বসন্ত অনেক আগেই এসেছে। তবে তাপমাত্রার হেরফেরে এখন ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। তার সঙ্গে এখন বসন্ত অর্থাৎ পক্সের সময়। হামও হয় এ সময় খুব। এ সব রোগ থেকে কী ভাবে সাবধানে থাকবেন, জানাচ্ছেন চিকিৎসক পি কে ঘোষাল।
এই সময়েই কেন হাম ও বসন্তের প্রকোপ বেশি দেখা যায়?
এখন আর পক্সকে সময়ে বেঁধে রাখা যাবে না। বছরের বিভিন্ন সময় এই রোগ থাবা বসাচ্ছে। বিশেষ করে ঋতু পরিবর্তেন সময় এ রোগ দেখা দিচ্ছে। তবে এটা ঠিক এই ভাইরাস ঘটিত রোগ শীতের শেষ এবং গরমের শুরুতেই বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাই এ সময় পক্স বা হামের মতো রোগ বেশি দেখা যায়।
কী দেখলে বোঝা যাবে এটা হাম বা বসন্তের উপসর্গ?
প্রাথমিক ভাবে জ্বর, সর্দি, হাঁচি, ঠান্ডা লাগা, সারা শরীরে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়। পরবর্তী সময়ে গায়ে বিভিন্ন আকারের গোটা বা জল ভরতি ফোস্কার মতো বড় আকারের গোটা বা পুঁজ সমেত বড় বড় গোটাও দেখা যেতে পারে।
কী ভাবে এই সব রোগ থেকে সাবধান হওয়া যাবে?
এখন করোনাকালে সাধারণ জ্বর হলেও অনেকে ভয় পেয়ে যাচ্ছেন। ভয় পেলে রোগের চিকিৎসা হবে না। তাই সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। শিশুদের ক্ষেত্রে সময়মতো টিকা নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। যদি এ ধরনের লক্ষ্মণ থাকে, সে ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিধি মেনে ওষুধ খেতে পারেন। পক্স বা হাম হলে রোগীকে আলাদা রাখতে হবে। রোগটি ছোঁয়াচে, তাই বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন।
শিশুদের কি এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে?
প্রাপ্ত বয়স্কদের তুলনায় অবশ্যই বেশি থাকে। কারণ ছোটদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বড়দের মতো হয় না। এই রোগ সাধারণত দুর্বল ইমিউনিটির কারণে বেশি হয়।
রোগ হলে কী ভাবে তাদের যত্ন নিতে হবে?
শিশুদের ক্ষেত্রে হামই বেশি হয়। তবে পক্স যে একেবারে হয় না তা নয়। হাম হলে প্রথম কয়েক দিন জ্বর থাকে। সঙ্গে বমিও হতে পারে। এ ধরনের লক্ষ্মণ থাকলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সারা দিনে বেশি করে জল খাওয়াতে হবে। ২ বছরের কম বয়সিদের ক্ষেত্রে মায়ের দুধ ভীষণ জরুরি। কিছু ক্ষণ অন্তর অন্তর দুধ খাওয়াতে হবে। রোগ খুব জিটল নয়, তবে চিকিৎসা না করালে অনেক সময় নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে।
হাম বা পক্স হলে কী ভাবে প্রাপ্তবয়স্ক রোগীর যত্ন নেওয়া যেতে পারে?
পক্স বা হাম হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। রোগী দুর্বল হয়ে পড়েন। তাই যতটা সম্ভব পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। পুষ্টিকর মানেই মাছ-মাংস বা শুধুমাত্র আমিষ নয়, নিরামিষও হতে পারে। রোগী যেটা সহজে হজম করতে পারেন তেমন খাবারই দিতে হবে।দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণ জসপান করতে হবে। নিমপাতা দিয়ে ফোটানো উষ্ণ জলে স্নান করা যেতে পারে। পাতা না পেলে এমনিও স্নান করা যেতে পারে। আলাদা ঘরে রোগীর থাকার ব্যবস্থা করতে পারলে ভালো। সাধারণত ৭-১০ দিনের মধ্যে গুটির খোসা উঠতে শুরু করে। সে সময় একটু বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন। খোসা থেকে সংক্রমণের আশ্ঙ্কা বেশি থাকে। বাড়িতে বাচ্চা থাকলে রোগীর ঘরে না পাঠানোই ভালো। কোনও রকম সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।