Gorumara National Park: এবার পুজোর ছুটিতেও ডুয়ার্স ঘুরতে এসে গাছবাড়িতে থাকার সেই রোমাঞ্চ থেকে বঞ্চিতই থাকতে হচ্ছে পর্যটকদের। গরুমারা জঙ্গলের বিখ্যাত গাছবাড়িটি এখনও বন্ধ। প্রায় এক দশক ধরে খোঁড়া কাঠ, ভাঙা সিঁড়ি আর ফাটল ধরা ছাদের মধ্যে ধুঁকছে একসময় পর্যটনের ‘তাজমহল’ বলে পরিচিত এই গাছবাড়ি। এখন শুধু কাহিনী হয়ে আছে।
২০০৫ সালে বন দফতরের উদ্যোগে শালগাছের উপর তৈরি হয় এই ব্যতিক্রমী আবাস। প্রায় ৩০ ফুট উঁচুতে ডালপালার জঙ্গলে গাঁথা এই কাঠামো ছিল একেবারে অভিনব। সৌরচালিত আলো, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, এমনকি হাতির স্নান দেখার সুবন্দোবস্ত। সব মিলিয়ে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে ছিল এক স্বপ্নের গন্তব্য।
২০১২ সালের ১২ জুলাই এই গাছবাড়িতে এক রাত কাটিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেই ঘটনার পর জায়গাটি নিয়ে মানুষের আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধীরে ধীরে নষ্ট হতে থাকে কাঠামো। কাঠ পচেছে, সিঁড়ি ভেঙেছে, ছাদে ফাটল। পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা ভেবে শেষমেশ বন দফতর গাছবাড়িটি বন্ধ করে দেয়।
এই গাছবাড়ির পাশেই ছ’টি কটেজ চালু রয়েছে। সেখানে পর্যটকরা থাকলেও গাছবাড়ির অভিজ্ঞতা যে ছিল আলাদা রকমের, তা মানছেন অনেকেই। যারা একবার থেকেছেন, তাঁরা আজও নস্টালজিয়া ভুলতে পারেননি। সেই সময় এই গাছবাড়িতে দুই জনের থাকা-খাওয়ার প্যাকেজ ছিল ৩,৬০০ টাকা। তা সত্ত্বেও বুকিং পেতে হলে অপেক্ষা করতে হত মাসের পর মাস। এখন সবটাই শুধু স্মৃতি।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এই গাছবাড়ি শুধু একটা পর্যটন আবাস ছিল না, ছিল এলাকার গর্ব। পর্যটন ব্যবসায়ী উজ্জ্বল শীলের মতে, গাছবাড়িটি আবার চালু হলে গরুমারার প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। তবে সমস্যা রয়েছে অর্থের জোগানে। বন দফতরের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত সংস্কারের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি বলেই খবর। বনদফতরের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আপাতত আশার চোখে তাকিয়ে রয়েছেন স্থানীয়রা। তাঁদের আশা, একদিন আবার চালু হবে সেই গাছবাড়ি। ফের আসবে ভিড়, জেগে উঠবে ডুয়ার্সের জঙ্গল ঘেরা সেই ‘স্বপ্নের আশ্রয়’।