কোলেস্টরল (Cholesterol) আমাদের রক্তের (Blood) সঙ্গে মিশে থাকে এবং কিছু কাজের জন্য শরীরে এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যদিও কোলেস্টেরল আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এর লেভেল যদি বেশি হয়ে যায়, তাহলে এটি মারাত্মক হয়ে যায়। এর একটি কারণ হলো এটি ব্লাডের কোলেস্টেরল লেভেল বেশি হলে, রক্ত কোশিকা কুঁচকে ছোট হতে শুরু করে। যখনই কোলেস্টেরল ভাঙে তখন এটিকে ক্লটিং এর সমস্যার মুখে পড়তে হয়। যাতে হার্ট অ্যাটাক এবং চোখের সমস্যা মুখে পড়তে হয়।
আরও পড়ুনঃ Durga Puja 2022: দুর্গাপুজোয় ৫ জিনিস ঘরে আনুন, অর্থের অভাব হবে না
অন্য রোগের মতো কোলেস্টেরলের কোনও লক্ষণ নেই
কোলেস্টরলকে, এ কারণে ভয়ঙ্কর বলে মনে করা হয়, কারণ অন্য রোগের মতো এর কোনও লক্ষণ শরীরে বোঝা যায় না।যখন শরীরে কোলেস্টেরল লেভেল লিমিটের বেশি হয়ে যায়, তখন এটি কিছু কিছু লক্ষণ দেখায়। এই পরিস্থিতিতে ব্লাড কোলেস্টরল লেভেলকে মনিটর করার সবচেয়ে ভালো উপায় হল আপনি এটি রেগুলার চেকআপ করান। তাছাড়া আর কোনও বিকল্প উপায় নেই। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য অনুযায়ী কোন ব্যক্তি ২০ বছর বয়সে নিজের ব্লাড কোলেস্টেরল লেভেল চেক করতে শুরু করা উচিত।
কবে থেকে কোলেস্টেরল চেক করানো উচিত?
মুম্বইয়ের এক সিনিয়র কার্ডিওলজিস্ট এর বক্তব্য যে, ২০ বছর বয়স থেকে নিয়মিত রূপে কোলেস্টেরল চেক করা উচিত। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে বাচ্চাদের মধ্যে ৯ বছরে বয়সে সবচেয়ে আগে লিপিড লেভেল চেক করানো উচিত এবং ১৭ থেকে ২০ বছর বয়সের মধ্যে লিপিড লেভেল চেক করা উচিত। আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এর বক্তব্য অনুযায়ী বাচ্চাদেরও কোলেস্টেরল লেভেল চেক করা উচিত।
দেশে কোলেস্ট্রল খুব দ্রুত বাড়ছে
এই ঘটনা দেখে বলা হয়েছে যে আপনি কোলেস্টেরল লেভেল চেক করার বিষয়টিকে রোজকার নিয়মে পরিণত করে ফেলুন। ভারতে কোলেস্টেরলের কথা বলতে গেলে এখানে শহরে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ লোক এবং গ্রামে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ লোক কোলেস্টেরলের সমস্যার সঙ্গে লড়াই করছেন। ২০১৭-র একটি স্টাডি অনুযায়ী কুড়ি বছর বয়স পর্যন্ত শহরে জনসংখ্যার মধ্যে ফুল কোলেস্টরল এবং ট্রাই গ্লিসারাইড এর লেভেলের বৃদ্ধির হয়েছে।
সব মিলিয়ে এক্সপার্টরা পরামর্শ দিচ্ছেন যে, ২০ বছরের বেশি বয়সে ব্যক্তিদের প্রত্যেক পাঁচ বছরে নিজেদের কোলেস্টেরল টেস্ট করানো উচিত এবং এরপরে টেস্টের ফ্রিকোয়েন্সি বানিয়ে দিতে হবে।
বয়সের হিসেবে সঠিক কোলেস্টেরল লেভেল কী?
১৯ বছরের বেশি বয়সের লোকেদের মধ্যে কোলেস্টেরল লেভেল ১৭০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের কম হওয়া উচিত। অ্যাডাল্টদের জন্য কোলেস্টেরলের নরমাল লেভেল ২০০-র কম হওয়া উচিত। যে সমস্ত লোকেদের কোলেস্টেরল ২০০ থেকে ২৩৯ এর মধ্যে থাকে, তারা বর্ডার লাইনে রয়েছে বলে মনে করা হয়। তাই এই পরিস্থিতিতে জরুরি হল যে আপনি কোলেস্টেরল লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
পারিবারিক হিস্ট্রি থাকলে সাবধান
হাই কোলেস্ট্রলের একটি মুখ্য কারণ ফ্যামিলি হিস্ট্রি। হাই কোলেস্ট্রল জেনেটিক্স এর একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যে সমস্ত লোকেরা হাই কোলেস্ট্রল এর হিস্ট্রি থাকে তাদের শুরুতে জীবনে বিভিন্ন রকম সমস্যার সামনে পড়তে হয়। যদি আপনাকে আপনার পরিবারের কারও হাই কোলেস্টেরলের সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে এই সমস্যা আপনার মধ্যেও প্রবাহিত হওয়ার সুযোগ বেশি থাকে।
এটি পারিবারিক ফ্যামিলিয়াল হাইপার কোলেস্টেরলমিয়া রূপে পরিচিত। এই পরিস্থিতিতে আপনার রক্তের বাহিকাতে কোলেস্টেরল জমার রিস্ক বেশি থাকে। যার কারণে ব্যক্তি অনেক কম বয়সে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যে সমস্ত লোকেদের বাড়ির কেউ হৃদরোগে আক্রান্তের লড়াই করছেন বা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের নিজেদের ব্লাড কোলেস্টরল লেভেল নিয়ে বেশি সাবধান হওয়া উচিত।
রিপোর্ট কিভাবে বুঝবেন?
কোলেস্টেরলের দু রকমের হয়। এইচডিএল (HDL)এবং এলডিএল (LDL)। এইচডিএল কোলেস্টেরল, গুড কোলেস্টেরল (Good Cholesterol) বলা হয় এবং শরীরের জন্য অত্যন্ত ভালো। সেখানে এলডিএল কোলেস্টেরল ফ্যাট বা খারাপ কোলেস্টেরল (Bad Cholesterol) বলে মনে করা হয়। এছাড়া ট্রাই গ্লিসারাইড অত্যন্ত খারাপ বলে মনে করা হয়। যার সোজা সম্পর্ক হার্ট ডিজিজ এর সঙ্গে থাকে।