জীবনে বেড়েছে ব্যস্ততা। প্রতি মাসে অফিসের টার্গেট। টার্গেটের জন্য দিনরাত এক করে কাজ করেও কিছুতেই হচ্ছে না! তার উপরে পরিবারের প্রতি দায়িত্ব। ফলে কোনও মানুষই আর সুখী নেই। বিশ্বজুড়ে বাড়ছে অসুখী মানুষের সংস্থা। অতিরিক্ত চাপ থেকে মনে আসছে নেতিবাচকতা। ঘাটতি হচ্ছে আত্মবিশ্বাসের। রাগ, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ আরও বাড়ছে। নেতিবাচক অনুভূতি ঘিরে ধরছে সারাক্ষণ। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই মানসিক চাপ মানুষ বুঝতে পারেন না। অথচ এই চাপ থেকে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, হৃদরোগ, সুগার এমনকি হার্ট, স্ট্রোকের মতো বিপদ হতে পারে। তাই সময় থাকতে কয়েকটি লক্ষণ দেখে জেনে নিতে হবে, আপনি অসুখী কিনা?
কনসাল্টিং সংস্থা হ্যাপিপ্লাস একচি 'দ্য স্টেট অফ হ্যাপিনেস ২০২৩'-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতীয়দের মধ্যে নেতিবাচকতা এবং মানসিক অসুখ ক্রমবর্ধমান। আর্থিক সমস্যা, কর্মক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান চাপ, সামাজিক অবস্থান, একাকীত্ব, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া এই মানসিক চাপের কারণ। চাপ বাড়লে মানুষ কেবল শারীরিকভাবে দুর্বলই হন না, মানসিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হন। মানসিক চাপের মধ্যে কোনও ব্যক্তি ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি হয়।
নিয়মিত মানসিক চাপে থাকলে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা এবং থাইরয়েডের মতো রোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী অসুখ হতে পারে। কখনও কখনও চাপ শারীরিক এবং মানসিকভাবে অসুস্থ করতে পারে। তাই স্ট্রেস এমন একটি রোগ যার লক্ষণ শরীরে দেখা দিতে শুরু করলেও তা শনাক্ত করা প্রয়োজন। চলুন জেনে নিই কীভাবে মানসিক চাপের লক্ষণগুলি চেনা যায়-
আরও পড়ুন- বিয়ে করা কি খুব জরুরি? আজীবন সিঙ্গল থাকা যায় না? যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
ক্রমাগত চুল পড়া- মানুষের মন অসুখী হলে ক্রমাগত চুল পড়তে থাকে। মানসিক চাপ শরীরে কর্টিসল তৈরি করে। যা চুলের বৃদ্ধির নিয়মিত চক্রকে প্রভাবিত করে। চুলের ফলিকলগুলি বাড়ে না। ফলে চুলের ক্ষতি হতে পারে।
অতিরিক্ত ঘাম- শরীর স্বাভাবিকভাবে ঘামের মাধ্যমে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু অতিরিক্ত ঘাম মানসিক চাপ বা উদ্বেগের লক্ষণ হতে পারে। মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে মুখ, পা বা হাতে ঘাম হতে থাকে। মানুষ চাপের মধ্যে থাকলে শরীর হরমোন নিঃসরণ করে যা তাপমাত্রা, রক্তচাপ এবং নাড়ি বাড়ায়। ফলে ঘাম বেশি হয়।
হজমের সমস্যা- টেনশনে মানুষের মেজাজ গরম থাকে। সবসময় তিরিক্ষি ভাব। সাধারণ বিষয় নিয়েও লড়াই করার প্রবণতা তৈরি হয়। মানসিক চাপ হজমশক্তিকে দুর্বল করে দেয়। মানসিক চাপের কারণে খাবার হজমে সমস্যা হতে পারে। পেট ফোলা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, বুকজ্বালা, রিফ্লাক্স, গ্যাসের মতো হজমের সমস্যার জন্য দায়ী মানসিক চাপ।
আরও পড়ুন- পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি থেকে ঠান্ডা মাথা- রোজ রাতে নাভিতে দিন ৪ তেল
মানসিক চাপে ঘুমহীন রাত- অনেকদিন ধরে মানসিক চাপ থাকলে তা দীর্ঘস্থায়ী স্ট্রেস হয়ে যায়। দীর্ঘস্থায়ী চাপে রাতে পর্যাপ্ত ঘুম হয় না। ঘুমের অভাব গুরুতর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা তৈরি করে। দীর্ঘক্ষণ ঘুম না হলে বুঝতে হবে মানসিক চাপ জাঁকিয়ে বসেছে।
স্ট্রেসের কারণে বুকে ব্যথা- বুকে ব্যথাও মানসিক চাপের কারণ হতে পারে। মানসিক চাপ বাড়লে ভয় ভয় লাগে। বুক ধড়ফড় করে ওঠে। সাধারণ ঘটনাতেও বুকের উত্তেজনা হতে থাকে।