জল খাওয়া শরীর ও স্বাস্থ্যের পক্ষে কতটা ভাল সেটা বারে বারে চিকিৎসকেরা বলে থাকেন। কিডনিতে স্টোন, প্রেসার কমে যাওয়া, ডিহাইড্রেশন থেকে শুরু করে নাক দিয়ে রক্ত পড়া জল কম খেলে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায়। তাই বিশেষজ্ঞ থেকে বাবা-মা, চিকিৎসক সকলেই বারবার জল খাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু প্রতিদিন কতটুকু জল খাওয়া প্রয়োজন, সেটা অনেকেই বুঝতে পারেন না। আবার অনেকে অবেক ধরনের মত দিয়ে থাকেন। বিশেষজ্ঞরা কিন্তু বলছেন একদমই না। আবহাওয়া, শারীরিক পরিশ্রমের মাত্রা, মাতৃত্ব বা ওজন এই সব কিছুর উপর কিন্তু নির্ভর করে একজন মানুষের প্রতিদিন কতটা জল পান করা উচিত।
সদ্যোজাত ও প্রেগন্যান্ট মহিলারা কতটুকু জল খাবেন
বিশেষজ্ঞদের মতে সদ্যজাত একটি শিশুর ৬ মাস অবধি ০.৭ লিটার জলের প্রয়োজন। যা তারা সাধারণত মায়ের বুকের দুধ থেকেই পেয়ে যায়। তাই আলাদা করে জলের প্রয়োজন হয় না। এ কারণেই ল্যাকটেটিং মায়েদের (স্তন্যদানকারী মায়েরা) নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে অন্তত ২ গ্লাস (আধা লিটার) বেশি জল খাওয়া প্রয়োজন।
শিশুদের কতটা জল খাওয়া দরকার
এছাড়াও ১ থেকে ৩ বছর বয়সী শিশুদের অন্তত ১ লিটার বা দিনে ৪ গ্লাস জল খাওয়া প্রয়োজন। ৪ থেকে ৮ বছর বয়সী শিশুদের ১.২ লিটার বা ৫ গ্লাস জলের প্রয়োজন। আবার ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সী কোনও বাচ্চা মেয়ের ১.৪ লিটার এবং ছেলের ১.৬ লিটার জল খাওয়া উচিত।
প্রাপ্তবয়স্করা কতটা জল খাবেন
১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোরীদের ১.৬ লিটার ও কিশোরদের ১.৯ লিটার জল খাওয়া উচিত। প্রতিদিন একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর গড়ে ৮ থেকে ৯ গ্লাস এবং পুরুষের ১০ থেকে ১২ গ্লাস জল খাওয়া উচিত বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
জল পান করার সহজ উপায়
এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন কতটা জল পান করা উচিত তা জানার সহজ উপায় আছে একটি। আপনার ওজন যত পাউন্ড, তা ২ দিয়ে ভাগ করলে যা হবে, আপনার তত আউন্স জল খাওয়া প্রয়োজন। ধরুন, আপনার ওজন ৭০ কেজি বা ১৫৪ পাউন্ড। তাহলে আপনাকে ৭৭ আউন্স বা ২.৩ লিটার প্রায় ১০ গ্লাস জল খেতে হবে। যদিও যাঁদের অত্যন্ত বেশি তাঁদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়। আবার অনেকে ক্ষেত্রে কিডনির রোগ থাকলে বা অনান্য নানা রোগের ক্ষেত্রেও মেপে জল খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। সেই রকম কোনও সমস্যা শরীরে থেকে থাকলে একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভাল।