এমনিতে সুযোগ পেলেই আমরা চলে যাই দার্জিলিং বা সিকিমের কোনও গ্রামে। তবে শান্ত পাহাড়ের এমন অশান্ত রূপ দেখতে হবে তা স্বপ্নেও ভাবিনি। দ্রুত কলকাতায় ফিরব বলে শিলিগুড়ি থেকে যখন বাসের খোঁজ করছি, তখন ভাড়া দেখেও চক্ষু চড়কগাছ।
যে কারণে ছাত্রদলের কয়েক নেতা এবং বিএনপির মূল নেতা তারেক রহমান নির্বাচনে বিজয়ীদের অভিনন্দন জানালেও, একটি অংশ নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। বিএনপির কয়েক বড় নেতা, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মীদের বিপুল ভোটে ছাত্র শিবির বিজয়ী হয়েছে বলে নানান বক্তব্যে বলছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (যদিও হাসিনার দাবি তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে এখনও ইস্তফা দেননি) ভারতেই রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন। ভারত ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছে, হাসিনাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ার কোনও সিদ্ধান্ত নেই ভারতের। একইসঙ্গে বাংলাদেশে যেভাবে হিন্দু নিধন চলছে, তাতেও তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মোদী সরকার।
দেশ রাজনীতি ছেলের হাতের লাড্ডু না। কিংবা যেমন খুশি তেমন সাজ বা নাচের রঙ্গমঞ্চও নয়। সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের দণ্ডমুণ্ডের একজন হয়ে মাথামুণ্ডহীন বচন ছাড়লে তার খেসারত হাতে হাতে যেমন দিতে হয়, তেমনি অনাগত কালেও কিছুটা জমা থাকে। তবে পরিতাপের বিষয় হচ্ছে দায়িত্বে থাকা বেকুব কোনো ব্যক্তির বচনের বা কর্মের ভোগান্তিটা যায় দেশের মানুষের উপর দিয়ে। বাংলাদেশ সেরকম একটি ক্রান্তিকালের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে।
যদি আমার ইসলামি খিলাফত শাসনের প্রচেষ্টা মন্তব্যকে অতিশয়োক্তি বলে মনে হয়, তাহলে ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় হিজবুর তাহরিকের মতো নিষিদ্ধ সংগঠনের পোস্টারে ছেয়ে যাওয়া বা আইএসের পতাকা নিয়ে মিছিলকে মনে করিয়ে দেব।
কথাতেই আছে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ, সেই মত ১৪৪ বছরের মহাকুম্ভে সাহি স্নানে ২৯ই জানুয়ারি মৌনি অমাবস্যায় যোগ দিতে মা, প্রিয় বন্ধু অভীক আর আমার প্রাণ প্রিয় মোহনবাগানকে সঙ্গে নিয়ে পথ শুরু করেছিলাম হাওড়া থেকে। এমন অব্যবস্থার মধ্যে পড়তে হবে তা স্বপ্নেও ভাবিনি।
কখনও ভাবিনি, এমন দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা হবে কুম্ভমেলায় গিয়ে! এখনও গায়ে কাঁটা দিচ্ছে মনে পড়লে। প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গমে মৌনী অমাবস্যার শাহি স্নানের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, এক অপূর্ব ধর্মীয় আবহে গঙ্গায় স্নান করব, পুণ্য লাভ করব। কিন্তু বাস্তব চিত্র ছিল সম্পূর্ণ আলাদা।
Bally Bridge: হঠাত্ বললেন, 'ট্রেনে যাওয়া যাবে তো?' আমি বললাম, না, ট্রেন তো সম্পূর্ণ বন্ধ এই লাইনে। বলার পরেই বুঝলাম, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে উনি আনমনা।
প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং-কে এক কথায় বললে: 'একজন নিপাট ভদ্রলোক।' ১৯৯৩ সাল, অমৃতবাজার পত্রিকায় আমি তাঁকে প্রথম দেখেছিলাম। খবরের কাগজের মালিকরা কংগ্রেসী ঘরানার ছিলেন। আমি সেখানে ট্রেনি রিপোর্টার ছিলাম। এখনও মনে আছে, ডঃ সিং হাত ভাঁজ করে নিউজরুমের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ। একটা প্রহসন। কথাটা শুনলাম বাংলাদেশে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি থেকে, গোবিন্দ প্রামাণিক সহ বৌদ্ধ ভিক্ষু ও হেফাজতের প্রধান থেকে। কথাটা যে সর্বৈব মিথ্যে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ভারতীয় গণমাধ্যম কিছু কিছু খবর প্রচার করে এই প্রথম বারের মত বিশ্বকে জানিয়েছে। এখন সভ্য দেশের মানুষেরা বিশেষ করে ইংল্যান্ড ও আমেরিকার সংসদ সদস্যরাও হিন্দু নির্যাতনের বিরূদ্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
আজ এখানে ভোট। ভোট বলতেই আমরা ভারতীয়রা যে ছবি দেখতে সাধারণত অভ্যস্ত, সেই ছবি কিন্তু আমেরিকায় নেই। আর চার-পাঁচটা কাজের দিনের মতোই আজেকরও দিনটা। অফিস খোলা। সকলেই নিজের কাজে ব্যস্ত। ভোট বলে যে ছুটির মেজাজ, তা কিন্তু নয়। অফিসের ফাঁকে সকলেই এখানে ব্রেক নিয়ে ভোট দিয়ে আসেন। ভারতে ভোটে যেমন নিরাপত্তার ছবি দেখতে আমরা অভ্যস্ত, এখানে কিন্তু সেই অর্থে তেমন নিরাপত্তার বালাই নেই। সবটাই শান্তিুপূর্ণ ভাবে চলে। তবে যেসব প্রদেশে বেশি টক্কর, সেখানে নিরাপত্তাবলয় একটু থাকে হয়তো। আমাদের নিউ জার্সিতে তেমন ছবি নেই। আর পাঁচটা দিনের মতোই স্বাভাবিক।