আপনি লক্ষ্য করে থাকবেন যে যখন কোনও ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে ডাক্তারের কাছে যান তখন ডাক্তার প্রথমেই তার জিভ দেখানোর জন্য বলে। এটা বলার কারণ হল জিভের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আপনার স্বাস্থ্য। আর এই জিভ আপনার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অনেক বিষয়েই বলতে পারে। চিকিৎসকরা শুধুমাত্র জিভ দেখেই বলে দেন যে রোগীর কী অসুস্থতা রয়েছে। আসলে জিভের রঙের পরিবর্তনের কারণেই চিকিৎসকরা আভাস পেয়ে যান যে ব্যক্তির স্বাস্থ্য ঠিক আছে কিনা। শুধু তাই নয়, জিভের রং অনেক ধরনের রোগেরও সঙ্কেত দেয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক যে জিভ দেখে কোন কোন রোগের আভাস পাওয়া যায়।
স্বাস্থ্যকর জিভের রং কেমন হওয়া উচিত
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্যকর শরীরের জন্য জিভের রং গোলাপি হওয়া উচিত, যার ওপর হালকা সাদা পরত থাকবে। ব্যক্তির শরীরের অনুসারে জিভের রং হালকা গোলাপি বা গাঢ় গোলাপি হতে পারে। স্বাস্থ্যকর জিভে কোনও ধরনের দাগ-ছোপ থাকে না, এর সঙ্গে জিভ খুব নরম হয়ে থাকে।
জিভের ওপর সাদা রঙের ছোপ কিসের ইঙ্গিত
যদি আপনার জিভে সাদা রঙের ছোপ দেখতে পান তবে এটা ইস্ট ইনফেকশনের সঙ্কেত হতে পারে। এরকম সমস্যা শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এছাড়া জিভে সাদা রঙের ছোপ দেখা দিলে তা লিউকোপ্লাকিয়ার কারণ হতে পারে। লিউকোপ্লাকিয়া সাধারণত কোনও ভয়ানক রোগ নয়। তবে এটা কখনও কখনও গুরুতর হতে পারে। এটা ক্যানসারের সূচনাও হতে পারে।
জিভ যদি কালো হয়ে যায়
কালো রঙের জিভ শরীরের জন্য বিপদের ঘণ্টা হতে পারে। যদি জিভের রঙ কালো হতে শুরু করলে, সেটা কিন্তু গলায় ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস হওয়ার সঙ্কেত হতে পারে। কিছু ওষুধ খেলে তা কমে যেতে পারে। ডায়াবেটিসের রোগীদের জিভও কালো হয়ে যায়। এই রং ক্যানসার, আলসারের মতো জটিল গম্ভীর রোগের দিকে ইঙ্গিত দেয়। তাই যদি দেখেন আপনার জিভ কালো হতে শুরু করে তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
জিভে যদি মোটা পরত জমে
অনেক সময় রোগীদের জিভে এক মোটা পরত জমা হতে দেখা যায় আর সেখানে ছোট ছোট চুল দেখতে পাওয়া গেলে তা ব্ল্যাক হেয়ারি সিন্ড্রোমের সঙ্কেত হতে পারে। এটা এক ধরনের দুর্লভ পরিস্থিতি, যেখানে ত্বকে মৃত কোষগুলি জেগে ওঠে। তাই দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
জিভের রং নীল হলে
জিভের রং নীল বা বেগুনি হলে তা ঠোঁটের সঙ্গে যুক্ত রোগের দিকে ইশারা করে। ঠোঁটের কাজ হল শরীরে রক্ত সঞ্চালন করা। তাই যখন কোনও ব্যক্তির হৃদযন্ত্রে সঠিকভাবে রক্ত পৌঁছায় না তখন তার জিভের রং নীল বা বেগুনি হয়ে যায়। অনেকসময় আবার রক্তে অক্সিজেনের কমতি হওয়াতেও এরকম জিভের রং হয়ে যায়।
জিভের রং হলুদ হলে
জিভের রঙ হলুদ হলে তা জন্ডিসের লক্ষণ হতে পারে। তবে অনেক কম লোকই জানে যে এটা ডায়াবেটিসের লক্ষণও হতে পারে।