আপনার পেটের হজম সমস্যা, গ্যাস, অ্যাসিডিটি, এমনকি ওজন কমানোর চিন্তা—সব কিছুরই একটি সহজ, ঘরোয়া সমাধান লুকিয়ে রয়েছে আপনার রান্নাঘরের ঝাঁপিতেই। আমরা বলছি সেলারি বীজ বা জোয়ান (carom seed)–এর কথা। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা থেকে আধুনিক গবেষণা—সব ক্ষেত্রেই এই ছোট কিন্তু গুণে পরিপূর্ণ বীজটির ব্যবহার বহু পুরনো।
হজমশক্তি বাড়াতে সহায়ক
সেলারি বীজে থাকা থাইমল নামক যৌগ হজমরস নিঃসরণে সহায়তা করে, ফলে খাবার সহজে ভাঙে এবং হজম হয়। বদহজম, পেট ফাঁপা বা গ্যাসের মতো সমস্যা থেকে তাৎক্ষণিক আরাম দিতে পারে সেলারি জল বা চা।
অ্যাসিডিটি ও বুকজ্বালার সমাধান
এর ক্ষারীয় বৈশিষ্ট্য পাকস্থলীর অতিরিক্ত অ্যাসিডকে নিরপেক্ষ করতে সাহায্য করে, অ্যাসিড রিফ্লাক্স ও বুকজ্বালার মতো সমস্যার থেকে মুক্তি দেয়। খাবারের পরে এক চিমটি জোয়ান চিবিয়ে খাওয়া অত্যন্ত কার্যকর।
শ্বাসকষ্ট ও কাশিতেও উপকারী
জোয়ান প্রাকৃতিকভাবে কাশি, হাঁপানি ও ব্রঙ্কাইটিস উপশমে কাজ করে। সেলারি মিশ্রিত গরম জল পান করলে অথবা বাষ্প গ্রহণ করলে কফ নেমে আসে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
সেলারি বীজ বিপাকহার বাড়াতে পারে, যা শরীরের চর্বি ঝরাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে খালি পেটে সেলারি জল পান করলে ওজন হ্রাসের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়।
পিরিয়ডের ব্যথায় আরাম
এই বীজে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান ব্যথা উপশম করে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে পিরিয়ডের সময় পেটের খিঁচুনি কমাতে সাহায্য করে।
সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য থাকায় সেলারি ছোটখাটো সংক্রমণ প্রতিরোধে দারুণ কাজ করে। থাইমল যৌগ ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার রোধ করে শরীরকে সংক্রমণমুক্ত রাখে।
দাঁতের ব্যথা ও মুখের দুর্গন্ধ হ্রাস
জোয়ানের অ্যান্টিসেপটিক ও অসাড়কারী গুণ দাঁতের ব্যথা কমায় এবং মুখের জীবাণু ধ্বংস করে। জোয়ান চিবিয়ে খেলে নিঃশ্বাস থাকে সতেজ।
ত্বকের সমস্যার সমাধান
ব্রণ, চুলকানি বা ত্বকের হালকা জ্বালাভাব দূর করতে সেলারি বীজ পিষে লাগানো যায়। এটি ত্বকে প্রদাহ কমায় এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন?
এক গ্লাস গরম জলে আধ চামচ সেলারি বীজ ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খান। খাবারের পর এক চিমটি চিবিয়ে খেতে পারেন। শ্বাসকষ্টে সেলারি মিশ্রিত জলের ভাপ নিন।
সতর্কতা: গর্ভবতী মহিলা বা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের সেবনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।