scorecardresearch
 

What IS Menopause: মেনোপজ মানেই মিলনের ইচ্ছে শেষ? মেয়েদের যা জানা জরুরি...

What IS Menopause: পিরিয়ড বা ঋতুস্রাবের মতোই মেনোপজ (Menopause) নিয়েই বর্তমান সমাজে একাধিক ট্যাবু ও মিথ কাজ করে। অধিকাংশ মহিলারই এই মেনোপজ সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই। মোটামুটির ৪০ পেরনোর পর থেকেই সব মহিলাদের মেনোপোজ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পিরিয়ড হওয়ার সময় যতটা গুরুত্ব সহকারে এটাকে দেখা হয়, ঠিক ততটাই মেনোপজ নিয়ে উদাসীন এই দেশের মহিলারা।

Advertisement
মেনোপজ কী? মেনোপজ কী?
হাইলাইটস
  • পিরিয়ড বা ঋতুস্রাবের মতোই মেনোপজ (Menopause) নিয়েই বর্তমান সমাজে একাধিক ট্যাবু ও মিথ কাজ করে।

পিরিয়ড বা ঋতুস্রাবের মতোই মেনোপজ (Menopause) নিয়েই বর্তমান সমাজে একাধিক ট্যাবু ও মিথ কাজ করে। অধিকাংশ মহিলারই এই মেনোপজ সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই। মোটামুটির ৪০ পেরনোর পর থেকেই সব মহিলাদের মেনোপোজ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পিরিয়ড হওয়ার সময় যতটা গুরুত্ব সহকারে এটাকে দেখা হয়, ঠিক ততটাই মেনোপজ নিয়ে উদাসীন এই দেশের মহিলারা। মেনোপজ শুধুই মেজাজ বিগড়ে যাওয়া, খিটখিটে স্বভাব হওয়াকে বোঝায় নয়। শারীরিক ও মানসিকভাবেও এটা সমান গুরুত্বপূর্ণ। একটা নারীর শরীর এক জীবন থেকে অন্য জীবনে প্রবেশ করতে চলেছে। তাই মেনোপজ পর্যায় শুরু হওয়ার আগে কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলে নেওয়া খুবই জরুরি। 

মেনোপজ কী
খুব সাধারণভাবে যদি মেনোপজ নিয়ে বলতে হয় তাহলে বলা যায় মহিলাদের পিরিয়ড বা ঋতুস্রাবের চক্র শেষ হয় এবং সেই মহিলার প্রজনন ক্ষমতা আর থাকে না। মেনোপজ মহিলাদের জন্য খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, একজন মহিলার স্বাভাবিক সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা ক্রমশ হ্রাস পাওয়া এবং রিপ্রোডাকশন পিরিয়ড সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঠিক আগের সময়টায় যে শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তনগুলো আসে, সেগুলোকেই মেনোপজের শুরু বলা যায়।

মেনোপজ কেন হয়
একজন মহিলা সাধারণত একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ডিম্বাণু নিয়ে জন্ম গ্রহন করেন, যেগুলো তার জরায়ুতে সংরক্ষিত থাকে। জরায়ু মহিলাদের শরীরের ইসট্রোজেন এবং প্রজেসটেরন হরমোন তৈরি করে, যেটা প্রতিমাসের মাসিক এবং ওভাল্যুশনকে নিয়ন্ত্রন করে। যখন জরায়ু থেকে ডিম্বাণু নিঃসরণ বন্ধ হয়ে যায় এবং মাসিক বন্ধ হয়ে যায়, তখনই মেনোপজ হয়।

আরও পড়ুন

মেনোপজের উপসর্গ
মেনোপজ এর সময় যে জিনিসটা সকলকে খুব ভোগায় তা হলো হট ফ্ল্যাশ (Hot Flash)। বাইরের কোনও উৎস ছাড়াই হঠাৎ করে ভীষণ গরম লাগা। সেটা খুব ঠাণ্ডার দিনেও হতে পারে। এর সময়কাল কয়েক সেকেন্ড থেকে শুরু করে মিনিট দশেক পর্যন্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে ঠাণ্ডা জল খেতে পারেন। একটু ঢিলে সুতির কাপড় পড়তে পারেন। এতে হট ফ্ল্যাশ হলেও স্বস্তিতে থাকবেন। 

Advertisement

-অনেকের চুল পড়তে শুরু করে। এতে অনেকে খুব অস্বস্তিতে ভোগেন নিজেদের বাহ্যিক পরিবর্তনে। হরমোনাল ব্যালান্স ঠিক না থাকার কারণে হাড়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ত্বকের কিছু কিছু সমস্যাও এই সময় দেখা দেয়। 

-তবে মেনোপজের সময় অবসাদ, হতাশা ও মুড সুইংয়ের মতো সমস্যাগুলিও মহিলাদের মধ্যে দেখা দিতে শুরু করে। এই সময় মহিলারা অবসাদে চলে যান, হতাশায় ভোগেন, ভালো-মন্দ কোনও কিছুই তাঁদের ভাল লাগে না। তাই এই সময় শরীরের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেওয়া অত্যন্ত জরুরি বলেই মনে করেন চিকিৎসকেরা। 

মেনোপজ মানেই শারীরিক মিলন নয়
পিরিয়ড চলাকালীন মহিলাদের হরমোনাল ডিসব্যলেন্সের পাশাপাশি বহু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তেমনই, মেনোপজের সময়ও কিছু শারীরিক পরিবর্তন হয়। যা থেকে বহু ক্ষেত্রে যৌন জীবনেও পরিবর্তন আনে। তবে মেনোপজ মানেই যে যৌন জীবন শেষ, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মেনোপজ ও সেক্সুয়াল হেলথ একে অপরের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। মেনোপজ যৌন কামনার ওপর প্রভাব ফেলে। সাধারণত মেনোপজের সময় বিভিন্ন যৌন হরমোনের ( যেমন- টেস্টোস্টেরন ও ডোপামিন) ক্ষরণ কমে যায়। ফলে যোনিপথ শুষ্ক হয়ে যায়। যা যৌন মিলনের সময় ব্যথা ও জ্বালার কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা লক্ষ্য করেছেন, মেনোপজের সময় মহিলারা অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করেন ও খিটখিটে মেজাজের হয়ে যান। তবে ঠিক এর উল্টো পরিস্থিতিও কিন্তু দেখা যায়। কিছু মহিলা মেনোপজের সময় প্রবল যৌন তাড়না অনুভব করতে পারেন। কারণ, সেই সময় আন্ড্রোজেন নামক হরমোনটি বেশি মাত্রায় ক্ষরিত হয়। যোনিপথ অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে গেলে, অথবা যৌনতার ইচ্ছে কমে গেলে ডাক্তারের পরামর্শ  নেওয়া উচিত। তবে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিও আপনাকে এবং আপনার সঙ্গীকে সাহায্য করতে পারে।

মেনোপজ ও মানসিক স্বাস্থ্য
মেনোপজ মানেই সব শেষ এমনটা নয়। মেনোপজ মানে নতুন কিছুর শুরু। যদিও এই সময় মহিলাদের মানসিক স্বাস্থ্য অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় থাকে। তাই মেনোপজকে স্বাভাবিক নজরে দেখার চেষ্টা করুন। মেডিটেশন বা ধ্যান করতে পারেন, প্রতিদিন এক টুকরো করে ডার্ক চকোলেট খান, এতে আপনার মেজার ফুরফুরে থাকবে অথবা কোনও ভাল পুরনো হাসির থেরাপির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করুন। যখনই সাহায্যের প্রয়োজন হবে মনে কোনও দ্বিধা না এনে চেয়ে নেবেন। সেটা আপনার বন্ধু হতে পারে, স্বামী হতে পারে অথবা পরিবারের কোনও সদস্য কিংবা পেশাদার কোনও মানসিক স্বাস্থ্যকর্মী। এটাতে কোনও লজ্জার বিষয় নেই যে আপনি মেনোপজের সঙ্গে সংঘর্ষ করছেন। পরিবারের কোনও কাছের সদস্যের সঙ্গে মেনোপজ নিয়ে আলোচনা করুন, যাতে সেও বুঝতে পারে মেনোপজ আসলে কী। এই সময় নিজেকে ফিট রাখুন। হেলদি খাওয়া-দাওয়া করুন, শরীরচর্চা করুন, বিকেলে হাঁটতে বেরোতে পারেন, পর্যাপ্ত ঘুম খুব দরকার। কোনও মহিলা মেনোপজ পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যখন যাচ্ছে তাঁকে সবরকমভাবে সাহায্য করার দায়িত্ব তাঁর কাছের মানুষদেরই।    
 
 

Advertisement