নারী হোক বা পুরুষ, উজ্জ্বল ঘন ও সুন্দর চুল সবারই পছন্দ। চুলকে সুরক্ষিত রাখতে সকলেই চেষ্টা করেন খুব যত্ন নেওয়ার। এর জন্য শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ইত্যাদি সহ অনেক ঘরোয়া প্রতিকার করে, চুল ঘন ও মজবুত থাকে। কিন্তু চুল পড়া বা ডগা ফেটে যাওয়ার সমস্যা সাধারণত শীতকালে বেড়ে যায়। ঠান্ডা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মজবুত চুল দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ডগা ফেটে যেতে শুরু করে। ফলে প্রচুর চুল পড়ে।
শীতকালে স্নান, চিরুনিত দিয়ে চুল আছড়ানো, টুপি সরানোর সময় প্রচুর চুল পড়তে শুরু করে। ফলে উদ্বেগে পড়তে হয়। আসলে শীতকালে বছরের অন্য সময়ের তুলনায় চুল বেশি পড়ে। যার কারণ বাইরের শুষ্ক বাতাস। বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে বয়ে যাওয়া শুষ্ক বাতাস মাথার ত্বক অর্থাৎ স্ক্যাল্প সমস্ত আর্দ্রতা শুষে নেয়। যার কারণে মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। শুষ্ক স্ক্যাল্পের কারণে চুল শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে চুল দুর্বল হয়ে পড়তে শুরু করে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো কিছু পদ্ধতি রয়েছে, যার ফলে শীতকালে চুল পড়া রোধ বা কমানো সম্ভব।
তেল মালিশ
শীতে মাথার স্ক্যাল্প শুষ্ক হয়ে যায় এবং সেক্ষেত্রে তেল মালিশের চেয়ে ভাল উপায় আর হতে পারে না। তেল মালিশ করলে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। যা, চুলের ফলিকলকে ভেতর থেকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। তেল মালিশের জন্য ২-৩ চামচ অলিভ অয়েল বা বাদাম তেল গরম করে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। তেল ম্যাসাজ আপনার চুল এবং স্ক্যাল্প শীতের বাতাসের সঙ্গে লড়াই করার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন সরবরাহ করে, যার ফলে চুলের শক্তি এবং উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
অতিরিক্ত গরম জলে স্নান
শীতের মরসুমে গরম জলে স্নান করতে পছন্দ করে। বেশীক্ষণ গরম জল দিয়ে স্নান করলে বা চুল ধুলে চুলের ক্ষতি হয়। এর কারণ হল অতিরিক্ত তাপ চুলে পৌঁছায়, যার কারণে চুলের ছিদ্র খুলে যায় এবং চুল পড়তে শুরু করে। খুব গরম জল দিয়ে স্নান না করে, একেবারে হালকা গরম জলে দিয়ে স্নান করুন। এছাড়া স্ট্রেটনার, কার্লার, ব্লো ড্রায়ার বা কোনও হেয়ার সেটিং টুল বেশি ব্যবহার করলেও চুল খারাপ হয়।
মধু এবং নারকেল দুধের মাস্ক
চুলের সাধারণ সমস্যা রোধ করতে প্রাকৃতিক জিনিস ব্যবহার করাই ভাল। চুল পড়া রোধ করতে,মধু এবং সামান্য নারকেল দুধের মাস্ক লাগান চুলে। যা, শীতকালে খুশকি, কুঁচকে যাওয়া এবং শুষ্কতা রোধ করতে পারে, ফলে কম চুল পড়ে। মাস্কিং করার জন্য, চুলে মধু এবং নারকেলের দুধ কমপক্ষে ৩০ মিনিটের জন্য লাগিয়ে রাখুন এবং এরপরে হালকা গরম জল দিয়ে চুল ভাল করে ধুয়ে নিন।
ভাল খাওয়াদাওয়া এবং হাইড্রেটেড রাখা
প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ এবং চুলের অন্যান্য পুষ্টির অভাবে, ভুল খাদ্যাভ্যাসের কারণে চুল পড়ে। ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, ভিটামিন বি ইত্যাদি পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খান, যা চুলকে স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করবে। এছাড়াও চর্বিহীন মাংস, দই, মাছ, সয়া বা অন্যান্য প্রোটিন জাতীয় খাবার খান। এগুলি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং চুল পড়া কমায়। এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত জল পান করুন।
চুল পড়ার আসল কারণ কী?
আবহাওয়ার কারণে চুল পড়া কিছুটা হলেও কমে যায়। তবে ঠান্ডা আবহাওয়া ছাড়া অন্য কোনও কারণে চুল পড়লে তার চিকিৎসা করা কঠিন। এমনকী মানসিক চাপ থেকে পুষ্টির ঘাটতি, সবটাই চুলের স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার কারণ হতে পারে। সেক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।