রথের মেলা মানেই বৃষ্টি। জল-কাদা ঘেঁটে, ভীড় ঠেলে রথ দেখা, দেব দর্শন। আর রথের মেলা মানেই পাপড়, জিলিপি মাস্ট! এই দু’টো জিনিস না কিনলে যেন রথের মেলার আমেজটাই আসে না! ছেলেবেলা থেকেই ‘রথ দেখা, কলা বেচা’র কথা শুনে থাকলেও কলা বেচতে হয়নি কখনওই। বরং রথের মেলায় গিয়ে মাথায়, পিঠে দু’-চারটে কলা ‘সপাটে’ এসে পড়েছে। এগুলো আসলে মেলায় আসা দর্শনার্থীদের রথ লক্ষ্য করে ছোঁড়া (লক্ষ্যভ্রষ্ট) কলা, যেগুলো যথাস্থানে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়ে ভীড়ের মধ্যে এলোপাথাড়ি আঘাত হেনে খান্ত হয়।
তবে রথের মেলা থেকে পাপড়, জিলিপি না কিনলে দিনটাই মাটি! রথের মেলার পাপড়, জিলিপির স্বাদই আলাদা। এর সঙ্গে অনেকেরই ছোটবেলার স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। সেই স্মৃতির টানেই পাপড়, জিলিপি কিনতে বড় বা বুড়ো হয়েও বাড়ির কচিকাঁচাদের সঙ্গে নিয়ে রথের মেলায় আজও ঢুঁ মারেন অনেকে।
ছেলেবেলার মতো এখন আর ২ টাকায় ঠোঙা ভরা জিলিপি বা ইয়া বড় বড় থালার মতো পাঁপড় পাওয়া যায় না। এখন এক ঠোঙা জিলিপি বা পূর্ণিমার চাঁদের মতো পাঁপড় পাওয়া গেলেও তার দাম এই মূল্যবৃদ্ধির বাজারে বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে।
জানেন এ বছরের রথের মেলায় বিক্রি হওয়া পাপড়, জিলিপির দাম কত? শহর হোক বা শহরতলির মেলা— জিলিপি এখন বিকোচ্ছে ১৬০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ, মাঝারি মাপের এক ঠোঙা জিলিপি কিনতে প্রায় ৩০-৪০ টাকা খরচ পড়বে। অনেক জায়গায় আবার ২ টাকা পিস হিসাবেও জিলিপি বিক্রি হচ্ছে।
আর ২ টাকায় ২ পিস পাঁপড় এখন স্বপ্নেরও অতীত! এ বছর মেলায় ৮ থেকে ১০ টাকা পিস হিসাবে বিক্রি হচ্ছে থালার মতো বড় মাপের পাঁপড়। কোথাও ছোট ছোট পাঁপড় ১০ টাকায় ২ পিস পাওয়া যাচ্ছে। সব মিলিয়ে ছেলেবেলার স্মৃতি জরানো হাতে গরম নোনতা-মিষ্টিও এখন মুদ্রাস্ফীতির ঠেলায় মহার্ঘ্য হয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও কেনা-বেচায় ভাটা পড়েনি। মেলায় ক্রেতা-বিক্রেতা সবার মুখেই চওড়া হাসি। কারণ, এবার কেনা-বেচায় তেমন জল ঢালেনি বৃষ্টি!