ওজন কমানোর জন্য অনেকেই ডায়েট থেকে আলু বাদ দেন। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, আলু খেলেও কমতে পারে ওজন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, খাবার খাওয়ার সময় অনেকেই এমনকিছু খেয়ে নেন, যেগুলিতে বেশি পরিমানে ক্যালোরি থাকে। ফলে ওজন কমার পরিবর্তে বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে ওজন কমানোর ডায়েটে যদি আলুকে যুক্ত করতে হয়, তবে সেটি খাওয়ার সঠিক উপায়ও জানতে হবে।
ওজন কমানর জন্য সঠিকভাবে খেতে হবে আলু
এই সংক্রান্ত এক গবেষণায় নিযুক্ত গবেষকরা জানাচ্ছেন, ওজন কম করা জন্য আলু কীভাবে রান্না করা হচ্ছে ও খাওয়া হচ্ছে তা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আলু খেয়েও ওজন কম করার অর্থ একেবারেই এটা নয় যে, চিপস বা তেলেভাজা আলু খাওয়া। কারণ এতে আলুর পুষ্টিগুণ কমে যায়। উল্টোদিকে ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লুইসিয়ানার পেনিংটন বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের এক ডায়েটিশিয়ান তথা এই গবেষণার সদস্য প্রফেসর ক্যান্ডিডা রেবেলো বলেন, 'প্রায়শই দেখা গেছে, যাঁরা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা যাতে বেশি খিদে না পায় সেই জন্য ক্যালোরির চিন্তা না করে দীর্ঘ সময় ধরে একই ধরনের ডায়েট গ্রহণ করে চলেছেন।" তিনি আরও বলেন, "কম ক্যালরি যুক্ত ভারী খাবার খাওয়াই ভালো। এতে ক্যালোরি গ্রহণের মাত্রা কমানো যেতে পারে।"
স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের রোগীরা এভাবে খান আলু
অনেকেই মনে করেন আলুতে ওজন বাড়ে। আর তার ফলে আসতে পারে স্থূলতা, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, এমনকী হৃদরোগের ঝুঁকিও। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, কীভাবে ও কতটা আলু তথা খাবার খাওয়া হচ্ছে। গবেষকদের মতে, যদি কেউ কম এনার্জি যুক্ত ভারী খাবার বেছে নেন, তাহলে দেহে কম ক্যালোরি যাবে এবং পেটও তাড়াতাড়ি ভরে যাবে।
এই গবেষণার জন্য, ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি ৩৬ জন এমন মানুষকে বেছে নেওয়া হয়, যাঁরা অতিরিক্ত ওজন, স্থূল এবং ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছিলেন। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হল এমন একটি অবস্থা যেখানে কোষগুলি রক্তে শর্করা শোষণ করতে সক্ষম হয় না। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পতে থাকে। গবেষণার আট সপ্তাহের সময়সীমায়, ওই ব্যক্তিদের লাঞ্চ ও ডিনারে ৮৫ গ্রাম মাছ বা মাংস এবং ৫৭ গ্রাম আলু বা রান্না করা মসুর ডাল, রুটি, ভাত এবং পাস্তা দেওয়া হয়।
গবেষণার সময়, গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের খেতে দেওয়ার আগে ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা ফ্রিজে খোসা সহ সিদ্ধ আলু রাখতেন। কারণ, এই শীতল প্রক্রিয়া আলুর মধ্যে ফাইবারের পরিমাণ বাড়ায়, কিন্তু রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না। সেক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীরা এভাবে আলু খেলে তাঁদের ক্ষতিও হবে না। এই গবেষণাটি জার্নাল অফ মেডিসিনাল ফুডে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকদের দাবি, গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা যাঁরা আলু খেয়েছিলেন তাঁদের ওজন ৫.৮ কেজি কমেছে। আর যাঁরা মটরশুটি খেয়েছেন তাঁদের ওজন কমেছে চার কেজি।
আরও পড়ুন - স্নানের সময় এই ৪ বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখুন, নয়তো পড়তে পারে টাক