
Weight and Waist According To Height: আজকের লাইফস্টাইলে সুস্থ থাকা খুবই কঠিন। ব্যস্ত লাইফস্টাইলের কারণে মানুষ সঠিক ডায়েট নিতে পারে না, যার কারণে কারও ওজন হয় অনেক বেড়ে যায় আবার কারও প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকে। এমন পরিস্থিতিতে যে কোনো মানুষের জন্য তার ওজন, বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী সুস্থ থাকা খুবই জরুরি। অনেকেই আছেন যারা জানতে আগ্রহী তাদের ওজন কত হওয়া উচিত। এমন পরিস্থিতিতে, আমরা আপনাকে এখানে বলতে যাচ্ছি আপনার উচ্চতা অনুযায়ী আপনার ওজন কত হওয়া উচিত। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
- ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি উচ্চতার ব্যক্তির স্বাভাবিক ওজন ৪১ থেকে ৫২ কেজি হওয়া উচিত। এর চেয়ে বেশি ওজন আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।
- ৫ ফুট উচ্চতার একজন ব্যক্তির স্বাভাবিক ওজন ৪৪ থেকে ৫৫.৭ কেজি হওয়া উচিত।
- ৫ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা একজন ব্যক্তির ওজন ৪৯ থেকে ৬৩ কেজির মধ্যে হওয়া উচিত।
- ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি লম্বা একজন ব্যক্তির ওজন ৫১ থেকে ৬৫ কেজি হতে হবে।
- সাধারণত ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি লম্বা একজন ব্যক্তির ওজন ৫৩ থেকে ৬৭ কেজি হতে হবে।
- ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি লম্বা একজন ব্যক্তির স্বাভাবিক ওজন ৫৬ থেকে ৭১ কেজি হতে হবে।
- ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি লম্বা একজন ব্যক্তির স্বাভাবিক ওজন ৫৯ থেকে ৭৫ কেজি হতে হবে।
- একজন ৬ ফুট লম্বা ব্যক্তির স্বাভাবিক ওজন ৬৩ থেকে ৮০ কেজি হতে হবে।
তবে খালি ওজন নিয়ন্ত্রণ করলেই হবে না। কন্ট্রোলে রাখতে হবে আপনার কোমরের সাইজও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে একটি পরিমাপ হল BMI। যা অনুযায়ী ২৪ থেকে ৩৩ ইঞ্চি কোমর বিশিষ্ট মহিলাদের দৈর্ঘ্য ৫ ফুট থেকে ৫.৪ ইঞ্চি হওয়া উচিত। আপনি বিবাহিত হলে আপনার কোমর দৈর্ঘ্য উচ্চতা অনুযায়ী ৩২ হতে পারে। এর বেশি হলে চিন্তার বিষয়। তাই শরীরের মেদ কমাতে ও সুস্থ থাকতে আদর্শ ওজন যেমন ধরে রাখা দরকার তেমনি কোমরের মাপও রাখতে হবে নিয়ন্ত্রণে। তবে একজন মানুষের আদর্শ কোমরের মাপ কেমন হবে? এই নিয়ে সম্প্রতি তথ্য প্রকাশ করেছে ‘ইউকে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর হেল্থ অ্যান্ড কেয়ার এক্সেলেন্স (নাইস)’।
সেখানে বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তির কোমরের আদর্শ মাপ হতে হবে তার উচ্চতার অর্ধেক। যেমন- কারও উচ্চতা যদি ৫ ফুট তবে তার কোমরের মাপ হওয়া উচিত ৩০ ইঞ্চির মধ্যে।
‘নাইস’য়ের পরামর্শ হচ্ছে, যাদের বিএমআই বা ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স’ পঁয়ত্রিশের মধ্যে তাদের অবশ্যই কোমরের মাপের দিকে নজর দিতে হবে। কারণ তাদেরকেই বলা হচ্ছে স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের অধিকারী। আর পেটে ও কোমরে অধিক চর্বি মানেই টাইপ টু ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিতে থাকা।
বিএমআই’য়ের মাত্রার সঙ্গে উচ্চতা ও কোমরের মাপের এই সামঞ্জস্য ধরে রাখতে পারলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি সামলানো সম্ভব বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
নাইস’য়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ডা. পল ক্রিস্প বলেন, “আমাদের এই রিপোর্ট সাধারণ মানুষদের সচেতন করা জন্যই প্রকাশ করা হয়েছে। যাতে তারা নিজেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে জেনে ব্যবস্থা নিতে পারে।”
যেভাবে কোমরের মাপ নিতে হবে
‘নাইস’য়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, পাঁজরের নীচ থেকে ও নিতম্বের ওপরের মাধ্যবর্তী অঞ্চলে ফিতে জড়িয়ে মাপ নিতে হবে। আর এই মাপ নেওয়ার সময় স্বাভাবিকভাবে নিঃশ্বাস ছাড়তে হবে। তবে উচ্চতার সঙ্গে কোমরের মাপের এই সম্পর্ক যাদের বিএমআই ৩৫’য়ের ওপর (স্থূলতার শ্রেণীতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে যারা আছেন), দুই বছরের নীচে শিশু ও গর্ভবতীদের জন্য প্রযোজ্য হবে না।
এই পদ্ধতি কতটা কার্যকর
“পেটের মেদ সার্বিকভাবেই দেহের বিপাক প্রক্রিয়াতে প্রভাব ফেলে,” মনে করেন ডা. স্পেন্সার নাডোলস্কি। যুক্তরাষ্ট্রের এই স্থূলতা-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ‘ইনসাইডার ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও বলেন, “যদি কারও বিএমআই ৩০ থেকে ৩৫’য়ের মধ্যে হয়, তবে তার ওজনের বেশিরভাগটাই থাকবে উরু ও নিতম্বে। এর ফলেও উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস-সহ নানানে রোগের ঝুঁকি থেকেই যায়।”
অন্যান্য পরিমাপ-সহ কোমর ও উচ্চতার এই পরিমাপ বিভিন্ন চিকিৎসকরা গুরুত্ব দিলেও ডা. নাডোলস্কি বলেন, “কোনো পরিমাপই আদর্শ নয়।” তিনি আরও বলেন, “এই রিপোর্ট খারাপ বা ভালো এটা বলছি না। বরং এই পরিমাপ থেকে অন্তত মানুষজন সচেতন হতে পারবে। যারা ওজন কমানোর চেষ্টায় আছে তারা একটা আইডিয়া পাবেন। আর সেই হিসেবে বেছে নিতে পারবেন ব্যায়াম পদ্ধতি।”