
শীতের মরসুম এলেই মানুষের স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে। বেশির ভাগ মানুষকেই সর্দি-কাশির সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়। শীত এলেই অসুস্থ হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া। ব্যস্ত জীবনযাপনের কারণে মানুষ তার শরীরের প্রতি প্রয়োজনীয় মনোযোগ দিতে পারছে না। এমন অবস্থায় একটু সময় নিয়ে প্রতিদিন হলুদ দুধ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আসুন আপনাদের জানান যাক হলুদ দুধ তৈরির সঠিক উপায়।
গোল্ডেন দুধ নামে পরিচিত
হলুদ দুধ, যা সোনালি দুধ বা গোল্ডেন দুধ নামে পরিচিত, শরীরের জন্য নানাভাবে উপকারি। এমনকি করোনা মহামারির সময়েও হলুদের দুধ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছিল, যা অনেক দিক থেকেই সত্য। হলুদের দুধকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্যও ওষুধ বলা হয়।
শরীর সুস্থ রাখে
হলুদের দুধ আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন এটি খেলে অনেক রোগ থেকে দূরে থাকা যায়। এটি কেবল শরীরকে রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি দেয় না, এটি শীতের সেরা পানীয়ও।
করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি
সব দেশের গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো খুবই জরুরি। কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিরা যখন মহামারিতে আক্রান্ত হয়, তখন তাদের শরীর দ্রুত রিকোভারি করতে পারে না এবং অন্যান্য অনেক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হলুদের দুধ একটি সহজ ও কার্যকরী সমাধান।
হলুদের দুধ তৈরি করার সময় এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন
সাধারণত লোকেরা দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে হলুদ দুধ তৈরি করে পান করেন। এই প্রতিকারটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও কার্যকর, তবে এটি যদি আরও ভাল উপায়ে তৈরি করা হয় তবে আরও উপকারি প্রমাণিত হবে।
হলুদ দুধে গোলমরিচ যোগ করতে ভুলবেন না
হলুদের দুধ তৈরি করার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। সঠিক পদ্ধতিতে এটি তৈরি করলে সম্পূর্ণ উপকার পাওয়া যাবে যা শরীরে আরও শক্তি যোগাবে। যখনই আপনি হলুদ দুধ তৈরি করবেন, এতে গোলমরিচ দিতে ভুলবেন না। গোলমরিচ না যোগ করলে এর পূর্ণ উপকার পাওয়া যায় না।
এগুলো গোলমরিচ যোগ করার উপকারিতা
হলুদে রয়েছে কারকিউমিন। পিপারিন অর্থাৎ গোলমরিচের সাথে গ্রহণ করলেই মানবদেহ তা কাজে লাগাতে পারে। গোলমরিচ এবং হলুদের কম্বিনেশেনর সাপ্লিমেন্টারি বাজারে সহজেই পাওয়া যায়।
এভাবে হলুদের দুধ তৈরি করুন
হলুদের দুধ তৈরি করতে আধা কাপ হালকা গরম দুধের মধ্যে এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং এক চিমটি গোলমরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে নিতে হবে। আপনি যদি মিষ্টি যোগ না করে এটি পান করতে পারেন তবে তা হবে সেরা উপায়।
মিষ্টির জন্য গুড় ব্যবহার করা যেতে পারে
আপনি যদি মিষ্টি ছাড়া হলুদ দুধ পান করতে না পারেন তবে আপনি এতে গুড় যোগ করতে পারেন। অথবা এর সাথে চিনিও মেশাতে পারেন। চেষ্টা এমন হওয়া উচিত যে হলুদের দুধে মিষ্টির জন্য শুধুমাত্র গুড় ব্যবহার করা। কারণ শীতকালে গুড় খাওয়াও উপকারি বলে মনে করা হয়।
কাঁচা হলুদের প্রভাব বেশি
যদি আপনি হলুদ দুধে কাঁচা হলুদ ব্যবহার করেন তবে এটি আরও কার্যকর হবে। গ্যাসে দুধ গরম করে তাতে আদার মতো ঘষে নিয়ে হলুদ দিন। আপনি যদি স্বাদ পছন্দ না করেন তবুও এটি প্রতিদিন খেতে থাকুন, সময়ের সাথে সাথে এটির স্বাদ ভাল লাগতে শুরু করবে এবং আপনি এটিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠবেন। স্বাদের জন্য আপনি এতে এলাচও যোগ করতে পারেন।
হলুদ দুধের উপকারিতা
হলুদের দুধ খেলে শরীরে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন এ, বি২, বি১২, ভিটামিন ডি, জিঙ্ক, পটাসিয়াম, ফসফরাস এবং অনেক প্রয়োজনীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট পাওয়া যায়। হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যের কারণে শরীরের রিকভারি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। এমনকি কিছু রিপোর্টে হলুদে ক্যান্সার প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে বলেও জানা গেছে। এর পাশাপাশি এটি আর্থ্রাইটিসের রোগীদেরও উপশম দেয়।