scorecardresearch
 

Ram Mandir: অযোধ্যায় মেগা ইভেন্ট, লোকসভায় বাংলায় BJP-র লাভ হবে?

Ayodhya Ram Mandir: এখন প্রশ্ন হল ভারতের উত্তর ভারতীয় হিন্দি অঞ্চলে যদি এই ইভেন্টকে মূলধন করে বিজেপি জয়ের চিত্রনাট্য তৈরি করার স্বপ্ন দেখছে, তখন কি পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপি এই রাম মন্দির নির্মাণের ইস্যুর ফায়দা পাবে?

Advertisement
Ram Mandir Issue Ram Mandir Issue
হাইলাইটস
  • ২০১৯ সালে ফায়দা পেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি
  • বাঙালি যে ভাবে কালীভক্ত ঠিক সেভাবে রামভক্ত কি? 
  • বিজেপির জন্য এখনও বাংলায় কাজটা সহজ নয়

২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রাম লালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার দিন। ২২ জানুয়ারি আজ এক জাতীয় 'ইভেন্ট'। গোটা দেশ জুড়ে এ ঘটনায় শোরগোল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর 'মাস্টার স্ট্রোক'। আদালতের নির্দেশের ভিত্তিতেই এই উৎসব। আনুষ্ঠানিক ভাবে সরকারি অনুষ্ঠান নয়। অযোধ্যার সাধুদের ট্রাস্টের পরিচালিত অনুষ্ঠান। অথচ এটা স্পষ্ট গোটা দেশে আজ রাজ্যে রাজ্যে, এ হল বিজেপির উৎসব। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে রাম মন্দির নির্মাণের সাফল্যকে কেন্দ্র করে বিজেপি গোটা দেশে একটা সুনির্দিষ্ট আলেখ্য রচনা করছে।

২০১৯ সালে ফায়দা পেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি

এখন প্রশ্ন হল ভারতের উত্তর ভারতীয় হিন্দি অঞ্চলে যদি এই ইভেন্টকে মূলধন করে বিজেপি জয়ের চিত্রনাট্য তৈরি করার স্বপ্ন দেখছে, তখন কি পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপি এই রাম মন্দির নির্মাণের ইস্যুর ফায়দা পাবে? 

আরও পড়ুন

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে পুলওয়ামা হামলার পরে পাক বিরোধী অ্যাজেন্ডায় বিজেপি কিন্তু তার ফায়দা পেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে। সেদিনও দেখেছিলাম কলকাতায় অমিত শাহের রোড শো-তেও শ্লোগান উঠেছিল জয় শ্রীরাম। সেদিন বিজেপির কিন্তু বিজেপির লোকসভার আসন সংখ্যা ২ থেকে ১৮ করতে পেরেছিল। কিন্তু ২০২১-এ বিধানসভা ভোটে কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষহাসি হাসলেন হিন্দুত্বকে ছাপিয়ে গেল বাঙালি পরিচয় সত্ত্বার ইস্যু। 

মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক মমতার ছাতার তলায় একত্রিত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে

আজ রাম মন্দির নির্মাণ ইস্যুতে বিজেপি আবার হিন্দুত্বের আগুনে রাজনীতির রুটি সেঁকতে চাইছেন। সেই কাজে কী তারা সফল হবে। বাংলার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতে হিন্দি বলয়ে যা সম্ভব বাংলায় তা সহজ নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২২ জানুয়ারি রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য সর্বধর্মের প্রতিনিধিদের নিয়ে এক সর্বধর্ম সমন্বয়ের ডাক দিয়েছেন। আবার মমতা একথা বলেছেন,এটা কোনও পাল্টা কর্মসূচি নয়। রাম মন্দির রাম লালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার উৎসব যাঁরা করছেন করছেন। এ ব্যাপারে মমতা কোনও কটূ কথা কিন্তু বিজেপি বা সাধুসন্তদের নিয়ে বলেননি। কিন্তু রাজ্যে তিনি যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ডাক দিয়েছেন তাতে কিন্তু একদিকে রাজ্যের শতকরা ৩০ ভাগ মুসলমান ভোটের মমতার ছাতার তলায় একত্রিত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। কারণ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার যে অভাব বোধ তাতে মুসলমান ভোট ভাগাভাগির সম্ভাবনা কমবে। কেননা বিজেপির উদ্দেশ্য, যাতে মুসলিম ভোট ভেঙে যায়। কংগ্রেস-সিপিএম সর্বোপরি আইএসএফ যদি মুসলমান ভোটের একটা বড় অংশ পায়, তাহলে লোকসান হবে তৃণমূলের, লাভ হবে বিজেপির। মমতার এই সম্প্রীতি মিছিল এবং অযোধ্যায় না যাওয়া মুসলমান সমাজকে তাদের উদ্বেগ থেকে অনেকটা মুক্ত করবে। 

Advertisement

বাঙালি যে ভাবে কালীভক্ত ঠিক সেভাবে রামভক্ত কি? 

তবে বিজেপি কিন্তু রণে ভঙ্গ দিচ্ছে না। কোনও ভাবেই তাদের চিত্রনাট্য বদলাচ্ছে না। বিজেপি মনে করছে বাঙালি ভদ্রলোক সমাজের মধ্যে হিন্দুত্বের চোরাস্রোত বইছে এ অবস্থায় রাম মন্দির নির্মাণের আবেগ এবার বিজেপিকেও আসন বাড়াতে সাহায্য করবে। মমতা ২৩ জানুয়ারি যাবেন মা কালীর মন্দিরে। এটিও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। রাম বাঙালির কাছে সম্মানের ভালবাসার,কিন্তু বাঙালি যে ভাবে কালীভক্ত ঠিক সেভাবে রামভক্ত কি? 

আডবাণী যখন রামমন্দির আন্দোলন করেন, উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে যে প্রভাব পড়েছিল, তা কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে হয়নি। তখন সিপিএম ক্ষমতায়। তখন থেকে বিজেপির চেষ্টা চলছে কিন্তু আডবাণী আমাকে বলেছিলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে রাম দিয়ে নয়,প্রয়োজন বঙ্কিমচন্দ্র আনন্দমঠ,স্বামী বিবেকানন্দর মতো ব্যক্তিত্বকে সামনে আনা। তা হল সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের ইস্যু।'  

বাজপেয়ী আডবাণীর পর এখন আজ মোদী-অমিত শাহর জমানা।

বিজেপির জন্য এখনও বাংলায় কাজটা সহজ নয়

মোদী-অমিত শাহর বিজেপি সংসদে ৩০৩ টি আসন পেয়েছে। এখন কেন্দ্রে এটি কোয়ালিশন সরকার নয়। বিজেপির একার সরকার। তাই বিজেপির নিজেদের ওপর আত্মবিশ্বাসও অনেক বেশি। বিশেষত মধ্যপ্রদেশ,ছত্তীশগড় ও  রাজস্থানে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর মোদী-অমিত শাহর আস্থা আরও বেড়েছে। তাদের মনে হচ্ছে অসমে যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসতে পারে তবে পশ্চিমবঙ্গে নয় কেন? এমনকী এবার দক্ষিণ ভারতেও বিজেপি একই ভাবে ভাবছে হিন্দুত্বর ইস্যু কাজ করবে। বিজেপি তাই তাদের রণকৌশল কোনও রাজ্যের জন্যই লঘু করছে না।

বিজেপির অসমাপ্ত কর্মসূচি সমাপ্ত করছে এক এক করে। রাম মন্দির নির্মাণ,৩৭০ ধারা উচ্ছেদ এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিজেপির পুরনো কর্মসূচি। এখনও বিজেপি ভাবছে ড: শ্যামা প্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গে এবার বিজেপি ফল পাবে। তবে মমতা এবং রাহুল গান্ধীর মধ্যে ঠিক কতটা ফারাক তা বোঝা গেল তার  ভারতজোড়ো যাত্রার কর্মসূচিতে বলা বক্তব্য নিয়ে। অন্যদিকে মমতা ঘোষণা করলেন ২২ জানুয়ারি সর্বধর্ম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি মিছিল। বিজেপির জন্য এখনও বাংলায় কাজটা সহজ নয়।

Advertisement