Mini Digha Malda Bhatra Lake: উত্তরবঙ্গ মানেই পাহাড় আর তার বুক চিরে বয়ে চলা তিরতিরে ঝর্ণা। উত্তরবঙ্গ মানেই জঙ্গল আর তার বুকে ছুটে বেড়ানো হাতি,চিতা, গণ্ডার আর হরিণ। পাহাড়ি ও তরাই-ডুয়ার্স ঘুরতে আসার কারণই তাই।
কিন্তু যদি বলি উত্তরবঙ্গে এখন অনেকে যাচ্ছেন সমুদ্র দেখতে বা সমুদ্র উপভোগ করতে। নিশ্চয় পাগল বলে দাগিয়ে দেবেন। দেওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু অন্তত নয়। কারণটা পরিষ্কার।
যেখানে সমুদ্রই নেই, সেখানে সমুদ্র দেখতে মানুষ যায় কী করে? কিন্তু সমুদ্র থাক আর নাই থাক, সমুদ্র উপভোগ করতে লোকে এখন ছুটছে মালদায়। আশ্চর্য হচ্ছেন কি?
মানচিত্র ঘেঁটে যদিও মালদার উপর দিয়ে বয়ে চলে একশোটা নদী আবিষ্কার করতে পারেন, কিন্তু আশপাশ তো বটেই, কয়েকশো কিলোমিটারের মধ্যে কোনও সমুদ্র খুঁজে পাবেন না।
তবু মানুষ মালদাতেই যাচ্ছেন সমুদ্র উপভোগ করতে। হেঁয়ালি যদি ক্রমশ বিরক্তিকর হয়ে ওঠে, তাহলে এবার খোলসা করা যাক ব্যাপারখানা। আসুন জেনে নিই রহস্যটা কী?
রহস্য উন্মোচন করতে হলে আপনাকে চলে যেতে হবে মালদার ভাটরার বিলে। ওল্ড মালদার সাহাপুর পঞ্চায়েত এলাকার দক্ষিণে অবস্থিত এই ভাটরার বিল। কিন্তু সমুদ্রের সঙ্গে তুলনা কেন?
আসলে ভাটরার বিল এতটাই বিশাল যে এপারে দাঁড়ালে ওপার দেখা যায় না। শীতকালে কিছুটা আয়তনে ছোট থাকলেও বর্ষায় জল বাড়তে বাড়তে উপচে পড়ে দুপারের কিনারে।
সামনে গিয়ে যদি দাঁড়ান, একদম যেন সমুদ্র। পায়ের কাছে আছড়ে পড়বে জল। এমনকী পারে দাঁড়ালে বড় বড় ঢেউ ছুটে আসে পারের দিকে। সমুদ্রের গর্জনের মতোই ভাটরার বিলে জলের ছুটে আসার আওয়াজ শোনা যায়।
সামনে দাঁড়ালে কেউ ফারাক খুঁজে পাবে না সমুদ্রের সঙ্গে। আর তাই গত কয়েক বছর ধরেই পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে এই এলাকা। ছুটির দিনে ভিড় করছেন স্থানীয়রাও। গড়ে উঠেছে ন্যাচরাল টুরিজম।
মালদাবাসীরা একে ভালবেসে একে নাম দিয়েছেন মিনি দিঘা। মুখে মুখে এখন এর নাম মিনি দিঘা নামেই পরিচিত। মালদা স্টেশনে নেমে গাড়িওয়ালাকে মিনি দিঘা বলে দিলেই হল একেবারে বিলের ধারে পৌঁছে দেবেন চালক।
তবে এখনও জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষই এখানে বেশি ছুটে আসছেন সমুদ্রের স্বাদ মেটাতে। বাইরের পর্যটক কমই আসছেন। প্রচার ও প্রসার তেমন শুরু হয়নি। হলে এখানেও আলাদা পর্যটনকেন্দ্র করা যেতে পারে।
বিশাল এই বিলের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত প্রায় দেখা যায়না। বর্ষার মরশুমে এই বিলের ধারে মনোরম পরিবেশে সময় কাটাতে অনেকেই এখন আসছেন। আবার বিলে নৌকাবিহারের ব্যবস্থা রয়েছে।
স্থানীয় মৎসজীবীরা নৌকায় করে বিলের জলে নৌকাবিহার করান। প্রতিদিন বিকেল থেকে ভিড় করতে থাকেন বহু মানুষ। সপ্তাহের শনিবার ও রবিবার প্রচুর মানুষ ভিড় করেন।