মহিলাদের গর্ভবতী হওয়ার সঙ্গে অনেক গুলি জৈবিক কাজ সারিবদ্ধ ভাবে ঘটে। এটা সকলেরই জানা, পুরুষের শুক্রাণু ছাড়া নারী গর্ভবতী হন না। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, এর সঙ্গে অনেকগুলি কাজ ঠিকঠাক হলেই তবে আসে মাতৃত্বের আশীর্বাদ। গর্ভবতী করা ছাড়াও আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে শুক্রাণু। অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা এই বিষয়ে নতুন অনেক তথ্য সামনে আনল।
গবেষণায় বলা হয়েছে, শুক্রাণু শুধু গর্ভবতী করে না, নারী শরীরকে গর্ভবতী রাজি করায় শুক্রাণু। নারী শরীরকে এমন কিছু সংকেত পাঠায় শুক্রাণু, যার ফলে প্রেগনেন্সির সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
গবেষণার প্রধান লেখক অধ্যাপক সারা রবার্টসন বলেন, 'এটি প্রথম গবেষণা যেখানে দেখা গিয়েছে মহিলাদের ইমিউন রেসপন্স স্পার্ম থেকে পাওয়া সিগনালের ভিত্তিতে কাজ করে এবং ডিম্ভাণুকে নিষিক্ত করার অনুমতি দেয়। যার ফলেই প্রেগনেন্সি আসে।'
তিনি আরও বলেন, স্পার্ম নিয়ে এই গবেষণা এতদিনের ধারণা পাল্টে দিচ্ছে। স্পার্মের ক্ষমতা সম্পর্কে আগের ধারণা অনেকাংশেই বদলে যাচ্ছে। এতে শুধুমাত্র জেনেটিক উপাদানই থাকে না, তার সঙ্গে নারী শরীরকে রাজি করাতেও কাজ করে। যাতে শরীর নিষিক্ত হতে রাজি হয়।
স্পার্মে থাকা প্রোটিন প্রেগনেন্সির সময় মহিলাদের ইমিউনিটি সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করে যাতে শরীর বাইরে থেকে আসা ভ্রূণকে গ্রহণ করে।
গবেষণায় যেখানে সুস্থ স্পার্ম এবং অনিষেকযোগ্য স্পার্ম ইঁদুরের জরায়ুতে নিষিক্ত করা হয়। সেখানে দেখা গিয়েছে সুস্থ স্পার্মের ফলে নারী দেহের জিনে অনেক বেশি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে ইমিউন রেসপন্সের বিষয়ে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, সুস্থ স্পার্মের ফলে মহিলাদের ভালো ইমিউন টলারোন্স মেলে। তুলনায় তেমন প্রভাব ফেলে না অনিষেকযোগ্য স্পার্ম। সুস্থ স্পার্ম সরাসরি মহিলাদের কোষে প্রভাব বিস্তার করে।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, সুস্থ স্পার্মের প্রভাব শুধুমাত্র প্রেগনেন্সিতে নয়, বাচ্চার স্বাস্থ্যের উপরও পড়ে। বয়স, ডায়েট, ওজন, মদ্যপান বা ধূমপানের প্রভাব সরাসরি পুরুষদের স্পার্ম কোয়ালিটির উপর পড়ে। এর ফলে প্রেগনেন্সির হেল্থও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
অধ্যাপক রবার্টসন বলেন, 'এটা মনে করা হয় স্পার্ম শুধুমাত্র গর্ভবতী করতে পারে। কিন্তু তা নয়। এর সঙ্গে স্পার্ম কোয়ালিটি প্রেগনেন্সির সময় মহিলাদের স্বাস্থ্য এবংসন্তানের স্বাস্থ্যের উপরও পড়ে।'