সুস্থ থাকতে আমরা অনেক কিছুই করি, ডায়েটিশিয়ানদের পরামর্শে হাজার হাজার টাকা খরচ করে ফেলি। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত ডায়েট করে আমরা আমাদের স্বাস্থ্যও নষ্ট করে ফেলি। তবে আমাদের ঘরেই এমন কিছু জিনিস রয়েছে যা সঠিকভাবে ব্যবহার করলে আমরা আমাদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে পারি। খাবারের সঙ্গে দই খেতে সবাই পছন্দ করে। আমরা দই বিভিন্ন উপায়ে রায়তা, ঘোল, বাটার মিল্ক হিসেবে সেবন করি। দই খেলে হজম প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পায় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় থাকে। দইয়ের সাথে কিশমিশ মিশিয়ে দিলে খুব উপকার পাওয়া যায়। দই এবং কিশমিশ খাওয়ার সময়ও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
দই খাওয়ার সময়
দউ স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো, কিন্তু আয়ুর্বেদ অনুসারে, যদি এটি ভুল সময়ে খাওয়া হয়, তবে এর বিপরীত প্রভাবও হতে পারে। আয়ুর্বেদে বলা হয়েছে যে রাতে দই খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। রাতে দই খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
দই ও কিশমিশ কখন খাবেন?
দই-কিশমিশ খাওয়ার উপযুক্ত সময় হল দুপুর বা সকালের ব্রেকফাস্ট। দুপুরের দিকে মিড-ডে মিল হিসেবে দই খেতে পারেন। এটি মধ্যাহ্নভোজন-পরবর্তী সময়ে খাওয়াই ভাল। এছাড়াও খেয়াল রাখবেন দইয়ের বাটিতে বেশি কিশমিশ দেবেন না। সবচেয়ে ভালো হয় এক বাটি দইয়ে মাত্র ৪-৫টি কিশমিশ খাওয়া।
দই ও কিশমিশ খাওয়ার উপকারিতা
দই ও কিশমিশ খেলে শরীরে ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে পেটের চাপ ও ফোলাভাবও কমে। এই দুটো একসঙ্গে খেলে হাড় মজবুত হয়। এছাড়া দই ও কিশমিশ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে খুবই উপকারী।
দাঁত ও হাড়ের জন্য
দাঁত ও হাড় মজবুত রাখতে ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে দাঁত ও হাড়ের জন্যও কিশমিশ খাওয়া যেতে পারে। ১০০ গ্রাম কিশমিশের ভিতরে প্রায় ৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম রয়েছে। যা আপনার দাঁত ও হাড় মজবুত করতে কাজ করে।
হজমের উন্নতি ঘটায়
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তির একটি ঘরোয়া প্রতিকার হল ভেজানো কিশমিশ খাওয়া। এ ছাড়া নিয়মিত কিশমিশ খেলে পরিপাকতন্ত্র সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
বলিরেখা দূর হবে
কিশমিশ আপনার ত্বকের বলিরেখাও দূর করে। বিশেষজ্ঞদের মতে দইয়ের মধ্যে কিশমিশ মিশিয়ে খেলে চুল সাদা ও রুক্ষ হয় না।
সবসময় তরুণ থাকবেন
আপনি যদি চিরতরে তরুণ থাকতে চান, তাহলে কিশমিশ ওয়াটার পান করা শুরু করুন। রাতে জলে কিশমিশ দিয়ে ফুটিয়ে নিয়ে প্রতিদিন সকালে সেই জল পান করুন, আপনি চিরতরে তরুণ থাকবেন।
রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়াবে
রাতে ভিজিয়ে রাখা কিশমিশ সকালে খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকে, যার কারণে আমাদের শরীর বাইরের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হয় এবং এই ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করতে পারে না।
পিরিয়ডের সময়
পিরিয়ডের কারণে ব্যথায় কষ্ট পেলে দই ও কিশমিশের মিশ্রণ খেতে পারেন। পাশাপাশি এর ফলে প্রিমেন্সট্রুয়াল সিন্ড্রোমের মোকাবিলায় সাহায্য পাওয়া যায়। এটি ঋতুস্রাবের সময় মহিলাদের সবচেয়ে সাধারণ সমস্যা।
পুরুষদের জন্য দই-কিশমিশ খাওয়া উপকারী
একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, দই পুরুষদের বীর্যের গুণমান বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও দই আমাদের অনেক রোগ থেকে দূরে রাখে। তাই পুরুষদের দই খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। অন্যদিকে, কিশমিশকে টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধিকারী খাবারের ক্যাটাগরিতে গণনা করা হয়, এটি এমন একটি হরমোন যা পুরুষদের যৌন সমস্যা দূর করতে এবং তাদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দূর করতে কার্যকরীভাবে কাজ করে। এই গুণের কারণে এটি পুরুষদের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়।
অয়েলি খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক
যখনই আমরা ক্ষুধার্ত বোধ করি এবং কিছু খাই, কোনটি স্বাস্থ্যকর বা অস্বাস্থ্যকর সেদিকে আমরা মনোযোগ দিই না, এটি ভবিষ্যতে আমাদের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। ভাজা ও অয়েলি জিনিস আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। দই এবং কিশমিশ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য যথেষ্ট বলে মনে করা হয়। দই নিজেই খুব স্বাস্থ্যকর, তবে এর মধ্যে মধু দিয়ে খাওয়া হলে এটি আরও স্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে। এটি অ্যান্টিবায়োটিকের মতো কাজ করে।