বাতকর্মে নিয়ন্ত্রণ নেই অনেকেরই! কখনও কখনও এটি চাইলেও ভেবে চিন্তে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। ফলে যখন তখন, সেখানে সেখানে এর আওয়াজ বা কটু গন্ধে রীতিমতো বিড়ম্বনায় পড়তে হয় এর ‘উৎপাদক’কে!
অফিসের জরুরি মিটিংয়ের মাঝে, বাড়িতে ঘর-ভর্তি লোকের সামনে বাসে-ট্রামে যাতায়াতের সময় কড়া সাবধানতার বাঁধন ফসকে অনেক সময়ই বাতকর্ম হয়ে যায়! তখন মুখ কাচুমাচু করা, অন্যমনষ্ক হওয়ার ভান করা বা ‘ছিঃ... এসব কে করল’ টাইপের নিস্ফল চালাকির আড়ালে নিজেকে লুকোতে হয়।
কিন্তু বাতকর্ম নিয়ে লজ্জা পান বা অন্যকে লজ্জা দেন যাঁরা, তাঁরা কি জানেন বাতকর্ম সুস্থ শরীরেরই লক্ষণ! শুধু তাই নয়, এর কটু, অস্বস্তিকর গন্ধও নাকি আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারি! বছর খানেক আগে নিজেদের গবেষণাপত্রে এমনই বিচিত্র দাবি করেন একদল ব্রিটিশ গবেষক।
ইংল্যান্ডের এক্সটার বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Exeter) একদল গবেষক তাঁদের গবেষণাপত্রে দাবি করেন, বাতকর্মে নির্গত হাইড্রোজেন সালফাইডের গন্ধ মাইটোকন্ড্রিয়া ক্ষতি রোধ করতে সক্ষম। এছাড়াও নানা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। এমনকি ক্যান্সারও প্রতিরোধ করতে পারে!
এক্সটার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয় মেডিসিনাল কেমিস্ট্রি কমিউনিকেশনস (MedChemComm) নামের একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক পত্রিকায়। বাতকর্ম প্রসঙ্গে ডেনমার্কের কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক স্টাইন ভাহোমের মতে, বাতকর্ম সুস্থ শরীরেরই লক্ষণ!
গবেষক স্টাইন ভাহোমের মতে, বাতকর্মের ফলে শরীরের ওজন স্বাভাবিক ভাবেই নিয়ন্ত্রণে থাকে। শুধু তাই নয়, ঘন ঘন বাতকর্মের ফলে হার্টের নানা অসুখ, ডায়বেটিস, স্ট্রোক, এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমে।
বাতকর্মে নির্গত হাইড্রোজেন সালফাইডের গন্ধ ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে, এই দাবি মানতে পারেননি বিশ্বের অনেক গবেষক, বিজ্ঞানী। তবে এ কথা অনেকেই মেনে নিয়েছেন যে, জোর করে বাতকর্ম চেপে রাখলে তা শারীরিক অস্বস্তি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। কারণ, বাতকর্ম চেপে রাখার ফলে এর হাইড্রোজেন সালফাইড আমাদের রক্তের সংবহনতন্ত্রে মিশে ফুসফুসে বা হৃদপিণ্ড পৌঁছে বড়সড় স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে।