কোনও জিনিস দেখলেই বায়না করে বাচ্চা! শিশুদের এমন স্বভাব নিয়ে কমবেশি সব মা-বাবাই চিন্তায় থাকেন। আসলে,বাবা-মা চান, সন্তানরা যেন ভাল মানুষ হয়। শুধুমাত্র সুশিক্ষা দিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ দিতে পারবেন না। এজন্য প্রয়োজন শিশুদের যথাযথ লালন-পালনও। তাই সন্তানের অতিরিক্ত বায়নাকেও নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। তাকে ছোট থেকে সঞ্চয় শেখান। কীভাবে সামলাবেন সন্তানের বায়নাক্কা?
-আপনার সন্তানের বয়স যদি ১০ বছরের কম হয়, তাহলে তাকে বেশি চাপ দেবেন না। কিন্তু শিশুর বয়স যদি ১০ বছরের ঊর্ধ্বে হয়, তাহলে ধীরে ধীরে তাকে সঞ্চয় সম্পর্কে সচেতন করুন।
আপনি সহজ কথায় বাচ্চাদের বিনিয়োগ সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারেন। বলুন, প্রতিদিন বা মাসে কী পরিমাণ খরচ হয় তার উপরে। সে বুঝতে পারবে মাসে ঠিক কত খরচ হচ্ছে মা-বাবার।
-সন্তানকে মাসের হাত খরচ দেওয়ার সময় জিজ্ঞেস করুন এই টাকায় কতটা সঞ্চয় করতে পারবে সে। সঞ্চয়ের লক্ষ্য বেঁধে দিলে সে নিজে থেকে টাকা বাঁচাতে শুরু করবে। বিনিয়োগের প্রতি ঝোঁক বাড়বে।
-শিশুকে সরাসরি বলবেন না যে এটা কিনবে না, বেড়াতে যাবে না, বাইরের জিনিস খাবে না। এতে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে।
-সন্তান বেশি খরচ করছে দেখলে মা-বাবারা দায়িত্ব নিন। তাঁকে এমন জিনিসের কথা বলুন যাতে খচ করলে সে লাভবান হবে। হতে পারে বই, পেন।
-এছাড়া পারিবারিক সঞ্চয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করতে পারেন। যেমন- আপনার কাছে গাড়ি নেই। আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে আপনি গাড়ি কেনার পরিকল্পনা করছেন। এজন্য সবাইকে একসঙ্গে সঞ্চয় করতে হবে। আপনার এই পরিকল্পনা শিশুকে সঞ্চয়ে উৎসাহিত করবে। তারা অযথা খরচ করার পরিবর্তে একটি গাড়ি কেনার জন্য অর্থ জমাবে।
-সন্তানকে কোনও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেটা রাখতে পারেননি। এবার তার হাতে তুলে দিলেন উপহার। সন্তানের মনে ধারণা হবে, ও যখন যা চাইবে তাই পাবে। এটা করবেন না। উপহার দেবেন। তবে সেটা ঘনঘন বা কোনও কিছুর বিকল্প হিসেবে নয়।
-ছোট থেকে ভাগ করার মানসিকতা গড়ে তুলুন। ও যেন বন্ধুদের সঙ্গে খেলনা শেয়ার করে। খাবার ভাগ করে খাওয়া শেখান।
-সন্তান কোনও জিনিসের প্রতি আকৃষ্ট হলে হঠাৎ করে চাপ দেবেন না। ও ভিডিওগেম খেললে হাত থেকে কেড়ে নেবেন না। আরও জেদি হয়ে উঠবে। হাতে গল্পের বই তুলে দিন। ওকে নিয়ে মাঠে যান। ওর সঙ্গে সময় কাটান।
-শপিংমল বা মেলায় গেলে শিশুরা নানা জিনিসের বায়না করে। সঙ্গে সঙ্গে কিনে দেবেন না। ওর মনোযোগ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিন। ওকে বোঝান, এটা অন্যদিন কিনে দেবেন।
-শিশুকে ইতিবাচক উত্তর দিন। যেমন হোমওয়ার্ক না করলে বেড়াতে নিয়ে যাব না। এটার বদলে বলুন- হোমওয়ার্ক করলেই বেড়াতে নিয়ে যাব।
-মোবাইল খেলার জিনিস নয়। একে স্মার্টফোন হাতে দেবেন না। স্মার্টফোনের নেশা তৈরি হলে শিশুমস্তিষ্কে কুপ্রভাব পড়ে।
আরও পড়ুন- ফিক্সড ডিপোজিটের চেয়ে বেশি সুদ এই ৩ ব্যাঙ্কের সেভিংস অ্যাকাউন্টেই