Mirik Shikara Closed: দার্জিলিং পাহাড়ের মধ্যে এক টুকরো লেকে ঘুরে বেড়াচ্ছে রংবেরংয়ের শিকারা। ঠিক যেন কাশ্মীরের ডাল লেক। লেকের টলটলে জল ছিটিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পর্যটকের দল। ২-৪ দিন ছুটি থাকলে কাশ্মীর ঘুরে আসা সম্ভব নয়। আর গাঁটের কড়ি কত আছে তাও তো দেখতে হবে! তাই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোই বলুন, আর এক টুকরো কাশ্মীরের স্বাদ হাতের কাছেই বলুন, মিরিকে এই বন্দোবস্ত মনে ধরেছে পর্যটকদের। মিরিক লেকে শিকারার টানেই ছুটে আসেন বহু পর্যটক। কিন্তু এবার তাতে বাধা। আপাতত অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করা হয়েছে বোটিং। কিন্তু কেন?
ক'দিন ধরেই মিরিক লেকে মাছের মড়ক শুরু হয়েছে। লাগাতার মরা মাছ ভেসে উঠছে মিরিকে। মৃত মাছগুলোর একেকটি দেড়-দুই কেজি ওজনের। বুধবার সকাল থেকেই স আমেরিকান রুই, সিলভার কার্প, কাতলা সহ অন্যান্য মাছ মরে ভেসে থাকতে দেখা যায়। গোটা লেকজুড়ে এভাবে বড় বড় মাছ ভেসে উঠতে শুরু করে। তারপরই হইচই শুরু হয়ে যায়। খবর পেয়ে মিরিক পুরসভার কর্মীরা সেখানে যান। মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকরাও লেকে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন।
কেন ও কীভাবে এত মাছ মারা যাচ্ছে, তা এখানকার রঙিন মাছের আকর্ষণও কম নয়। অনেকেই মাছকে খাওয়ান এখানে। তার জন্য আলাদা করে মুড়ি, পাঁউরুটি বিক্রিও হয় লেকের ধারে।কোনওভাবে লেকের জল দূষিত হয়ে পড়ায় এবং বিষক্রিয়া হওয়ায় মাছের মড়ক বলে মনে করা হচ্ছে। এই ঘটনার জেরে বোটিং আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে লেকে থাকা এই মাছগুলো পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। সেগুলি হঠাৎ কীভাবে মারা যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে মৎস্য দফতর। এই ঘটনার পর মিরিক লেকে বোটিং বন্ধ রাখা হয়েছে। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বোটিং চালু করা হবে না বলে জানা গিয়েছে। কবে চালু হবে, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
মিরিক পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের প্রধান লালবাহাদুর রাই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিষক্রিয়ার কোনও তথ্য তাঁরা পাননি। যে মাছগুলো এই সময় ডিম দেয়, সেগুলোরই মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর কারণ খুঁজতে তদন্ত করছে মৎস্য দফতর কাজ করছে।' মৎস্য দফতরের তরফে মিরিক লেক পরিদর্শন করে লেকের জলের নমুনা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সেই নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মিরিক লেকে দীর্ঘদিন ধরে আবর্জনা, দোকান এবং হোটেলের উচ্ছিষ্ট ফেলা হয়। এমনকি কিছু হোটেলের শৌচাগারের সংযোগ সরাসরি লেকের সঙ্গে রয়েছে। যার জেরে লেকে বিষক্রিয়ায় মাছগুলো মারা গিয়েছে। জিটিএ'র পর্যটন বিভাগ সূত্রের খবর অনুযায়ী, তিনদিন ধরে বোট নিয়ে লেকে ঘুরে ঘুরে মরা মাছগুলো তুলে ফেলা হচ্ছে। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ২০০ মরা মাছ লেক থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।