নলেন গুড় ছাড়া জমে শীতকাল? ঠান্ডায় বাঙালির অন্যতম প্রিয় খাবার নলেন গুড়। রাতে নলেন গুড়ের রুটি হোক বা রসগোল্লা, পায়েস, সন্দেশ- আয়েশ করে খাওয়ার মজাই আলাদা। শীতের হাত ধরেই আসে নলেন গুড়। তবে সময়ের সঙ্গে কমে গিয়েছে রসের জোগান। চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। এই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ভেজাল গুড়ের কারবার শুরু করে দিয়েছেন। তাই বাজারে ছেয়ে গিয়েছে হাইড্রোজ, ফটকিরি, ক্যালশিয়াম-বাই-কার্বনেট দিয়ে তৈরি প্রোপিলিং গ্লাইকল নামে কৃত্রিম রাসায়নিক। যা গুড়ের মতো দেখতে। গন্ধও একই রকম। ফলে আসল ও নকল চেনা দুষ্কর হয়ে উঠেছে। কীভাবে চিনবেন আসল নলেন গুড়?
নলেন গুড়ের একাধিক উপকারিতাও রয়েছে। যেমন নলেন গুড় হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে পেট সাফ রাখে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় কাজে দেয়। গুড়ের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন। ফলে রক্তাল্পতায় ভুগলে রোজ সকালে নলেনগুড় খেতে পারেন। লিভার থেকে টক্সিন দূর করতেও কার্যকর নলেন গুড়। সর্দি-কাশির সমস্যা বা মাইগ্রেনের প্রশমনও করে। মহিলাদের পিরিয়ডে মুড সুইং হয়। গুড় খেলে মেজাজ ভাল থাকে। জিঙ্ক ও সেলেনিয়াম রয়েছে গুড়ে। যা রোগ প্রতিরোধে কার্যকর। কীভাবে খাঁটি গুড় চিনবেন-
কেনার সময় চেখে নিন- খেজুর গুড় কেনার সময় একটু জিভে নিয়ে চেখে নিন। যদি নোনতা স্বাদ পাওয়া যায় তাহলে আর কিনে লাভ নেই। নলেন গুড় মিষ্টিই হয়, নোনতা নয়। আসলে নোনতা স্বাদ হয় ফটকিরি থাকলে।
আলতো চাপ ভাঙে- আসল গুড় ভঙ্গুর হয়, শক্ত হয় না। গুড় কেনার সময় আলতো চাপ দিন আঙুলের। ভেঙে গেলে বুঝে যাবে এটা খাঁটি। আর শক্ত হলে রাসায়ানিক।
রং দেখুন- গুড়ের দানা স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ হলে কিনবেন না। কারণ ওতে চিনি মেশানো আছে। সাধারণত গুড়ের রং হয় গাঢ় বাদামি। আর বাদামি না হয়ে লাল বা খয়েরি হলে বুঝবেন রাসায়নিক মেশানো রয়েছে। চকচক করলেও কিনবেন না। খাঁটি গুড় চকচক করে না। আসলে রাসায়নিক দিয়ে এখন গুড় পলিশিংও করা হয়।
গন্ধে বিভ্রান্ত হবেন না- গুড় কেনার সময় গন্ধে বিভ্রান্ত হবেন না। ভাবলেন, সুবাস রয়েছে মানে খাঁটি গুড়। এখন কিন্তু নানা রাসায়নিক মিশিয়ে একই গন্ধ আনা সম্ভব হয়।
জলে পরীক্ষা-খাঁটি গুড়ে রাসায়নিক থাকে না। ভেজাল গুড়ে চিনি মেশানো থাকে। ফলে গুড় কিনে জলে ফেলুন। ডুবে গেলে বুঝবেন এতে চিনি রয়েছে। ভাসতে থাকলে বুঝবেন খাঁটি।
আরও পড়ুন- ওটস না ডালিয়া? কোনটা খেলে বেশি পুষ্টি, তাড়াতাড়ি কমে ওজন