শরীরে জমে থাকা চর্বি কমানো খুবই কঠিন কাজ। ফ্যাট কোষগুলি আলফা -২ রিসেপ্টরের সঙ্গে যুক্ত, যাতে প্রচুর পরিমাণে চর্বি জমতে থাকে। অন্যান্য চর্বির তুলনায় এই চর্বি কমানো খুবই কঠিন। এই মেদ কমাতে মানুষ নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেন। যার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যকর খাদ্য, ভারী ব্যায়াম, ভাল জীবনযাপন ইত্যাদি। তবে এত পরিশ্রমের পরেও অনেকের শরীর, পেট ও বুকের মেদ কমে না।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, এমন একটি ফলও রয়েছে যা খেলে শরীরের চর্বি কমে। আর সবচেয়ে সুবিধা হল, এর জন্য জিমে যাওয়ারও দরকার নেই। সপ্তাহে মাত্র ৫ দিন আধ ঘন্টা হাঁটাহাঁটিও অনেকটা সাহায্য করতে পারে। যাঁদের শরীরে বেশি চর্বি জমেছে, তাঁদের জন্য এই পদ্ধতি খুবই উপকারী। আপনিও যদি সেই ব্যক্তিদের একজন হন যিনি শরীরের মেদ কমাতে চান, তাহলে প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
গবেষণায় কী বলা হয়েছে?
শরীরের চর্বি কমানোর এই গবেষণাটি করেছেন চিচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। গবেষণায় রোজ ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটতে পারেন এমন মহিলাদের সামিল করা হয়েছিল। গবেষণায়, বিজ্ঞানীরা ৬০০ মিলিগ্রাম নিউজিল্যান্ড ব্ল্যাককারেন্ট নির্যাস (CurraNZ) মহিলাদের ৭ দিনের জন্য দিয়েছিলেন। নিউজিল্যান্ড ব্ল্যাককারেন্ট নির্যাস দেওয়ার কারণ ছিল, এটি একটি সুপারফুড হিসাবে গণ্য হয়। এতে উচ্চ মাত্রায় রয়েছে অ্যান্থোসায়ানিন। অ্যান্থোসায়ানিন হল পলিফেনলের একটি উপশ্রেণি যা ফল ও সবজিকে সেগুলির রঙ দেয়।
বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে এই সাপ্লিমেন্টটি ২৫ শতাংশ চর্বি বার্ন করতে সাহায্য করে। যেসব মহিলার শরীরে এটি ভাল ফল দিয়েছে, তাঁদের ৬৬ শতাংশ বার্ন করা গিয়েছে। যাঁদের হাতে বেশি চর্বি ছিল, তাঁদের থেকে ভাল ফল তাঁরা পেয়েছেন, যাদের পায়ে বেশি চর্বি ছিল।
গবেষকরা বিশ্বাস করেন যে এই অ্যাডিপোসাইটস ফ্যাট কোষের কারণে হয়, যাতে পায়ের চর্বি বার্ন করতে সুবিধা পাওয়া যায়। এই গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে যে, একই কাজের পরে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে চর্বি বার্ন করার হার দ্বিগুণেরও বেশি।
ব্ল্যাক কারেন্ট কী?
কারেন্ট' শব্দটি আমলকি পরিবারের সঙ্গে যুক্ত। ব্ল্যাককারেন্ট (Blackcurrant) শুকনো এবং বীজহীন কালো আঙুর থেকে তৈরি করা হয়, যাকে ব্ল্যাক করিন্থ এবং ক্যারিনা বলা হয়। কারেন্টকে ৩ সপ্তাহ ধরে শুকানো হয়। ছোট আকারের কারণে, এগুলির স্বাদ মিষ্টি এবং ঝাল। কিশমিশ, সুলতানা এবং ব্ল্যাক কারেন্টের পুষ্টিগুণ প্রায় একই, শুধু রং তিনটিরই আলাদা। ব্ল্যাক কারেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বক ও চোখের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে।
জিমে যাওয়ার প্রয়োজন নেই
চিচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সারসাইজ ফিজিওলজির অধ্যাপক মার্ক উইলিয়ামস বলেন, "ব্যায়াম এবং সীমাবদ্ধ ডায়েটের সঙ্গে ব্ল্যাককারেন্ট ব্যবহার করা হলে তা শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য খুব ভাল সাপ্লিমেন্ট হতে পারে কিনা সেই বিষয়ে আমরা গুরুত্ব সহকারে ভাবনা চিন্তা করতে পারি।" গবেষণার ফলাফল থেকে প্রমাণিত যে, ব্ল্যাক কারেন্ট যাঁদের ওজন বেশি, বিশেষত শরীরের নিম্নাংশের, তাঁদের জন্য খুবই উপকারী। এর জন্য প্রতিদিন জিমে যাওয়ারও দরকার নেই। মাত্র ৩০ মিনিট হাঁটলেই উপকার পাওয়া যায়। আর যদি হাঁটার সময় না পাওয়া যায়, তাহলে ঘরের কাজ বা বাগান করলেও উপকার পাওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন - কোন প্রাণী শুঁকে ক্যান্সারের গন্ধ পায়? রইল উত্তর