পর্যটক তথা পরিবেশ প্রেমীদের জন্য ওড়িশা স্বর্গের চেয়ে কম নয়। বিশাল মন্দির, জাদুঘর, মঠ, সৈকত, বন, পাহাড় ছাড়াও এই রাজ্যটি সুন্দর এবং পরিষ্কার হ্রদের জন্য খুব বিখ্যাত। ওড়িশা ছয়টি রামসার সাইটের আবাসস্থল। কিছু সময় আগে, ওড়িশার টাম্পারা হ্রদ, হিরাকুদ জলাধার এবং অনশুপা লেককে রামসার সাইট হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। চিলকা হ্রদ, ভিতরকানিকা জাতীয় উদ্যান এবং হীরাকুদ বাঁধ ইতিমধ্যেই রামসার সাইটের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। ১৯৭১ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত পরিবেশগত চুক্তিতে রামসার সাইটটি অস্তিত্ব লাভ করে। ইরানের রামসার শহরের নামানুসারে এটির নামকরণ করা হয়, যেখানে সে বছর চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
সাতকোশিয়া উপত্যকা
সাতকোশিয়া উপত্যকা, টিকরাপাড়ার কাছে মহানদীর একটি সংকীর্ণ প্রসারণ, এই বছরের শুরুতে একটি রামসার সাইটের মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। এখানে আপনি এত চমৎকার এবং সুন্দর দৃশ্য দেখতে পাবেন যে, বোঝা মুশকিল হ্রদটি কোথায় শেষ হয়েছে এবং কোথায় আকাশ শুরু হয়েছে। হাঁটার সময় প্রচুর পরিযায়ী পাখি দেখতে পাওয়া যায় এখানে। এই লেকে বোটিংও জনপ্রিয় এবং নৌকা ভাড়ায় সহজেই পাওয়া যায়।
আনশুপা লেক
এই ঘোড়ার নালের আকৃতির হ্রদটিওড়িশার বৃহত্তম হ্রদের মধ্যে একটি। যেটি বাঁশ এবং আম গাছে ঢাকা। পাহাড়ের গায়ে রঙিন ফুল, এই লেকের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দেয়। এখানকার পরিবেশ আত্মা এবং চোখ উভয়ের জন্যই প্রশান্তিদায়ক।
হীরাকুদ জলাধার
পৃথিবীর দীর্ঘতম মাটির বাঁধ, হীরাকুদ ওড়িশার সম্বলপুর অঞ্চলের শাত্তিকশালী মহানদীতে অবস্থিত। এটি পরিযায়ী পাখিদের সেরা আবাসস্থল। পর্যটকরা উত্তরে গান্ধী মিনার বা বাঁধের অপর প্রান্তে নেহেরু মিনার নামে একটি টাওয়ারের শীর্ষ থেকে, জলের পরাবাস্তব দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।
ভিতরকণিকা অভয়ারণ্য
২০০২ সালে ট্যাগ দেওয়ার পর, ভিতরকণিকা অভয়ারণ্য, ওড়িশার দ্বিতীয় রামসার সাইট হয়ে ওঠে। এটি এই রাজ্যের সেরা জীববৈচিত্র্যের হটস্পটগুলির মধ্যে একটি। দেশের নুন জলের কুমির জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ এখানে বাস করে। যাদের সংরক্ষণ ১৯৭৫ সালে শুরু হয়েছিল। এটি ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ এবং নোনা জলের কুমির, ভারতীয় অজগর সহ অনেক প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীর আবাসস্থল।
চিল্কা হ্রদ
এশিয়ার বৃহত্তম নোনা জলের চিল্কা হ্রদ এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম উপকূলীয় উপহ্রদকে ১ অক্টোবর, ১৯৮৯-এ রামসার সাইট মনোনীত করা হয়েছিল। সম্প্রতি হ্রদটি বারকুলে তার প্রথম বিলাসবহুল হাউসবোট গরুড় পেয়েছে। শান্ত, তাজা বাতাস উপভোগ করার জন্য এটি একটি উপযুক্ত জায়গা। স্বচ্ছ জল, ভ্রমণ, সাইকেল চালানো, বাইক চালানো, মাছ ধরা, সুন্দর গ্রামাঞ্চল এবং স্থানীয় সংস্কৃতির জন্য একটি দারুণ। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়টা এখানে আসার জন্য খুবই ভাল। কারণ এই সময়ে সাইবেরিয়া থেকে অনেক পরিযায়ী পাখি এখানে আসে।