Sandakphu Trekking Guideline: পাহাড়ি দুর্গম এলাকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকেই। সম্প্রতি পাহাড়ে এসে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে একাধিক পর্যটকের। এ ঘটনায় রীতিমতো ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে পাহাড়ে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জিটিএ কর্তৃপক্ষও। তাই এবার তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় বিশেষ করে সান্দাকফুতে যেসব পর্যটক আসবেন, তাঁদের ফিটনেস সার্টিফিকেট দেখাতে হবে।
১ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে সান্দাকফু (Sandakphu) ভ্রমণের ক্ষেত্রে নিয়মের বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। দার্জিলিং জেলা প্রশাসন ও জিটিএর (GTA) তরফে ওইদিন থেকে সান্দাকফু ভ্রমণেরর জন্য মেডিকেল ফিটনেস সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সান্দাকফুতে ঢোকার মুখে ওই ফিটনেস সার্টিফিকেট খতিয়ে দেখে তবেই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।
গত ৩ ডিসেম্বর সান্দাকফু ভ্রমণে এসে কলকাতার (Kolkata) দক্ষিণ দমদম এলাকার বাসিন্দা ২৮ বছরের অঙ্কিতা ঘোষের মৃত্যু হয়। এই বছরই ২৬ মে উত্তর দিনাজপুরের পর্যটক তন্ময় কুন্ডুর শ্বাসকষ্টজনিত কারণে মৃত্যু হয়। ১৯ নভেম্বর ভবানীপুরের এক পর্যটক আশিস ভট্টাচার্যেরও একই কারণে মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। সব মিলিয়ে এখনও অবধি সান্দাকফু ঘুরতে এসে চলতি বছরে ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
যারপরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেই তবে সান্দাকফু ভ্রমণের অনুমতি দেওয়ার। এরপরই প্রশাসন সবদিক খতিয়ে দেখে স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের হেলথ ইনচার্জ রাজেশ চৌহান জানিয়েছেন, ১ জানুয়ারি থেকে মেডিকেল ফিটনেস রিপোর্ট খতিয়ে দেখেই সান্দাকফুতে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে।
পাশাপাশি সান্দাকফু বা টুমলিংয়ের মতো এলাকায় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা যায় কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যেহেতু সান্দাকফু এলাকাটি সিঙ্গালীলা জাতীয় উদ্যানের মধ্যে তাই জমি সংক্রান্ত কিছু সমস্যা রয়েছে। সেসব মিটিয়ে প্রস্তাবটি বিবেচনার জন্য রাজ্য সরকারকে পাঠানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পাহাড়ে যাওয়ার আগে ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাফি করা দরকার। ফুসফুসের অবস্থা জানার জন্য বুকের এক্স-রে এবং পালমোনারি ফাংশন টেস্ট করানো আবশ্যিক। পাশাপাশি রক্তে লোহিত কণিকা, শর্করার পরিমাণ জেনে নেওয়া প্রয়োজন। পাহাড়ে ওঠার ক্ষেত্রে হৃদযন্ত্র ও ফুসফুস কতটা সক্ষম তা জানা যাবে। কিডনির সমস্যা ও রক্তে লোহিত কণিকা কম থাকলে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। এ কারণে শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। ফুসফুসে সমস্যা থাকলেও শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। হাতের বাইরে চলে যেতে পারে পরিস্থিতি।
সান্দাকফু ট্রেকিংয়ে বর্তমানে প্রায় পাঁচদিন সময় লাগে। ট্রেকারদের মাথাপিছু প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ করতে হয়। টাট্টু নিষিদ্ধ হওয়ায় এখন ট্রেকারদের মালবাহক নিতে হবে এবং এর জন্য খরচ অনেকটাই বাড়বে। প্রশাসন সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানে আগে যানবাহন চলাচলের মতো রাস্তা তৈরি করে তার পরেই পনি নিষিদ্ধ করুক। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এখানে প্রায় ২০টি গ্রাম রয়েছে। ৪০টিরও বেশি হোমস্টে রয়েছে। পনি না পেয়ে ট্রেকাররা মুখ ফিরিয়ে নিলে এখানকার অর্থনীতিও মুখ থুবড়ে পড়বে।