North Bengal Bird Festival: দোয়েল, কোয়েল, ময়না, ঈগল, পাল্লাস ফিশ ঈগল, শিকরা, ফিনের তাঁতি, পাইড হর্ন বিল-সহ আরও অনেক রকমের পাখি রয়েছে। জঙ্গলে ঘেরা উত্তরবঙ্গে (North Bengal) প্রায় ৭৫০ রকমের পাখি রয়েছে। উত্তরে পর্যটকরা এলেও তাঁরা এ ব্যাপারে বেশি কিছু জানেন না। পাহাড় কিংবা জঙ্গল ঘুরেই তাঁরা ফিরে যান। পাখি দেখার আগ্রহ কেউ দেখায় না। কিন্তু গোটা দেশে ১২৭০ রকমের পাখি রয়েছে, তার মধ্যেই উত্তরেই রয়েছে ৭৫০ রকম। তাই এই পাখিকে কেন্দ্র করেই এবার পর্যটনকে আরও ছড়িয়ে দিতে প্রস্তুত পর্যটন দপ্তর।
পাখির টানে পর্যটক আকর্ষণের ভাবনা
এবার পাখির টানে পর্যটকদের উত্তরবঙ্গমুখী করে তোলার উদ্যোগ রাজ্য পর্যটন দফতরের। তাই ‘উত্তরবঙ্গ পাখি উৎসব’-এর (North Bengal Birds Festival)আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে এই উৎসব শুরু হয়েছে, চলবে মার্চের ১০ তারিখ পর্যন্ত। এই উৎসবে চার দেশের ৩০ জন প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। তাঁদের বিভিন্ন জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে রকমারি পাখি (Birds) দেখানো হবে। আর এই পদ্ধতিতেই পর্যটকদের উত্তরবঙ্গে আরও বেশি করে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা পর্যটন দপ্তরের। দিল্লি, বেঙ্গালুরু, পুনে, কলকাতা, ঝাড়খণ্ড, অরুণাচল প্রদেশের পাশাপাশি বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের প্রতিনিধিরা এই উৎসবে যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ACT- এর আহ্বায়ক রাজ বসু।
আরও পড়ুনঃ দোল উত্তরবঙ্গে কাটানোর প্ল্যান? পূর্বাভাসে শীতবিলাসীদের জন্য সুখবর
কোথায় কোথায় পাখি দেখবেন প্রতিনিধিরা?
গত ২ বছর ধরে এই উৎসব চালু রয়েছে। এটি তৃতীয় মরশুম। পাখি উৎসবে উপস্থিত রয়েছে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান-সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিরা। উৎসবের মূল গন্তব্য হল শিলিগুড়ি এবং পূর্ব ডুয়ার্সের কয়েকটি জায়গা। শিলিগুড়ির মৈনাক ট্যুরিস্ট লজে উৎসবের সূচনা হবে। তারপর উৎসবটি পূর্ব ডুয়ার্সের বিভিন্ন গন্তব্যে চলে যাবে। গাজলডোবায় হয়ে চিলাপাতা এবং কোদালবস্তি এলাকায় ভ্রমণ করবেন উৎসবে অংশগ্রহণকারী পর্যটকরা। এরমধ্যে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানও রয়েছে। সেখানে তাঁরা ঈগল, পাল্লাস ফিশ ঈগল, শিকরা, ফিনের তাঁতি এবং কম পাইড হর্ন বিল সহ ২৪৬ টি প্রজাতির পাখি দেখার আশা করছেন। সেখানে দু'রাত থাকার পর বক্সার লেপচাখায় নিয়ে যাওয়া হবে পর্যটকদের। এই অংশটি ভুটানের সংলগ্ন এবং ভুটানি সংস্কৃতির একটি আউটপোস্ট। সেখানে তাঁরা ভুটানি সংস্কৃতির পাশাপাশি এলাকার সমৃদ্ধ পাখির জীবন উপভোগ করবেন। চূড়ান্ত গন্তব্য হবে রাজাভাতখাওয়া। এটি ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের প্রবেশপথে অবস্থিত। সেখানেই সমাপ্তি অনুষ্ঠান হবে। স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরাও এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ থাকবে।
কী দেখবেন সেখানে?
পাখিরা কীভাবে থাকে, কী খায় – সেসব বিষয়েও তাদের জানানো হবে। রাজাভাতখাওয়াতে এই উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। এ প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের ইকো ট্যুরিজম (Eco Tourism)বিভাগের চেয়ারম্যান রাজ বসু বলেন, “রাজ্য সরকার চায় উত্তরের পাখিদেরও দেশে বিদেশের পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে। তাই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন আমাদের এখানে পর্যটকরা পাহাড় কিংবা জঙ্গল দেখতেই আসে। আমরা চাই পর্যটকরা পাখির টানেও এখানে আসুক। তাঁরা জঙ্গলে গিয়ে পাখি দেখুক। কারণ, উত্তরে যত রকমের পাখি রয়েছে অন্য কোথাও তা নেই।” অন্যদিকে, রাজ্য পর্যটন দফতরের সহকারী অধিকর্তা জ্যোতি ঘোষ বলেন, “আমরা চাই পর্যটনের উন্নতি। তাই এই উৎসব করা হচ্ছে। আশা করি আমাদের এই পদক্ষেপ সফল হবে।”
আরও পড়ুনঃ বসন্তে হিমাচল ঘোরার সুবর্ণ সুযোগ, IRCTC-র দুর্দান্ত 'হানিমুন প্যাকেজ'
উল্লেখ্য, সম্প্রতি গ্রেট ব্যাকইয়ার্ড বার্ড কাউন্ড বা GBBC সমীক্ষায় জানা যায়, পাখির প্রজাতির নিরিখে সারা ভারতে প্রথম স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। শুধু তাই নয়, রাজ্যের জেলাগুলোর মধ্যেও পাখির প্রজাতি বৈচিত্র নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। যাতে দেখা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং-এ সবথেকে বেশি প্রজাতির পাখি দেখতে পাওয়া যায়। প্রায় ৫০০ প্রজাতির পাখির মধ্যে শুধু দার্জিলিং-এ ২০৩ প্রজাতির পাখি পাওয়া যায়।