scorecardresearch
 

মায়ের কথা কেন শোনে না টিনএজাররা? জানালেন বিজ্ঞানীরা

এমন অনেক প্রমাণ রয়েছে যে ছোট বাচ্চাদের কাছে, মায়ের কণ্ঠস্বর তাদের স্বাস্থ্য এবং বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি তাদের মানসিক চাপের মাত্রা, তাদের সামাজিক বন্ধন এবং তাদের কথা বলার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। তবে একটা সময় আসে যখন শিশুরা তাদের মা ছাড়া অন্যদের কথা শুনতে বেশি পছন্দ করে। 

Advertisement
প্রতীকী ছবি প্রতীকী ছবি
হাইলাইটস
  • অনেক সময়ই মায়েদের কথা শোনে না টিনএজাররা
  • স্বভাবে দেখা যায় পরিবর্তন
  • গবেষণায় এর কারণ জানলেন বিজ্ঞানীরা

মায়েরা প্রায়শই বলেন যে সন্তানরা তাঁদের কথা শুনছে না। বিশেষত টিনএজে বা বয়ঃসন্ধিকালে (Teenager) এই সংস্যা বেশি করে দেখা যায়। কিন্তু এই বিষয়ে পরোপুরি ছেলেমেয়েদের দোষ দেওয়া যায় না। কারণ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিছুকিছু আওয়াজ বা শব্দের প্রতি মানুষের প্রতিক্রিয়ায় পরিবর্তন আসে। আর কেশি কারণেই টিনএজজারদের কাছে মায়ের আওয়াজের গুরুত্ব কম লাগতে থাকে।  

Journal of Neuroscience-এ প্রকাশিত একটি গবেষণার রিপোর্ট অনুসারে, যখন ১২ বছর বয়সী ও তার চেয়ে কম বয়সী শিশুদের মস্তিষ্ক স্ক্যান করা হয়, তখন তারা তাদের মায়ের কণ্ঠে বিস্ফোরক নিউরাল প্রতিক্রিয়া (Explosive Neural Response) দেয়, যা মস্তিষ্কের রিওয়ার্ড সেন্টার এবং Emotion-Processing Centers সক্রিয় করে তোলে। তবে ১৩তম জন্মদিন নাগাদ কখনও কখনও শিশুদের পরিবর্তন ঘটে। তখন মায়ের কণ্ঠস্বর শুনে সেই একইরকম স্নায়বিক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় না, যেমনটা ১২ বছরে হয়েছিল। পরিবর্তে, কিশোর-কিশোরীদের মস্তিষ্ক স্বাভাবিক শব্দে বেশি সাড়া দেয়।

কিশোর-কিশোরীরে জেনেবুঝে পরিবারকে অবহেলা করে না
এই পরিবর্তনগুলি এতটাই সুস্পষ্ট যে গবেষকরা শিশুদের মস্তিষ্ক কীভাবে তাদের মায়ের কণ্ঠ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে তার উপর ভিত্তি করে শিশুর বয়সও অনুমান করতে পারেন। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির  (Stanford University) মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ড্যানিয়েল আব্রামস বলেন, একটি শিশু যেমন তার মায়ের কণ্ঠ সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে, তেমনই একজন কিশোর বাকি শব্দ পছন্দ করে। তিনি আরও বলেন যে কিশোররা বুঝতে পারে না যে তারা এমন কিছু করছে। নিজেদেরকে তারা আগের মতোই অনুভব করে। তারা নিজেদের বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে চায়। কারণ তাদের মস্তিষ্ক ক্রমশ সংবেদনশীল হয়ে ওঠে এবং এই সমস্ত নতুন শব্দের প্রতি আকৃষ্ট হয়। গবেষকরা মনে করেন যে এটি কিশোর মস্তিষ্কের সামাজিক দক্ষতা বিকাশের লক্ষণ। অন্যভাবে বললে বলা যায়, একজন কিশোর ইচ্ছাকৃতভাবে তার পরিবারকে উপেক্ষা করে না, বরং তার মস্তিষ্ক যে সুস্থ উপায়ে পরিপক্ক হচ্ছে এটি তারই লক্ষণ।

Advertisement

শিশুদের কাছে মায়ের আওয়ার খুবই গুরুত্বপূর্ণ
এমন অনেক প্রমাণ রয়েছে যে ছোট বাচ্চাদের কাছে, মায়ের কণ্ঠস্বর তাদের স্বাস্থ্য এবং বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি তাদের মানসিক চাপের মাত্রা, তাদের সামাজিক বন্ধন এবং তাদের কথা বলার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। তবে একটা সময় আসে যখন শিশুরা তাদের মা ছাড়া অন্যদের কথা শুনতে বেশি পছন্দ করে। 

স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির নিউরোসায়েন্টিস্ট বিনোদ মেননের মতে, কিশোর-কিশোরীরা তাদের বাবা-মায়ের কথা না শুনে বিদ্রোহী স্বভাবের হয়ে যায়, কারণ তারা তাদের বাড়ির বাইরের শব্দের প্রতি বেশি মনোযোগ দিতে শুরু করে। এই গবেষণার ফলাফলে দেখা গিয়েছে যে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মায়ের কণ্ঠের প্রতি শিশুদের ফোকাস কমে, আর অন্য ধরণের কণ্ঠের প্রতি মনোযোগ বাড়ে।

আরও পড়ুনবলিউডের এই ৭ 'মা', জয় করেছেন দর্শক হৃদয়


 

Advertisement