Guava Benfit For Life: পেয়ারাকে বলা হয় সুপার ফ্রুট। কারণ আকারে ছোট হলেও এর উপকারিতা আছে বিশাল। আবার এটিকে ‘গরিবের আপেল ফল’ও বলা হয়। কারণ আপেলের অনেক উপকারিতা থাকলেও সবাই তা কিনতে সক্ষম হয় না। কিন্তু পেয়ারার উপকারিতা অনেকটা আপেলের কাছাকাছি রয়েছে। কিছু মানুষ আবার পেয়ারা কে ‘ফলের রাণী’ বলেও আখ্যা দেয়।
পেয়ারার পুষ্টিগুণপকারিতা
পেয়ারার প্রতিটি অংশেই বিভিন্ন উপাদান রয়েছে। যার জন্য পেয়ারা এত সব উপকারিতা।
এই পেয়ারার স্কিন অর্থাৎ খোসাতে আছে ফেনলিক উপাদান । পেয়ারার বীজে আছে গ্লাইকোসাইড,ক্যারোটিনয়েডস, ফেনলিক উপাদান।
চলুন বিস্তারিত ভাবে উপকারিতাগুলো জেনে নিই।
১. মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে
পেয়ারা বিভিন্ন ভিটামিন সমৃদ্ধ একটি ফল। যেমন: ভিটামিন বি-৬ এবং ভিটামিন বি-৩, যা যথাক্রমে পাইরিডক্সিন এবং নিয়াসিন নামেও পরিচিত।
২. মানসিক সুস্থতা বজায় রাখে
এই ফলের মধ্যে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরের পেশী এবং স্নায়ু শিথিল করতে সাহায্য করে। যারা দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন কাজের চাপে থাকে ,অবসাদগ্রস্ত হয়ে আছে বা ভারী ব্যায়াম করে তারা পেয়ারা খেলে শরীরের ক্লান্তভাব দূর হয়ে যায়।
৩. গর্ভবতী নারীদের ফলিক এসিডের চাহিদা মেটায়
পেয়ারা ভিটামিন বি-৯ সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি গর্ভবতী নারীদের ফলিক এসিডের চাহিদা পূরণ করে এবং এটি শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সহায়তা করে ও ভ্রূণকে স্নায়বিক রোগ থেকে রক্ষা করে।
৪. ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে
পেয়ারাতে লাইকোপেন, কোয়ারসেটিন, ভিটামিন সি এবং পলিফেনলের মতো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপস্থিত আছে। এটি শরীরে ফ্রি রেডিকেল হিসেবে কাজ করে এবং ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে।
৫ দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়
গাজরের পর দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সবচেয়ে সুপরিচিত হলো পেয়ারা। পেয়ারাতে বিদ্যমান ভিটামিন-এ কেবল দৃষ্টিশক্তির উন্নতিই ঘটায় না বরং এটি চোখের নানা সমস্যা দূর করতেও সহায়তা করে।
৬. আয়রণ শোষণ বাড়িয়ে তোলে
পেয়ারা ভিটামিন সি এর অন্যতম একটি সমৃদ্ধ উৎস। পেয়ারাতে উপস্থিত ভিটামিন সি কমলার চেয়ে প্রায় ৪ গুণ বেশি থাকে।
আর ভিটামিন সি আমাদের ইমিউন সিস্টেম উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং খারাপ ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসকে মেরে ফেলে সাধারণ যেসব সংক্রামিত রোগ আছে সেগুলো থেকে রক্ষা করে।
৭ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে
পেয়ারা ফাইবারের একটি ভালো উৎস এবং এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ কম থাকে । তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীরাও খেতে পারবে।
৮..উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
পেয়ারাতে লো সোডিয়াম ও হাই পটাসিয়াম আছে যা আমাদের রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
৯. কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে
পেয়ারাতে প্রায় ৫.৪ গ্রাম ফাইবার আছে। আর ফাইবার আদের পাচনতন্ত্রের জন্য ভালো। ফাইবার বদহজম কমায়,পানি ধরে রাখে ,মল নরম ও মল বৃদ্ধি করে।
১০. ব্যথা কমাতে সাহায্য করে
পেয়ারা আমাদের দাঁতের ব্যথা, মাড়ির ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। পেয়ারাতে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান ও অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান আছে।
১১. ঠান্ডা কাশি জ্বরের বিরুদ্ধে কাজ করে
অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান আমাদের বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়। বিশেষ করে সিজনাল যেসব সমস্যা আমরা সম্মুখীন হই সেগুলোর বিরুদ্ধে কাজ করে পেয়ারার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অন্যান্য উপাদান।
১২. কোলেস্টরল লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখে
পেয়ারাতে জিরো কোলেস্টরল থাকায় যারা কোলেস্টরলের সমস্যায় জর্জরিত, তারা অনায়াসে এটি খেতৈ পারেন।
১৩. ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
ভিটামিন বি ও ভিটামিন সি আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায় খুব প্রয়োজনীয় ভিটামিন । এছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম,পটাসিয়াম এগুলো আমাদের ত্বক কোমল রাখে।
পেয়ারাতে উপস্থিত পানি আদের ত্বক টানটান করে ও শুষ্কতা কমায়।
১৪.ওজন কমাতে সাহায্য করে
যারা ওজন কমানোর প্রচেষ্টায় আছেন তাদের ডায়েট চার্টে লো কার্বোহাইড্রেট ও লো ক্যালরি হিসেবে ও ফাইবার এর জন্য এটি রাখতে পারেন।