রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে শরীরে বাসা বাঁধে নানা গুরুতর অসুখ। বাত, কিডনিতে পাথরের মতো গুরুতর সমস্যা হতে পারে। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন বলছে,ইউরিক অ্যাসিডের স্বাভাবিক মাত্রা হল পুরুষদের মধ্যে ৩.৪ থেকে ৭ mg/dL এবং মহিলাদের মধ্যে ২.৪ থেকে ৬ mg/dL। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কম থাকলেও হতে পারে নানা সমস্যা। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা ২mg/dL বা ১mg/dL-এর কম হলে মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস, পারকিনসন এবং মোটর নিউরনের মতো অসুখের ঝুঁকিও থাকে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, খাবারের উপরে নির্ভর করে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা। তাই ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে ডায়েটে বদল আনা জরুরি।
ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়াকে ডাক্তারি পরিভাষায় হাইপারইউরিসেমিয়া বলা হয়। এজন্য গাঁটে গাঁটে পাথর তৈরি হতে থাকে। এর ফলে কিডনিতে পাথরও হতে পারে। রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা যাতে না বাড়ে, সেজন্য খাবার ও পানীয়ের দিকে নজর দিতে হবে। ইউরিক অ্যাসিড এমন একটি উপাদান থেকে তৈরি হয় যাতে পিউরিন নামক পদার্থের উচ্চ ঘনত্ব থাকে। নির্দিষ্ট ধরণের মাংস, শুকনো মটরশুটি, বিয়ার বা ওয়াইন, সামুদ্রিক খাবার ইত্যাদিতে পিউরিন বেশি থাকে। এমন অনেক খাবার আছে যা গাঁটে ব্যথায় আক্রান্তরা শীতকালে তাঁদের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। যা গাঁটের ফোলাভাব এবং শক্ত হওয়া কমাতে সাহায্য করতে পারে।
কমলালেবু- কমলা লেবু ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমায়। মেডিকেল নিউজ টুডে অনুযায়ী, শীতকালে কমলা লেবু সহজেই পাওয়া যায়। উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের জন্য কমলা লেবু মহাষৌধির চেয়ে কম নয়। এতে উপস্থিত ভিটামিন সি রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমায়। তাই উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডযুক্ত রোগীদের শীতে নিয়মিত কমলা লেবু খাওয়া উচিত।
আমলা- আমলা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমায়। হেলথ লাইনের মতে,কমলার মতো আমলায়ও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি। এছাড়াও আমলায় রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ। ঔষধি গুণে সমৃদ্ধ আমলা নিয়মিত সেবন শুধু ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে না একাধিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয়।
চেরি- ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমায় চেরি ফল। হেলথ লাইন অনুসারে, ইউরিক অ্যাসিড রোগীরা খাদ্যতালিকায় চেরি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এর কারণ, চেরিতে প্রদাহ-বিরোধী গুণ রয়েছে। যা ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির কারণে ব্যথা এবং ফোলাভাব কমায়।
গ্রিন টি- ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমায় গ্রিন টি। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে,শীতকালে নিয়মিত গ্রিন টি পান করা খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। এতে উপস্থিত পুষ্টি উপাদান ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
নারকেল জল- ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমায় নারকেল জল। ওয়েবএমডি অনুসারে, নারকেলের জল উচ্চতর ইউরিক অ্যাসিড কমাতে কার্যকর বলে মনে করা হয়। উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের প্রতিদিন সকালে নারকেল জল খাওয়া উচিত।
আরও পড়ুন- হাড় ক্ষয় রুখতে শুধু ক্যালশিয়ামই নয়, দরকার আরও ৫ ধরনের খাবার