রক্তের গ্রুপের উপর নির্ভর করে হার্টের সমস্যার ঝুঁকি। বিশ্বজুড়ে বেড়ে গিয়েছে হৃদরোগের ঝুঁকি। প্রতি বছর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। অসংযমী জীবনযাপন, মানসিক চাপ এবং উদ্বেগের কারণ বাড়ে হার্টের সমস্যা। অনেক সময় মানুষ হৃদরোগ সম্পর্কে আগে থেকে আঁচ পান না। যে কারণে বাঁচানো মুশকিল হয়ে পড়ে। কিন্তু আপনি কি জানেন রক্তের গ্রুপের ভিত্তিতে হার্টের সমস্যার কথা আগে থেকে জানা যায়! জানলে বিস্মিত হবেন, আপনার রক্তের গ্রুপ এবং হার্টের স্বাস্থ্য পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত। প্রত্যেক মানুষের রক্তের গ্রুপ আলাদা। এমতাবস্থায় গবেষকরা বলছেন, ABO রক্ত ব্যবস্থার সাহায্যে বোঝা যায় কোন ব্লাড গ্রুপের মানুষের হৃদরোগের প্রবণতা বেশি।
ABO রক্ত ব্যবস্থা কী?
এবিও সিস্টেমে রক্ত বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত। রক্তে A এবং B অ্যান্টিজেনের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির ভিত্তিতে রক্তকে বিভিন্ন অংশে ভাগ করে কাজ করে এই ব্যবস্থা। এর উপর ভিত্তি করে মানুষের এ, বি, এবি বা ও রক্তের গ্রুপ রয়েছে। ১৯০১ সালে অস্ট্রিয়ান ইমিউনোলজিস্ট কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার প্রথম A, B এবং O রক্তের গ্রুপ শনাক্ত করেছিলেন।
রক্তের গ্রুপ পজিটিভ এবং নেগেটিভ কারণ লাল রক্ত কণিকায় প্রোটিনের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির উপর নির্ভর করে। রক্তে প্রোটিন থাকলে আরএইচ পজিটিভ, অন্যথায় আরএইচ নেগেটিভ। ও রক্তের গ্রুপ থাকাদের বলা হয় সার্বজনীন দাতা। যাঁদের রক্তের গ্রুপ AB, তাঁরা পৃথিবীর যে কোনও মানুষের কাছ থেকে রক্ত নিতে পারেন।
২০২০ সালে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, রক্তের গ্রুপ A এবং B হলে থ্রোম্বোইম্বোলিক রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তবে O রক্তের গ্রুপের ব্যক্তিদের তুলনায় উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কম পাওয়া গিয়েছে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, A ব্লাড গ্রুপের ব্যক্তিদের হাইপারলিপিডেমিয়া, এথেরোস্ক্লেরোসিস এবং হার্ট ফেইলিউর হওয়ার ঝুঁকি O ব্লাড গ্রুপের তুলনায় বেশি। B ব্লাড গ্রুপের ব্যক্তিদের O রক্তের তুলনায় হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি।
A ব্লাড গ্রুপের ব্যক্তিদের হার্ট ফেইলিউর, স্লিপ অ্যাপনিয়া, এথেরোস্ক্লেরোসিস, হাইপারলিপিডেমিয়া, অ্যাটোপির ঝুঁকি অনেক বেশি। থ্রম্বোইম্বোলিক রোগ এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকির পাশাপাশি B ব্লাড গ্রুপের ব্যক্তিদের o রক্ত গ্রুপের ব্যক্তিদের তুলনায় হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
এমনটা কেন হয়?
গবেষকরা মনে করেন, নন-উইলিব্র্যান্ডের পার্থক্যের কারণে এমনটা হয়। নেপথ্যে বড় ভূমিকা থাকে রক্ত জমাট বাঁধা প্রোটিনের। নন-ও ব্লাড গ্রুপের ব্যক্তিদের নন-উইলিব্র্যান্ড ফ্যাক্টরে অধিক ঘনত্বের কারণে রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনা বেশি। O রক্তের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি হয় না।
গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে, ও ছাড়া বাকি রক্তের গ্রুপের ব্যক্তিদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রক্তপাত এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কম থাকে। সেই সঙ্গে নন-o ব্লাড গ্রুপের ব্যক্তিদের o রক্তের গ্রুপের তুলনায় হার্ট সংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি অনেক বেশি।
আরও পড়ুন- ভোরে না রাতে খাওয়ার পর হাঁটবেন? এই ৫ ফায়দা পেতে জানতেই হবে