হাতের মুঠোয় এখন বিশ্ব। যে কোনও কৌতূহলের অবসান হচ্ছে এক সেকেন্ডে। দূরে থাকা কাছের মানুষের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে নিমেষে। সৌজন্যে, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্টফোন। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের ঘুরছে চোখ। অফিসেও আর খাতায় লিখতে লাগে না। লেখালিখির পাট আর নেই। ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে সেরে নেওয়া যাচ্ছে জরুরি কাজ। সবমিলিয়ে এখন জীবন মানে ডিজিটাল। আর সারাক্ষণ কম্পিউটার, স্মার্টফোনে থাকতে থাকতে চোখের হচ্ছে দফারফা। হতে হচ্ছে নানা সমস্যার সম্মুখীন। চোখে জল, শুকিয়ে যাওয়া থেকে চুলকানির মতো সমস্যা হচ্ছে এক নাগাড়ে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে।
মুখের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশ হল চোখ। তাই সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। বর্তমান জীবনযাত্রায় যাঁরা অফিসে কাজ করেন তাঁদের চোখ সংক্রান্ত সমস্যা লেগেই রয়েছে। এই যেমন- চুলকানি, ব্যথা, ফোলাভাব, চোখে জল বা চোখ শুকিয়ে যাওয়া। চোখের তলায় কালিও পড়ে অনেকের। এই ধরনের সমস্যা হলে শুরুতেই জীবনযাপন পরিবর্তন করতে হবে। কারণ চোখের এই সমস্যাগুলিকে উপেক্ষা করলে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে। চোখ জল না থাকলে শুষ্কতা বেড়ে যায়। সময়মতো চিকিৎসা না করালে কর্নিয়ার অসুখ ও সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এ থেকে মুক্তি পেতে যা করবেন-
আরও পড়ুন- হার্টের অসুখের এই ৪ লক্ষণ দেখা দেয় চোখেই, বুকে ব্যথার আগেই জানুন
চোখে শুষ্কতা কেন?
বার্ধক্য, চোখের অ্যালার্জি, আর্থ্রাইটিস, থাইরয়েড ডিজঅর্ডার বা ভিটামিন এ-এর অভাব তো রয়েইছে দীর্ঘক্ষণ ইলেকট্রনিক স্ক্রিনের সামনে থাকলেও নষ্ট হতে পারে চোখ।
চোখের সমস্যার কারণ
অস্বাস্থ্যকর খাদ্য
দীর্ঘ সময় ধরে ইলেকট্রকিন স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব
নোংরা হাতে চোখ স্পর্শ করা
দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতা
মানসিক বা কাজের চাপ
ওষুধের অত্যধিক ব্যবহার
ধুলোময় পরিবেশে থাকা
কম জল খাওয়া
রোদে বেশি সময় কাটানো
খুব বেশি টিভি দেখা এবং গভীর রাতে জেগে থাকা
কাদের বেশি সমস্যা
শুষ্ক চোখের সমস্যা পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের বেশি হয়। এটি হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে হয়। বিশেষ করে নারীদের মেনোপজের সময় এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
কীভাবে প্রতিকার
চোখের গরম সেঁক- একটি পরিষ্কার কাপড় গরম জলে ডুবিয়ে পাঁচ মিনিটের জন্য চোখে রেখে সেঁক দিন। এই প্রতিকার চোখের লালভাব এবং চুলকানি দূর করতেও সক্ষম।
বারবার পলক ফেলা- কম্পিউটারের সামনে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবেন না। বারবার চোখের পলক ফেলুন।
পুষ্টিকর খাবার- ডায়েটে ফ্ল্যাক্সসিড, আখরোট, বাদাম এবং মাছ যোগ করুন, যাতে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। এই উপাদানগুলো শুষ্ক চোখ সারাতে সাহায্য করে।
গোলাপ জল- গোলাপ জলে রয়েছে ভিটামিন এ। এতে চোখের উজ্জ্বলতা বজায় থাকে। তুলোর সাহায্যে চোখের পাতায় গোলাপ জল লাগালে চোখের শুষ্কতা দূর হয়।
জলের ঝাপটা- কাজের ফাঁকে ফাঁকে দিন জলের ঝাপটা। টানা কাজ করবেন না।
অন্ধকারে স্ক্রিনে চোখ নয়- রাতে আলো নিভিয়ে মোবাইল বা ল্যাপটপ ঘাঁটবেন না। এতে চোখের ক্ষতি হয়। দরকার হলে আলো জ্বালিয়ে ল্যাপটপ বা মোবাইলে কাজ করুন।
ঘুমোনোর আগে বন্ধ মোবাইল- ঘুমোনোর অন্তত আধ ঘণ্টা আগে মোবাইল দেখা বন্ধ করুন। নইলে মাথা ধরা, অনিদ্রার মতো সমস্যা হতে পারে।