। কারণ যাঁরা কলকাতায় যান, তাঁরা আমিনিয়ায় সকলেই ঢুঁ মেরেছেন অবশ্যই। এবার উত্তরবঙ্গে বসেই সেই স্বাদ মিলছে, ফলে ভিড় জমাচ্ছেন ৮ থেকে ৮০। কলকাতার মতোই এখানকার দামও প্রায় একই রাখা হয়েছে।
আর্সালান
আর্সালান আরও একটি নামি বিরিয়ানি রেস্তোরাঁ। আর্সালানেরও একটি শাখা রয়েছে শিলিগুড়িতে। পানিট্যাংকি মোড়ের কাছেই সেবক রোড এবং বিধান রোডের সংযোগকারী রাস্তায় আর্সালানের বিরিয়ানির জন্য প্রতিদিন ভিড় জমান শিলিগুড়িবাসী। পুজোর মধ্যে চাহিদা আরও বাড়বে বলেই আশা করছেন তাঁরা।
জাইকা বিরিয়ানি হাউজ
শিলিগুড়িতে দীর্ঘ বছর ধরে অথেন্টিক বিরিয়ানি পরিবেশন করে আসছে বর্ধমান রোডের জাইকা। বহুজাতিক রেস্তোরাঁ চেনগুলি খোলার আগে পর্যন্ত এটাই ছিল শিলিগুড়ি বিরিয়ানির সেরা ডিস্টিনেশন। তার জনপ্রিয়তা আজও অটুট। দাম সাধ্যের মধ্যেই। বিরিয়ানি ছাড়াও অন্যান্য মুঘল খানার জন্য তারা বিখ্যাত।
মিন্ট
শিলিগুড়ির সেবক রোডের মিন্ট একটি ফিউশন রেস্তোরাঁ। এখানে ভারতীয়, কন্টিনেন্টাল, চাইনিজ সমস্ত কিছুই মেলে। তবে উত্তর ভারতীয় খানার সঙ্গে মুঘল খানার আলাদা সেগমেন্ট রয়েছে। অনেকে জানেন, এখানকার বিরিয়ানি শিলিগুড়ি তো বটেই উত্তরবঙ্গের অন্যতম সেরা। পুজোর মধ্যে নানা ধরনের বিরিয়ানি বানানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তাঁরা। একবার না খেলে পস্তাতে হতে পারে।
বাদশা বিরিয়ানি
শিলিগুড়ি নিজস্ব এই বিরিয়ানি হাউসটি বিগত প্রায় ২ দশক থেকে শহরে উন্নতমানের বিরিয়ানি সরবরাহ করে আসছে। বিরিয়ানির জনপ্রিয়তার শুরুর দিনগুলি থেকেই তাঁদের বিরিয়ানি শহরবাসীর অন্যতম পছন্দের. ক্ষুদিরামপল্লি এলাকায় তাঁদের মূল আউটলেট হলেও শহরের আরও কয়েকটি জায়গায় তাঁদের শাখা রয়েছে।
বারবিকিউ নেশন
বিভিন্ন রকম তন্দুর এবং কাবাবের সঙ্গে দুর্দান্ত বিরিয়ানি পরিবেশন করেন এই বহু জাতিক চেন রেস্তোরাঁটি। সেবক রোডের বারবিকিউ নেশন বেশ কিছু বছর ধরে শহরবাসীর ফুড ডেস্টিনেশন এর একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে। পুজোতেও আগাম বুকিং না করে জায়গা মেলা মুশকিল।
সালুজা অম্বর
হিলকার্ট রোডের সালুজা অম্বরের বিরিয়ানি জিভে জল এনে দেবে। দাম সাধ্যের মধ্যে থাকায় এখানে ভিড় অনেকটাই বেশি। পুজোর মধ্যে সময় হাতে করে নিয়ে আসতে হবে, তবেই মিলবে জায়গা। বিভিন্ন রকম বিরিয়ানি মেলে এখানে।
বিরিয়ানি বাই কিলো
শহরের প্রণামি মন্দির রোডের বিরিয়ানি বাই কিলো বিক্রি হয় কেজি দরে। যদিও ১ কেজি বিরিয়ানি কিনে অনায়াসে দুই থেকে তিনজন খাওয়া সম্ভব। সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন রকম মুগল ভারতীয় খানার সম্ভার।
মুঘল দরবার
হরেন মুখার্জি রোডের মুঘল দরবার খুব কম খরচে ভালো বিরিয়ানির একটা অন্যতম সেরা আউটলেট। অল্প টাকার মধ্যে থেকেই এখানকার বিরিয়ানি শুরু হচ্ছে। ফলে কম খরচে ভাল বিরিয়ানি চাইলে এখানে ঢুঁ মেরে দেখতে পারেন ঠকবেন না।
পাঞ্জাবি কড়াই
যাঁরা একটু মশালাদার, স্পাইসি বিরিয়ানি পছন্দ করেন, তাঁরা সেবক রোডের পাঞ্জাবি কড়াইতে একবার ঘুরে আসতে পারেন। স্বাদ-গন্ধে এখানকার অথেন্টিক বিরিয়ানি আপনাকে মুগ্ধ করবেই গ্যারান্টি।
জাফরান
শিলিগুড়ির খালপাড়া জাফরান বিরিয়ানি হাউজ শহরের মধ্যে অন্যতম সেরা বিরিয়ানির ভান্ডার। বিভিন্ন রকমের বিরিয়ানি এবং কম মশালাদার বিরিয়ানি যাঁরা পছন্দ করেন তাদের জন্য আদর্শ জাফরানের বিরিয়ানি। দামও খুব একটা বেশি নয়। পুজোর মধ্যে একদিন ট্রাই করে দেখতেই পারেন। যদি মিলনপল্লি স্টেশন ফিডার রোড এলাকা দিয়ে খাবারের খোঁজ করেন তাহলে এটা হতে পারে সেরা ঠিকানা।
ইয়েলো চিলি
সেবক রোডের ইয়েলো চিলি বিগত বেশ কিছু বছরে শিলিগুড়ি বিরিয়ানি ডেস্টিনেশন এর মধ্যে অন্যতম। এখানকার আরও অন্যান্য বহু রকমের ফিউশন ফুডের সঙ্গে অথেন্টিক বিরিয়ানিও ব্যাপক জনপ্রিয়। সুতরাং পূজোর কদিনে শিলিগুড়িতে ঘুরতে এলে এই রেস্তোরাগুলিতে বিরিয়ানি ট্রাই করতে পারেন। এছাড়া, আবারও বলে রাখি, শহরে আরও অন্তত কয়েকশো বিরিয়ানির ছোট-বড় রেস্তোরাঁ রয়েছে। যেগুলির কোনওটিই একেবারে ফেলে দেওয়ার মত নয়। তাই সেগুলিও চেখে দেখতেই পারেন।
সব ছবি প্রতীকী