যেভাবে আমরা জেনারেল জি এবং জেনারেল আলফার মধ্যে পার্থক্য করতে শিখছিলাম, অন্য প্রজন্ম এসেছে। এই নতুন প্রজন্মের নাম 'জেনারেশন বিটা'। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে জন্ম নেওয়া শিশুরা হবে 'জেনারেশন বিটা'। সাধারণত যে কোনও প্রজন্মের নাম নির্ধারণ করা হয় সেই সময়ের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক ঘটনার ভিত্তিতে। একটি প্রজন্মের সূচনা এবং সমাপ্তি নির্ধারিত হয় সেই সময়ের কোনও বড় ঘটনার (যুদ্ধ, অর্থনৈতিক বৃদ্ধি বা কোনও বড় প্রযুক্তিগত পরিবর্তন) ভিত্তিতে। এই প্রজন্মগুলি সাধারণত ১৫-২০ বছর ধরে স্থায়ী হয়। তো চলুন জেনে নেই প্রজন্মের নাম এবং তাদের পেছনের গল্প।
দ্য গ্রেটেস্ট জেনারেশন (জিআই জেনারেশন): ১৯০১-১৯২৭-র মধ্যে জন্ম নেওয়া প্রজন্মকে দ্য গ্রেটেস্ট জেনারেশন বলা হয়। এই প্রজন্মের বেশিরভাগ মানুষই মহামন্দায় ভুগছিলেন। এই সময়ে জন্মগ্রহণকারী বেশিরভাগ শিশু সেনা হয়েছিল এবং দেশ রক্ষার জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। এই প্রজন্মের তাদের কাজের প্রতি অনেক বেশি মনোযোগ ছিল, যা তাদের পরিচয়ে পরিণত হয়েছিল। যে অভিজ্ঞতাই থাকুক না কেন, পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তারা উত্তরাধিকার হিসেবে সবটাই তুলে দিয়েছিল।
দ্য সাইলেন্ট জেনারেশন: ১৯২৮-১৯৪৫ গ্রেট ডিপ্রেশন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে এই প্রজন্মটি নীরব প্রজন্ম নামে পরিচিত। এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ছিল পরিশ্রমী ও স্বাবলম্বী।
বেবি বুমার জেনারেশন: ১৯৪৬-১৯৬৪ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে জনসংখ্যার ব্যাপক বৃদ্ধির কারণে এই প্রজন্মের নামকরণ করা হয়েছিল বেবি বুমারস। এই প্রজন্ম আধুনিকতা গ্রহণ করেছে। বেবি বুমার প্রজন্মের লোকেরা তাদের সন্তানদেরকে একটি নতুন উপায়ে বড় করেছে। প্রযুক্তি তাদের জন্য নতুন ছিল।
জেনারেশন এক্স: ১৯৬৫-১৯৮০ প্রযুক্তি জেনারেশন এক্স-এর জন্যও নতুন ছিল। এই যুগে ইন্টারনেট এবং ভিডিও গেমের শুরু। এই প্রজন্মের মানুষ দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে বেড়ে উঠেছে। এ প্রজন্মের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
জেনারেশন ওয়াই: ১৯৮১-১৯৯৬-র মধ্যে জন্ম নেওয়া মানুষরা জেনারেশন ওয়াই হিসাবে পরিচিত। এই প্রজন্মের লোকেরা সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন দেখেছে এবং শিখেছে। এই প্রজন্মের মানুষ প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেদের আপডেট করেছে।
জেনারেশন জেড: ১৯৯৭-২০০৯ এই প্রজন্ম জন্মের পরপরই ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মতো প্ল্যাটফর্ম পেয়েছে। ডিজিটাল যুগে বেড়ে ওঠা এই প্রজন্ম স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট ছাড়া বাঁচার কথা কল্পনাও করতে পারে না। ডিজিটাল যুগে কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে অর্থ উপার্জন করতে হয় তা এই প্রজন্ম খুব ভাল করেই জানে।
জেনারেশন আলফা: ২০১০-২০২৪ এটিই প্রথম প্রজন্ম যাদের জন্মের আগেও সোশ্যাল মিডিয়া এবং ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্ম ছিল। এটি সর্বকনিষ্ঠ নতুন প্রজন্ম। এই প্রজন্মের শিশুদের বাবা-মায়েরা বড় হয়েছেন ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করেই।
জেনারেশন বিটা: ২০২৫-২০৩৯ জেনারেশন বিটা পিরিয়ড ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে। ২০২৫ সালে যেসব শিশুর জন্ম হবে তাদের বলা হবে 'বেটা কিডস'। এই শিশুরা এমন একটি পৃথিবীতে বড় হবে যেখানে প্রযুক্তি হবে জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) জেনারেশন বিটার জীবনে আরও প্রভাব ফেলবে।